পুজার আগে সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের টাকা না দেয়া ও অসত্য তথ্য দেয়ার দায়ে দুই তথ্য কর্তা বরখাস্ত

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ নভেম্বর৷৷ রাজ্যের সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের বিল প্রদানের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর প্রধান সচিবকে অসত্য তথ্য দেওয়ার দায়ে রাজ্য সরকারের তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের যুগ্ম অধিকর্তা বিষ্ণুপদ দাস এবং সিনিয়র ইনফরমেশন অফিসার প্রমোদ আচার্য্যকে চাকুরী থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে৷ আজ ত্রিপুরা সরকারের আন্ডার সেক্রেটারি এস কে দেববর্মার স্বাক্ষরিত বরখাস্তের আদেশ ইস্যু হয়৷ রাজ্য সরকারের তথ্য দপ্তরের ইতিহাসে সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের টাকা প্রদানের বিষয়কে কেন্দ্র করে দুইজন অফিসারের বরখাস্তের ঘটনা এই প্রথম৷

উল্লেখ করা যেতে পারে যে, এইবারই প্রথম তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তর পুজার আগে সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের বিলের টাকা দেয়নি৷ অভিযোগ যে, মুখ্যমন্ত্রীর ভাবমূর্তিকে বিনষ্ট করার এটি একটি চক্রান্ত৷ রাজ্যের তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরে ফাঁকিবাজী ও দায়িত্বহীনতা কত বেশী চরমে পৌঁছলে এরকম বরখাস্তের ঘটনা ঘটতে পারে৷ দিনে দিনেই এই দপ্তরটি একেবারে গোল্লায় গেছে৷ এই দপ্তরে কোনও পত্রিকা সম্পাদক চিঠির পর চিঠি দিলেও উত্তর পান না৷ নামে সংসৃকতি হলেও কাজে একেবারে অপসংসৃকতি৷ অথচ এক সময় এই দপ্তরের সংগে সংবাদপত্রের সম্পর্ক কত বেশী গভীর ছিল৷ তথ্য দপ্তরের সৃষ্টির সময় থেকেই পুজার আগে সংবাদপত্রের পাওনা মিটিয়ে দেওয়া হতো৷ এক্ষেত্রে, ইতিপূর্বে কোনও দিন ব্যতিক্রম হয়নি৷ অথচ এইবার বেশীর ভাগ সংবাদপত্র বিজ্ঞাপনের বিল পান নাই৷ পত্রিকা কর্তৃপক্ষ ধার দেনা করে কর্মচারীদের বেতন ও পুজা অনুদান ইত্যাদি মিটিয়ে দিয়েছেন৷

কোনও কোনও পত্রিকা বিল পেয়েছেন পুজার পরে৷ অভিযোগে জানা গেছে, স্থানীয় সংবাদপত্র সমুহে বিজ্ঞাপনের টাকা দেওয়ার জন্য এক মাস আগে সরকার বরাদ্দের অনুমোদন দেয়৷ এক মাস আগে এক কোটি টাকা দেওয়া সত্বেও বেশীরভাগ টাকাই অব্যয়িত রেখে দেওয়া হয়৷ মুখ চিনে মুগের ডালের জন্য এই দপ্তর রীতিমতো টেক্কা দিয়েছে৷ যখন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব জানতে পারলেন যে, পুজার আগে সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপনের বিলের টাকা দেওয়া হয়নি, তখনই দপ্তর থেকে স্টেটমেন্ট তলব করা হয়৷ এই স্টেটমেন্টে সম্পূর্ণ মিথ্যা তথ্য দেওয়া হয়েছে৷ পত্রিকাগুলিকে বিজ্ঞাপনের টানা না দিয়েই মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর প্রধান সচিবকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যে, বিল পরিশোধ হয়ে গেছে৷ বরিষ্ট সাংবাদিক সুবল কুমার দে এব্যাপারে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে বলেন যে, তথ্য দপ্তর অসত্য তথ্য দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী ও তাঁর প্রধান সচিবকে বিভ্রান্ত করেছে৷ খোঁজ খবর নিয়ে প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারীক নিশ্চিন্ত হন যে, মিথ্যা তথ্য দেওয়ার দুঃসাহস দেখিয়েছে তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তর৷ তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের কর্মসংসৃকতি একেবারে তলানীতে গিয়ে পৌছেছে৷ বাম আমল থেকেই চরম অবক্ষয় দপ্তরকে গ্রাস করেছে৷ কমরেড কর্মচারীরা মাতববরীই করতেন৷ দপ্তরকে সচল কর্মমুখী করবার কোনও পদক্ষেপ নিতেন না৷ তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের একটা গরিমা ছিল৷ একটি সরকারের কর্মযজ্ঞে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে এই দপ্তরের৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *