দায়সারা ভাব এডিসি প্রশাসনের, শিক্ষকের ঘাটতি না থাকলেও শিক্ষার মান তলানিতে

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ অক্টোবর৷৷ ছাত্র সংখ্যার অনুপাতিক হারে শিক্ষকের ঘাটতি না থাকলেও এডিসি এলাকায় শিক্ষার মান ক্রমশ তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে৷ এর জন্য এডিসি প্রশাসনকে দায়ি করা হচ্ছে৷ কারণ, এডিসি প্রশাসন বিদ্যালয়গুলিতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঠিক ভাবে করতে পারেনি৷

রাজ্যে সরকার স্বীকৃত সুকল রয়েছে ৪৮৭৫টি এবং অনুমোদনহীন সুকল রয়েছে ৫৩টি৷ রাজ্য সরকারের স্বীকৃত সুকলে মোট ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৭লক্ষ ২৭ হাজার ৬৩১ এবং অনুমোদনহীন সুকলে মোট ছাত্র ছাত্রী রয়েছে ২হাজার ২৪৬জন৷ এদিকে সরকার স্বীকৃত সুকলে মোট শিক্ষক রয়েছেন ৪৮৩৮১জন৷ এবং অনুমোদনহীন সুকলে শিক্ষকের সংখ্যা ৩৯৯জন৷ জানা গেছে, এডিসি এলাকায় সরকার স্বীকৃত সুকল রয়েছে ১৬৬৫টি৷ এর মধ্যে প্রাইমারি সুকল ১৪৫৩টি, এসবি সুকল ২১১টি এবং হাইসুকল ১টি৷ তাতে মোট ছাত্র ছাত্রীর সংখ্যা ৬২৪৩৫জন এবং শিক্ষক রয়েছেন ৬৩১৫জন৷

এডিসি এলাকায় ওই সুকলগুলি এডিসি প্রশাসনের অধীন পরিচালিত হচ্ছে৷ তবুও শিক্ষার মান উন্নয়নে রাজ্য সরকারের অধীন সুকলগুলি থেকে ১৭০৭জন শিক্ষক শিক্ষিকাকে ডেপুটেশনে এডিসিতে পাঠানো হয়েছে৷ এর জন্য রাজ্য সরকারের কোষাগার থেকে খরচ হচ্ছে ৬ কোটি ৯১ লক্ষ ৮২ হাজার ৭৪৩ টাকা৷ রাজ্য সরকার চাইছে প্রয়োজনে এডিসিতে আরও শিক্ষক দেওয়া হবে৷

পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখা গেছে, এডিসিতে গড়ে প্রতি ১০ জন ছাত্রের জন্য ১ জন শিক্ষকের নিযুক্তি দেওয়া হয়েছে৷ সেক্ষেত্রে রাজ্যে প্রাইমারি সুকলগুলিতে ১৪,১ অনুপাতে এবং আপার প্রাইমারিতে ১৬,১ অনুপাতে ছাত্র শিক্ষক রয়েছে৷ এদিকে জাতীয় গড়ের হিসাবে প্রাইমারিতে ২৩,১ এবং আপার প্রাইমারিতে ১৭,১ অনুুপাতে ছাত্র শিক্ষক রয়েছেন৷ তাতে দেখা যাচ্ছে, ছাত্র শিক্ষকের আনুপাতিক হারে এডিসি এলাকার সুকলগুলির অবস্থা সবচেয়ে ভালো৷ তবুও ফলাফল প্রতি বছর নিম্নমানের হচ্ছে৷ এবিষয়ে খবর নিয়ে জানা গেছে, ২০১৬ সালে মাধ্যমিকে রাজ্যে পাশের হার ছিল ৬৭৪০ শতাংশ৷ সেই তুলনায় এডিসিতে পাসের হার ৪২ শতাংশ৷ ২০১৭ সালে রাজ্যে পাশের হার ছিল ৬৭৩৮ শতাংশ এবং এডিসিতে পাসের হার ছিল ৫১ শতাংশ৷ ২০১৮ সালে রাজ্যে পাসের হার ছিল ৬৪০৭ শতাংশ এবং এডিসিতে পাসের হার ৪১ শতাংশ৷ তিন বছরের ফলাফলের নিরিখে স্পষ্ট, এডিসিতে শিক্ষার মানের খুবই বেহাল অবস্থা৷

তাই, স্বশাসনের অপব্যবহার হলে অধীক ক্ষমতা না পাওয়াই শ্রেয় বলে মনে করছে রাজ্য সরকার৷ এডিসিতে শিক্ষক শিক্ষিকাদের নিযুক্তির ক্ষেত্রে যে গোজামিল লক্ষ্য করা যাচ্ছে এর পেছনে রাজনৈতিক নেতৃত্ব এবং প্রশাসনিক কর্তাদের তোষনকেই মূল কারণ হিসেবে  দায়ি করা হচ্ছে৷ তাছাড়া এডিসির সুকলগুলিতে কোনও ধরনের নজরদারির ব্যবস্থা নেই৷ ফলে, সকলেই খেয়াল খুশি মত কাজ করে চলেছে৷

শিক্ষার অধিকার আইনের নির্দেশিকা মোতাবেক বছরে নূ্যনতম ২৪৮দিন সুকল চালু থাকতে হবে৷ এর মধ্যে নূ্যনতম ২১০ দিন ক্লাশ হতে হবে৷ কিন্তু, সমীক্ষা করে দেখা গেছে রাজ্যে গড়ে ১৫০ থেকে ১৬০ দিনের বেশি সুকলগুলিতে কোথাও ক্লাশ হচ্ছে না৷ এই পরিস্থিতি নিসন্দেহে উদ্বেগজনক বলেই মনে করা হচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *