নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুলাই৷৷ নতুন বাড়ি বানাতে বিদ্যুৎ সশ্রয়ের সবরকম ব্যবস্থা রাখতে হবে৷ তবেই, বাড়ি বানানোর প্ল্যান পাস হবে৷ এমন আইন আনতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ তাতে রাজ্যগুলিরও মতামত জানতে চেয়েছে বিদ্যুৎ মন্ত্রক৷ শনিবার একথা জানিয়েছেন বিদ্যুৎমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ তাঁর কথায়, কেন্দ্রের এধরনের প্রস্তাবে রাজ্যের কোন আপত্তি নেই৷ তাই কেন্দ্রীয় সরকার এধরনের নির্দেশিকা জারি করলে তা রাজ্যেও কার্য্যকর হবে৷
বিদ্যুৎমন্ত্রীর কথায়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের তুলনায় ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে বিদ্যুৎ পরিবাহী ক্ষতি অনেক কমেছে৷ ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বিদ্যুৎ পরিবাহী ক্ষতি ছিল ৩৩৮০ শতাংশ৷ তা ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে কমে গিয়ে দাঁড়িয়েছে ১৫২৫ শতাংশ৷ তাঁর বক্তব্য, কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রী দেশের সমস্ত রাজ্যকে বিদ্যুৎ পরিবাহীতে ক্ষতি ১৫ শতাংশের অধিক যাতে না হয় সেদিকে গুরুত্ব দিতে বলেছেন৷ সেক্ষেত্রে এরাজ্যে বিদ্যুৎ পরিবাহীতে ক্ষতি কেন্দ্রীয় নির্দেশিকার কাছাকাছি রয়েছে৷ তবে, ক্ষতি আরো কমাতে হবে, বলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী৷ এর জন্য দীশাও ঠিক করে ফেলেছেন৷
বিদ্যুৎ মন্ত্রীর কথায়, বিদ্যুৎ পরিবাহীতে ক্ষতি কমাতে সমস্ত ত্রুটিযুক্ত মিটারগুলি বদল করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ শুধু তাই নয়, দীর্ঘসময় ধরে বিদ্যুৎ বিল মিটিয়ে দিচ্ছেন না এমন ভোক্তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করার জন্যও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ পাশাপাশি, যে সমস্ত এলাকায় হুক লাইন বেশি ব্যবহৃত হয় সেই এলাকাগুলি চিহ্ণিত করে সেখানে ইন্সুলেটেড বিদ্যুৎ পরিবাহী তার লাগানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ বিদ্যুৎ মন্ত্রীর কথায়, এমন ১১টি পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দপ্তরকে ইতিমধ্যে মাঠে নামতে বলা হয়েছে৷
বিদ্যুৎ মন্ত্রী এদিন আরো বলেন, বিদ্যুৎ পরিবাহী ব্যবস্থা আরো শক্তিশালী করার জন্য বিশেষভাবে ভাবছে রাজ্য সরকার৷ সম্প্রতি সিমলাতে সমস্ত রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রিদের নিয়ে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বৈঠকে এই বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্ব পেয়েছে৷ বিদ্যুৎমন্ত্রীর কথায়, পূর্বতন সরকারের আমলে দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ জ্যোতি প্রকল্পে ৯০৩ কোটি টাকার ডিপিআর জমা দেওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু, কেন্দ্র মাত্র ৭৪ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে বরাদ্দ করেছে৷ কারণ, ডিপিআরে প্রচন্ড গলদ ছিল৷ তাই, কেন্দ্র তা গ্রহণ করেনি৷ ফলে, বিদ্যুৎ পরিবাহী ব্যবস্থা শক্তিশালী হয়নি৷ বিদ্যুৎ মন্ত্রীর জানান, এলটি লাইনে দুটি ট্রান্সমিশন টাওয়ারের মধ্যে দূরত্ব হওয়া উচিৎ ২৫ কিমি৷ কিন্তু, তার বদলে দূরত্ব রাখা হয়েছে ২৫০ কিমি৷ ফলে, ভোল্টেজের সমস্যা হয়৷ তাই, এখন বিদ্যুৎ পরিবাহী ব্যবস্থাকে শক্তিশালি করতে জোর দেওয়া হবে৷
বিদ্যুৎমন্ত্রীর কথায়, বিদ্যুৎ সশ্রয়ে এখন বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে৷ চলতি অর্থ বছরে প্রচন্ড গরমের দিন মিলিয়ে ২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সশ্রয় সম্ভব হবে৷ তাতে, রাজ্য সরকারের ৪৯ কোটি টাকা সশ্রয় হবে৷ প্রসঙ্গক্রমে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সশ্রয়ের বিষয়টিকে বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে বাড়ি নির্মাণের জন্য প্ল্যান জমা দেওয়ার সময়ই বিদ্যুৎ সশ্রয়ে কি ব্যবস্থা রাখা হবে তার বর্ণনা জানাতে হবে৷ নতুন বাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ সশ্রয়ের ব্যবস্থা রাখা বাধ্যতামূলক করতে চাইছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ এবিষয়ে রাজ্যগুলিরও মতামত জানতে চেয়েছে কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎ মন্ত্রক৷ বিদ্যুৎ মন্ত্রীর বক্তব্য, কেন্দ্রের এই সিদ্ধান্তে রাজ্যের কোন আপত্তি নেই৷ ফলে, কেন্দ্র এধরনের নির্দেশিকা জারি করলে রাজ্যেও তা কার্যকর হবে৷