গতবছর মিলেছে ২২৭.৫৩ লাখ, রেগায় চলতি অর্থবর্ষে অনুমোদিত লেবার বাজেট ২২০ লাখ টাকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ জুলাই ৷৷ আজ সচিবালয়ের কনফারেন্স হলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন

শনিবার সচিবালয়ের কনফারেন্স হলে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷

প্রকল্প নিয়ে এক পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ সভায় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব এল কে গুপ্তা জানান, রেগায় আমাদের রাজ্যে মোট ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার জব কার্ড চালু রয়েছে৷ ৯ লক্ষ ৪০ হাজার শ্রমিক রয়েছেন৷ একমধ্যে ৪০৬ শতাংশ এস টি এবং ১৭৯ শতাংশ এস সি শ্রমিক রয়েছেন৷ রেগার মাধ্যমে মাধ্যমে সামাজিক ও ব্যক্তিগত সম্পদ সৃষ্টি এবং গ্রামীণ পরিকাঠামো তৈরির উপরর গুরত্ব দেওয়া হয়৷ এই প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রেগার মাধ্যমে আরও বেশি সম্পদ সৃষ্টির উপর জোর দিতে হবে৷ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব আরও জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে অনুমোদিত লেবার বাজেট ছিল ২২৭.৫৩ লাখ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে অনুমোদিত লেবার বাজেট হল ২২০ লাখ৷ ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছিল ১৭৬০৪ লাখ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এখন পর্যন্ত শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ৩০৩৪ লাখ৷ এরমধ্যে সম্পূর্ণ এডিসি এলাকার ২৩ টি ব্লকে এখন পর্যন্ত শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ১৩ লক্ষ ৪১ হাজার ১৩২, আংশিক এডিসি এলাকার ১৭ টি ব্লকে এখন পর্যন্ত শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ১১ লক্ষ ১ হাজার ৬৩৬ এবং নন-এডিসি এলাকার ১৮ টি ব্লকে এখন পর্যন্ত শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ৫ লক্ষ ৯০ হাজার ৯৫১৷ ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে গড় শ্রমদিবস ছিল ৩৩৬৮ এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষে এখন পর্যন্ত গড় শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে ৯৪৫৷ ২০১৭-১৮  অর্থবর্ষে রেগার মাধ্যমে ৬৯ হাজার ১৯৭ টি কাজ সম্পন্ন করা হয়েছিল এবং ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের এখন পর্যন্ত ১২ হাজার ৪০৯ টি কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ তিনি জানান, ১১৭৮টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটির মধ্যে ১১৭০ টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও ভিলেজ কমিটিতে রেগার কাজ শুরু হয়েছে৷ রেগার মাধ্যমে চলতি অর্থবর্ষে ২৭৭.১২ একর এলাকায় বাঁশ চাষ করা হবে এবং ৭৪৪.২৩ একর এলাকায় আম, মোসাম্বী, কমলালেবু, কাঁঠাল এবং আনারস চাষ করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে৷ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জানান, রেগার বিভিন্ন কাজের প্রথম পর্যায়ে জিও ট্যাগিং ৫৮.৪৭ শতাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে জিও ট্যাগিং ৬১.৬ শতাংশ সম্পন্ন করা হয়েছে৷ ৭৪.৮ শতাংশ রেগার শ্রমিকদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আধার বেইসড পেমেন্ট সিস্টেমে (এ বি পি এস) রুপান্তর করা হয়েছে৷

পর্যালোচনা সভায় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জানান, ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় (গ্রামীণ) ১২৫৯ টি ঘর দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল৷ এরমধ্যে ১১৪২ টি ঘরের অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে৷ এরমধ্যে ৩৮টি ঘর নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয়েছে৷ বাকিগুলির নির্মাণ কাজ বিভিন্ন পর্যায়ে রয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরা শিল্প উন্নয়ন নিগমের অধীনে ১৮টি ইটভাট্টা রয়েছে এরমধ্যে ৫টি ইটভাট্টা চালু আছে৷ বাকিগুলো দক্ষ ও উদ্যামী কর্মী নিয়োগ করে চালু করার জন্য গুরুত্ব আরোপ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, এগুলি চালু হলে ঘর নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় ইট গ্রামোন্নয়ন দপ্তরকে সরবরাহ করা যাবে৷

গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জানান, দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় ২০১৬-১৭ অর্থবর্ষ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বিভিন্ন ট্রেডে ২৫ হাজার ২৭৫ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল৷ এরমধ্যে ১৪ হাজার ৯৭২ জনকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার অনুমোদন পাওয়া গেছে৷ ইতিমধ্যে ৪ হাজার ২৬৮ জনকে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে৷ এ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের ইটভাট্টাগুলিতে রাজ্যের কোনো আগুন মিস্ত্রী নেই, বর্হিরাজ্য থেকে আগুন মিস্ত্রীদের আনা হয়৷ এই যোজনার মাধ্যমে রাজ্যের শ্রমিকদের মধ্য থেকে যাতে আগুন মিস্ত্রী তৈরী করা যায় এরজন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ দেন মুখ্যন্ত্রী৷

গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব জানান, আমাদের রাজ্যে মিস্তরীয় পঞ্চায়েত ব্যবস্থা রয়েছে৷ বর্তমানে রাজ্যে আগরতলা, আমবাসা, কুমারঘাট এবং উদয়পুরে এই ৪টি স্থানে পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট রয়েছে৷ পঞ্চায়েত দপ্তর রাজ্যের প্রতিটি জেলাতে পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করার পরিকল্পনা নিয়েছে৷ এরমধ্যে বিলোনীয়া এবং খোয়াই-এ পঞ্চায়েতরাজ ট্রেনিং ইনস্টিটিউট স্থাপন করার অনুমোদন পাওয়া গেছে৷

মুখ্যমন্ত্রী পর্যালোচনা সভায় বলেন, গ্রামীণ এলাকায় যেসব উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে সেগুলি দেখাশুনা করার জন্য বিডিওদের মাসে ১৫-২০ দিন কাজের জায়গায় যেতে হবে৷ পাশাপাশি প্রতিটি জেলার জেলাশাসকদের কাজের  জায়গায় গিয়ে কাজের তদারকি করতে হবে৷

এছাড়াও দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ন্যাশনাল রুরবান মিশন, সংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনা ইত্যাদি বিষয়ের উপর আলোচনা করেন গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব এল কে গুপ্তা৷

পর্যালোচনা সভায় মুখ্যমন্ত্রী ছাড়াও মুখ্যসচিব সঞ্জীব রঞ্জন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রধানসচিব কুমার অলক, মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা বি কে সিববার এবং গ্রামোন্নয়ন দপ্তর এবং পঞ্চায়েত দপ্তরের পদস্থ আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *