ইমফল (মণিপুর), ৮ জুলাই (হি.স.) : বিভিন্ন দাবি পূরণের ভিত্তিতে আজ রবিবার সকাল ছয়টা থেকে বেশ কয়েকটি অরাজনৈতিক ও ছাত্র সংগঠন আহূত অনির্দিষ্টকালীন মণিপুর বনধ-এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে রাজ্যে। নির্বাচন-পূর্ব প্রদত্ত প্রতিশ্রুতিগুলি শীঘ্র পূরণের দাবির ভিত্তিততে বিভিন্ন উপজাতি ছাত্র সংগঠনের পাশাপাশি থাডউ ছাত্র সংস্থা (থাডউ স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বা টিসএ), রংমেই নাগা স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন নর্থ-ইস্ট ইন্ডিয়া (আরএনএসও, এইআই), লিয়াংমেই নাগা কাতিমাই রুয়াংডি (এলএনকেআর) এবং এসএসপিপি-জিএইচকিউ নামের কয়েকটি সংগঠন আজ থেকে গোটা রাজ্যে অনির্দিষ্টকালের জন্য বনধ-এর ডাক দেওয়া হবে বলে আগাম জানিয়েছিল। তবু সরকার এ ব্যাপারে সদর্থক পদক্ষেপ না নেওয়ায় প্রস্তাবিত বনধ কর্মসূচি আজ শুরু করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন টিএসএ-র সদর হিলস-এর সাধারণ সম্পাদক থাংটিনলেন হাওকিপ।
আজ থেকে চলমান বনধের প্রভাব পড়েছে ইমফল-ডিমাপুর (নাগাল্যান্ড) ২ নম্বর জাতীয় সড়কে। শুনশান রাস্তাঘাট। এতে বিপাকে পড়েছেন আন্তঃরাজ্য নিত্যযাত্রীরা। তাছাড়া ইমফল-মোরে ১০২ নম্বর জাতীয় সড়ক। এই সড়ক আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ। রাজ্যের বেশিরভাগ এলাকায় দোকানপাট বন্ধ, লাটে উঠেছে ব্যবসা-বাণিজ্য। আজ রবিবার থাকায় স্বাভাবিকভাবে বন্ধ সরকারি, বেসরকারি অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজ, ব্যাঙ্ক ইত্যাদি। তবে রাজধানীর মতো বড় কয়েকটি শহরে হালকা গাড়িঘোড়া চলছে বলে সংশ্লিষ্ট এলাকার সূত্রের খবরে জানা গেছে।
টিএসএ-র সদর হিলস-এর সাধারণ সম্পাদক থাংটিনলেন হাওকিপ জানান, “রাজ্য সরকারের গরিমসির দরুন এই পদক্ষেপ নিতে আমরা বাধ্য হয়েছি। এখনও সময় আছে। সরকার আমাদের দাবিগুলি পূরণ করে দিলে সঙ্গে-সঙ্গে বনধ কর্মসূচি প্রত্যাহার করে নেওয়া হবে।”
তাঁদের দাবিগুলির তথ্যও দিয়েছেন থাংটিনলেন হাওকিপ। বলেন, ট্রাইবাল লেঙ্গুয়েজ বিষয় (এমআইএল)-এর লেকচারার পদের জন্য শীঘ্র নোটিফিকেশন জারি, এনসিইটি-২০১৪ অনুযায়ী লেকচারার পদে প্রার্থী চয়নে বি.এড ডিগ্রিধারীদের অন্তত দশ শতাংশ সমতা রক্ষার মাধ্যমে একীভূত করা। তাছাড়া, মণিপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতি অতিসত্বর স্বাভাবিক করার পাশাপাশি অস্থিরতার কারণ অনুসন্ধান করতে একটি উচ্চস্তরীয় তদন্ত কমিটি গঠন করারও দাবি তাঁরা তুলেছেন বলে জানান ছাত্রনেতা থাংটিনলেন হাওকিপ।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, অনির্দিষ্টকালের বনধে প্রায় তেংনউপল-সহ সবকয়টি পার্বত্য জেলার জনজীবন পর্যুদস্ত হয়ে গেছে। বনধ সমর্থকরা রাজ্যের বিভিন্ন প্রধান প্রধান সড়কে টায়ার পুড়িয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন। এর মধ্যে রয়েছে ইমফল-মোরে ১০২ নম্বর জাতীয় সড়ক, ইমফল-ডিমাপুর (নাগাল্যান্ড) ২ নম্বর জাতীয় সড়ক প্রভৃতি।