সায়ন্তক চৌধুরী
বর্তমানে চরম উৎকন্ঠার মধ্যে দিন কাটছে ১০৩২৩ জন শিক্ষকের৷ বিগত বাম সরকারের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য যেন তারা তৈরী হচ্ছে৷ বিগত বাম সরকার রাজ্যজুড়ে যে উন্নয়নে ধবজা উড়িয়েছিলেন তারই শিকার হন রাজ্যের নিরীহ বেকার ১০৩২৩ জন যুবক যুবতী৷ এক সময়ে রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার বহিঃরাজ্যে নির্বাচনী ভাষণ দিতে গিয়ে বলেছিলেন যে, ত্রিপুরা বাম সরকার থাকায় স্বর্ণযুগ চলছে৷ আর সেই স্বর্ণযুগে রাজ্যের ১০৩২৩ জন বেকারের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হল৷ বর্তমানে এই সব
শিক্ষক গভীর অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছে৷ উল্লেখ্য, বামফ্রন্ট সরকার অবৈধভাবে তাদেরকে শিক্ষক পদে চাকুরী দিয়েছিল৷ সুপ্রিম কোর্ট ২০১৭ সালের ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ পর্যন্ত তাদের চাকুরীর মেয়াদ বাড়িয়েছিল৷ পরে অবশ্য রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে তাদের এডহক হিসাবে নিযুক্তি দেয় ৩০ জুন পর্যন্ত৷ সেই হিসাবে শনিবার তাদের চাকুরীর মেয়াদ শেষ হল৷ কিন্তু, রাজ্য সরকার তাদের চাকুরীর মেয়াদ আরও চারদিন বাড়ালো৷ কেন এ মেয়াদ চারদিন বৃদ্ধি করা হল৷
এ বাড়ানোর পেছনে বর্তমান সরকারের একটা সদিচ্ছা কাজ করছে৷ বর্তমান সরকার তাদের চাকুরীর মেয়াদ আরও দুই বছর বাড়ানোর জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছে৷ এ আবেদনের শুনানী হবে চার জুলাই৷ এবং এ জন্য রাজ্য সরকার তাদের চাকুরীর মেয়াদ চারদিন বাড়ালো৷ কিন্তু এরপরও প্রশ্ণ থেকে যায়৷ প্রশ্ণ হল চার জুলাই শুনানির নিশ্চয়তা কতটুকু? শুনানির দিনতো পিছিয়েও যেতে পারে৷ তখন রাজ্য সরকার কি ব্যবস্থা নেবে? এ ছাড়াও যদি ধরা হয়- রাজ্যে সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট শিক্ষকদের চাকুরীর মেয়াদ আরও দুই বছর বৃদ্ধি করল৷ তারপর ওই হতভাগারা কই যাবে? অনেকের মতে এটি কোন সমাধান সূত্র নয়৷ কিন্তু, রাজ্য সরকারকেও আইনের মাঝে থেকে সব কিছু করতে হচ্ছে৷ এমন পরিস্থিতিতে ১০৩২৩ জন শিক্ষক অকূল সাগরে পড়লো৷ তাদের নিয়ে যেন বাম সরকার পাশা খেললো৷ মেলারমাঠের কূটকৌশলের শিকার যে ১০৩২৩ শিক্ষক৷ তাদের মধ্যে অনেকে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ নিয়ে বাড়ি ঘর করে চোখে সর্ষে ফুল দেখছে৷ ধীরে ধীরে তারা যেন না ঘরকা, না ঘাটকায় পরিণত হচ্ছে৷ তাদের চোখে মুখে ফুটে উঠছে বিষন্নতার ছাপ৷ সমাজে তারা যেন অনেকটা অনুগ্রহের পাত্রে পরিণত৷ কারা এর জন্য দায়ী?