সায়ন্তক চৌধুরী
রাজ্যের অর্থনীতির চাকাকে গতিশীল করার লক্ষ্যে রাজ্যের নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব নতুন চিন্তা ধারা নিয়ে এগোতে চাইছেন৷ ফলশ্রুতিতে বাগিচা চাষিরা যেন আশার আলো দেখছেন৷ বিভিন্ন ফল উৎপাদনে বাগিচা চাষিরা আন্তরিক হলেও তৎকালীন বাম সরকার রাজ্যের হর্টি কালচার দপ্তর নিয়ে তেমন চিন্তা ভাবনা করেছিলেন বলে মনে হয় না৷ করলে বাগিচা শিল্প এ রাজ্যে যে গড়ে উঠতে পারতো তা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে৷ কেন্দ্রীয় সরকার বাগিচা গড়ে তোলার জন্য প্রতি বছরই রাজ্য সরকারকে দেদার অর্থ দিত৷ কিন্তু সেই অর্থ বাগিচার কাজে ব্যবহৃত না হয়ে বাঁকা পথে অন্যখাতে চলে যেত৷ কিংবা হর্টি দপ্তরের কর্মকর্তাদের উদর পূর্তি হত৷ ফলে রাজ্যের বাগিচা শিল্প ধীরে ধীরে দুর্বল থেকে দুর্বলতম হয়ে পড়লো৷ রাজ্যে ফল উৎপাদনরে মধ্যে প্রথম সারিতে ছিল আনারস ও কাঁঠাল৷ দুটি ফলই রসে বরা৷ জিভে জল আসার মত ফল আনারস ও কাঁঠাল৷ অত্যন্ত সুস্বাদু এ দুটি ফলের কদর অস্বাভাকি৷ বর্তমানে এ দুটি ফল মহার্ঘ হয়ে উঠেছে৷ বিশেষ করে রাজ্যের কুইন আনারসের তুলনা পাওয়া ভার৷
নতুন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বাগিচা শিল্পকে নতুন দিশায় নিয়ে যাবার চিন্তা ভাবনা করছেন৷ তিনি চাইচেন রাজ্যের কুইন আনারসকে শুধু দেশেই নয় বিশ্ব দরবারে তুলে ধরতে৷ তিনি নিজে কুইন আনারসের ব্র্যান্ড অ্যাম্বেসডর হবেন বলেও জানিয়েছেন৷ এ থেকে বোঝা যাচ্ছে যে নতুন মুখ্যমন্ত্রী কুইন আনারস নিয়ে অনেক আশাবাদী৷ ইতিমধ্যে দুবাই থেকে একটি প্রতিনিধি দল কুইন আনারসের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন৷ বলা যেতে পারে কুইন আনারসের ভবিষ্যত যেমন উজ্জ্বল তেমনই এ আনারস চাষ করে অনেক চাষী লাভবান হবেন৷ কুইন আনারসের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আগ্রহের যে যর্র্থথ কারন রয়েছে তাও বলার অপেক্ষা রাখে না৷
কিন্তু এরপরও কিছু কথা থেকে যায়৷ মুখ্যমন্ত্রী কুইন আনারসকে বিশ্বের কুইন করতে চাইছেন৷ রাজ্যবাসীর জন্য তা কম গৌরবের বিষয় নহে৷ কিন্তু রাজ্যেও কুইনকে নিয়ে মাঝারি শিল্প গড়ে তোলা তো সম্ভব৷ রাজ্যে জুস শিল্প গড়ে তোলা অসম্ভব নয়৷ সুস্বাদু আনারসের রস প্রক্রিয়াজাতকরন করা যেতে পারে৷ রাজ্যে এমন কারখানা গড়ে উঠলে কিছু বেকার যুবকেরও কর্মসংস্থান হবে৷ বেকারদের মুখে হাসি ফুটবে৷ নালকাটায় ন্যাবামেকের ফল প্রক্রিয়াকরণ প্রকল্পটি অনেক আগেই লাটে উঠেছে৷ তা অজানা নহে৷ রাজ্যের কাঁঠাল নিয়েও নতুন করে ভাবনার অবকাশ রয়েছে৷ আনারস ও কাঁঠাল বাগিচা গড়ে উঠলে বাগিচা চাষি ফিরে পাবে বাঁচার নতুন প্রেরণা৷ তবে প্রচুর পরিমানে কুইন আনারস উৎপাদন করার ক্ষেত্রে হর্টি দপ্তরকেও এগিয়ে আসতে হবে৷ চাষিদের সার্বিক সাহায্য করতে হবে৷ তবেই বাগিচা চাষিরা বুঝতে পারবে যে নতুন মুখ্যমন্ত্রীর সদিচ্ছার কোনও অভাব নেই৷ সেই ক্ষেত্রে রাজ্যের আর্থিক মেরুদন্ড যে ধীরে দীরে চাঙ্গা হবে তাতে কোনও সন্দেহ নেই৷ শুধু আবারস নয়৷ প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে বাঁশ৷ নতুন মুখ্যমন্ত্রী তা নিয়ে ভাবনা চিন্তা করছেন৷ মোটের উপর রাজ্যের প্রাকৃতিক সম্পদকে তিনি অর্থকরী সম্পদ হিসাবে গড়ে তুলতে চাইছেন৷ সবেমাত্র বিজেপি সরকারের বয়স এক মাস ১১ দিন৷ এরই মধ্যে মুখ্যমন্ত্রীর এমন প্রয়াস সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে৷ সেই সাথে তিনি বুঝিয়ে দিলেন যে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী থেকে তিনি একটু আলাদা৷ তার চেতনায় রয়েছে মানুষের ভাবনা৷ এখন দেখার বিষয় এ ভাবনার ফসল রাজ্যবাসী কতটুকু গড়ে তুলতে পারবেন৷
2018-04-19