কলকাতা, ১৬ এপ্রিল,(হি.স.): পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ মামলা নিয়ে সোমবার জমজমাট হাইকোর্ট । সারাদিন হাইকোর্ট ঘিরে চলল রীতিমত নাটক । সকালে যা শুরু হয়েছিল ডিভিশন বেঞ্চে, দুপুরে তা চলে যায় সিঙ্গল বেঞ্চের হাতে । বিকেলে আবার সেই নাটক চলে আসে ডিভিশন বেঞ্চেই । দিনের শেষে পঞ্চায়েত মামলা সিঙ্গল বেঞ্চেই ফেরানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ । ফলে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে ধাক্কা খেল শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশন । পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়ায় সিঙ্গল বেঞ্চের দেওয়া স্থগিতাদেশকে চ্যালেঞ্জ করে যে আবেদন ডিভিশন বেঞ্চে করা হয়েছিল, তা সোমবার বিকেলে তা খারিজ হয়ে গেল । সিঙ্গল বেঞ্চেই এই মামলার শুনানি চলবে বলে জানিয়ে দিলেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার এবং অনিন্দ্য মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ । বিচারপতিদ্বয় পরিস্কার বলে দিলেন, বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চেই মামলা শুনবে । কিন্তু দ্রুত মামলার নিস্পত্তি করতে হবে । প্রয়োজনে প্রতিদিনই মামলার শুনানি করতে হবে ।
মামলার সওয়াল পর্ব এবং ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণেই সিঙ্গল বেঞ্চেই মামলা ফেরানোর সম্ভাবনা উঠে এসেছিল । তখনই মামলাটি নিয়ে সিঙ্গল বেঞ্চে যাওয়ার জন্য তৃণমূলের আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে পরামর্শ দেন বিচারপতিরা । যেহেতু এই নিয়ে মামলা হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চে চলছে, তাই সিঙ্গল বেঞ্চে যাওয়ার জন্য শেষ পর্যন্ত নির্দেশ দিল ডিভিশন বেঞ্চ । ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা সিঙ্গল বেঞ্চে মামলা ফেরাতে চাইলেও, তা ঠেকাতে মরিয়া ছিলেন কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । কিন্তু তার সেই চেষ্টা বিফলে গেল ।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া ঘিরে রাজ্য জুড়ে অশান্তির অভিযোগে বিরোধীরা আদালতের দ্বারস্থ হয় । ভোট প্রক্রিয়ার ওপর স্থগিতাদেশ জারি করে আদালত । পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নকে কেন্দ্র করে শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রথম থেকে সরব বিরোধীরা । বিরোধীদের মনোনয়নে বাধা দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসকদলের বিরুদ্ধে । ৯ এপ্রিল ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষদিন । ওইদিন মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় নির্বাচন কমিশন । একটি নির্দেশিকা জারি করে বলা হয়, ১০ এপ্রিল সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত মনোনয়ন জমা নেওয়া হবে । কিন্তু ১০ এপ্রিল ১১টার আগেই বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই নির্দেশিকা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয় । নির্দেশিকা প্রত্যাহারের প্রতিবাদে হাইকোর্ট এবং সুপ্রিম কোর্টে মামলা করে বিজেপি । ১০ এপ্রিল ওই মামলার শুনানি হয় । নির্দেশিকা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ জারি করে হাইকোর্ট । অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দেয়, পঞ্চায়েত নির্বাচন সংক্রান্ত যা নির্দেশ দেওয়ার তা কলকাতা হাইকোর্টই দেবে ।
১২ এপ্রিল সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে । শুনানি চলাকালীন বিচারপতি কমিশনকে প্রশ্ন করেন,‘নির্বাচন কমিশনকে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দিয়েছে সংবিধান । তাহলে এমন কী ঘটনা ঘটল যে রাতে নির্দেশিকা জারি করার পর সকালেই তা প্রত্যাহার করতে হল ? বললেন, সকাল ১১টা থেকে তিনটে পর্যন্ত মনোনয়ন নেবেন । কিন্তু ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই আপনাদের ভোলবদল কেন ? এমন কী পরিস্থিতি ঘটেছিল’ ? যদিও বিচারপতির প্রশ্নের কোনও উত্তর দিতে পারেনি কমিশন । এরপরই পঞ্চায়েত নির্বাচন প্রক্রিয়ায় আজ অর্থাৎ ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত স্থগিতাদেশ দেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার । সে সময় হাইকোর্টে জোর সওয়াল করেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় । তাঁর অভিযোগ, বিজেপি হাইকোর্টে তথ্য গোপন করেছে । একই মামলা যে সুপ্রিম কোর্টেও ছিল, সেই তথ্য হাইকোর্টের কাছে গোপন করে বিজেপি । এ জন্য বিজেপিকে ৫ লক্ষ টাকা জরিমানাও করেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার ।
বিচারপতি তালুকদারের নির্দেশের চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে ওই মামলার দ্রুত শুনানির আবেদন জানায় তৃণমূল কংগ্রেস । ডিভিশন বেঞ্চে আজ শুনানি হয় । অন্যদিকে, বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের বেঞ্চে আজ মূল মামলার শুনানি হলে তিনি জানিয়ে দেন ডিভিশন বেঞ্চের রায় আগে জানা দরকার । তারপরই তিনি এই মামলা চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নেবেন । সিপিএমের আইনজীবী বিকাশ ভট্টাচার্য বলেন, ‘আমরা গিয়ে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের কাছে ওই মামলার শুনানি শুরু করার কথা বললে তিনি বলেন,ডিভিশন বেঞ্চ কি রায় দেয় সেটা দেখলে এই মামলার গতি প্রকৃতি বোঝা যাবে । সেই বুঝে আমি মামলা চালিয়ে নিয়ে যেতে পারব । তাই এই মামলা মঙ্গলবার বেলা ২টো পর্যন্ত স্থগিত রইল ।
বৃহস্পতিবারের নির্দেশের পর থেকেই গোটা রাজ্য তাকিয়ে ছিল আদালতের দিকে ।
সোমবার আদালতে খোলার পরে পরেই শুরু হয় শুনানি । সেই সঙ্গে নাটক । সকাল ১১টা থেকে ডিভিশন বেঞ্চে এই মামলার শুনানি শুরু হয় । বেলা সাড়ে ১২টা পর্যন্ত শুনানি চলে ।
সোমবার আদালতে প্রশ্নবাণে জর্জরিত হন কমিশনের প্রতিনিধি নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্য । বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে নীলাঞ্জন জানান, ‘আমি আইনজ্ঞ নই’। এই কথা শুনে বিস্ময় প্রকাশ করেন দুই বিচারপতিই । নীলঞ্জন শাণ্ডিল্য বলেন, ‘আমরা মনে করি, বিজেপির পিটিশনের মান্যতা নেই’। একথা শোনার পর ডিভিশন বেঞ্চ নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যকে প্রশ্ন করে, ‘আপনি কি একথা সিঙ্গেল বেঞ্চে জানিয়েছিলেন’? উত্তরে সন্তুষ্ট না হয়ে বিচারপতিরা নীলাঞ্জন শাণ্ডিল্যকে বলেন, ‘কমিশনের সচিব হয়েও আপনি কেন পঞ্চায়েত আইন জানেন না’? আজ শুনানির সময় বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সচিব নীলাঞ্জন সান্ডিল্যের উদ্দেশে বলেন, ‘রাজনৈতিক দলগুলি যে অভিযোগ করেছিল, তা কি যথাযোগ্য মনে করেন’ ? ‘নির্বাচন কমিশন কি তাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করেছে’ ? ‘সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশগুলি কি সঠিকভাবে পালন করেছে’ ? নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিচারপতিরা আরও বলেন, ‘নির্বাচনে কমিশনের যে ভূমিকা পালন করা উচিত ছিল, সে কি আপনার করতে পেরেছেন ? বিচারপতিরা জানতে চান, নির্দেশিকা জারি করেও তা কেন প্রত্যাহার করলেন’ ? এর পরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের বক্তব্য জানতে চায় ডিভিশন বেঞ্চ । প্রথমেই জানতে চায়, তৃণমূলের বক্তব্যকে কমিশন সমর্থন করে কিনা । উত্তরে কমিশন সচিব নীলাঞ্জন সাণ্ডিল্য বলেন, ‘আমরা সমর্থন করি না’। তখন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার বলেন, ‘আপনারা তবে কী চান’? তখন সচিব বলেন, ‘আমি কোনও বিশেষজ্ঞ নই এ বিষয়ে’। তখন বিচারপতি হেসে ফেলেন। বলেন, ‘আপনি যদি পঞ্চায়েত আইন না জানেন তবে কে জানবে’? জবাবে কমিশন সচিব বলেন, ‘হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের ১২ তারিখের অন্তর্বর্তী নির্দেশ প্রত্যাহার করাতে চায় । কারণ, মনোনয়নের স্ক্রুটিনি, কর্মীদের প্রশিক্ষণ সহ সমস্ত প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তখন কমিশন সচিবের কথা শুনে বিচারপতি প্রশ্ন করেন, ‘আপনি পঞ্চায়েত আইনটাই জানেন না ? সংবিধানের এই বিষয়টি আপনার তো বেশি ভাল করে জানা উচিত । আপনিই তো হলেন প্রিন্সিপাল অব দি ল । তাহলে আপনি কী ভাবে বলেন, আপনি বিশারদ নন’? জবাবে কমিশন সচিব বলেন, ‘আমরা ২০ এবং ১২ এপ্রিলের অর্ডারকে চ্যালেঞ্জ করে আপিল করেছি’। তখন বিচারপতি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্টে তো আপনারা মেনটেনবিলিটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন । তাহলে হাইকোর্টে সেটা নিয়ে আপিল করেননি কেন’? তখন কমিশন বলে, ‘আমরা মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলাম । আমরা চাই ১০, ১২ তারিখের অর্ডার প্রত্যাহার করাতে । আর নির্বাচন প্রক্রিয়া ফের চালু করাতে’।
পঞ্চায়েত সচিবের কাছে ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায়, ‘পঞ্চায়েতের ৫ বছরের মেয়াদ কবে শেষ হচ্ছে’? পঞ্চায়েত সচিব সৌরভ দাস জানান, ‘অগাস্ট পর্যন্ত পঞ্চায়েতের ৫ বছরের সময়সীমা’।
সোমবার ২ বিচারপতি তৃণমূলের আইনজীবীকে প্রশ্ন করেন, ‘সিঙ্গেল বেঞ্চে মামলা চলছে, তবুও আপনারা কেন ডিভিশন বেঞ্চে আসলেন’ ? এর উত্তরে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ‘রিট পিটিশনের শুনানি করতে পারে না সিঙ্গেল বেঞ্চ, তাই ডিভিশন বেঞ্চে এসেছি’। এরপর বিচারপতিদ্বয় পাল্টা প্রশ্ন করেন, ‘সিঙ্গেল বেঞ্চে পিটিশন দাখিলে কার আপত্তি’? বিচারপতিদের এমন প্রশ্ন শুনে পঞ্চায়েত আইনের ৪৬(২) ধারা উল্লেখ করে কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ৯ এপ্রিলে কমিশনের মনোনয়ন জমার সময়সীমা বৃদ্ধি সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি যা সেদিন রাত ১০টা নাগাদ জারি করা হয়, তা অবৈধ । যদিও শাসকদলের আইনজীবীর এই বক্তব্যে সন্তুষ্ট নন বিচারপতিরা । তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষে আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বারবার ডিভিশন বেঞ্চকে বোঝাবার চেষ্টা করেন, হাইকোর্টে সিঙ্গল বেঞ্চে বিজেপি যে মামলাটা করেছিল, সেটা কোনও ভাবেই মেনটেনবল নয় । সিঙ্গল বেঞ্চের অর্ডারের উপরে মডিফিকেশন চেয়ে তৃণমূলও মামলা করেছিল । কিন্তু সিঙ্গল বেঞ্চ তৃণমূলের আবেদন নিয়ে কোনও কথা না বলে নির্বাচনী প্রক্রিয়ার উপরে অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দিয়েছে ১৬ তারিখ পর্যন্ত । কল্যাণ প্রশ্ন করেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট যেখানে বলে দিয়েছে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে আইন অনুযায়ী কঠোর ভাবে ব্যবস্থা নিতে এবং হাইকোর্টকে বলে দিয়েছে মামলাটা শুনতে, সেখানে হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার নির্বাচনী প্রক্রিয়া থমকে দিতে পারেন ? ১৯৫২, ১৯৮২ সালে সুপ্রিম কোর্টের অর্ডারে স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে, হাইকোর্ট নির্বাচনী প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারে না । তাহলে হাইকোর্ট কি সুপ্রিম কোর্টের অর্ডার মেনেছে’?
এর পরে ডিভিশন বেঞ্চ মন্তব্য করে, সিঙ্গল বেঞ্চ তো চূড়ান্ত কোনও রায় দেয়নি । তা হলে মামলার এই পর্বে এসে তৃণমূল কংগ্রেস এবং কমিশনের ডিভিশন বেঞ্চে আসার দরকার কী ? আপনারা বরং, সিঙ্গেল বেঞ্চে ফিরে যান । এর পরেও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর সওয়ালে অবিচলই থাকেন । বারবার প্রশ্ন তোলেন, সিঙ্গেল বেঞ্চের ভূমিকা নিয়ে । বিচারপতিদ্বয়ের মন্তব্য, ‘সিঙ্গল বেঞ্চের মনোভাব আগাম আন্দাজ করা ঠিক নয় । ডিভিশন বেঞ্চ কমিশনকে জেনে আসতে বলে স্ক্রুটিনি, ভোটের দিনক্ষণ-সহ বিভিন্ন তথ্য । দুপুরেই কমিশন ডিভিশন বেঞ্চকে সমস্ত তথ্য জানিয়ে দেয় । বিকেল ৫ টা নাগাদ সমস্ত কিছু খতিয়ে দেখে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার ও অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ পরিস্কার নির্দেশ দেয়, বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চেই এই মামলাটি হবে । অর্থাৎ ভোট নিয়ে অনিশ্চয়তা অন্তত মঙ্গলবারের আগে কাটছে না । এ দিনই এই ব্যাপারে একটি মামলার শুনানিতে পঞ্চায়েত ভোট প্রক্রিয়ার উপর দেওয়া স্থগিতাদেশ মঙ্গলবার পর্যন্ত বাড়িয়ে দেয় হাইকোর্টের সিঙ্গল বেঞ্চ । ডিভিশন বেঞ্চও সিঙ্গল বেঞ্চের রায়কেই মান্যতা দিল ।
তবে, এখনই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না বলে সোমবার সন্ধ্যায় পরিস্কার জানিয়ে দিলেন তৃণমূলের আইনজীবী তথা সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চায়েত মামলা সিঙ্গল বেঞ্চেই ফেরানোর নির্দেশ দেবার পর কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, মঙ্গলবার হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের চেম্বারেই তিনি ফের এই মামলাটি তুলবেন । তাঁর কথায়, ‘বিজেপির মামলাটির কোনও মান্যতা নেই, সেকথা আরও একবার বিচারপতিকে জানাব’। তবে এখনই সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন না বলে জানিয়ে দেন তিনি ।
এদিন পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রক্রিয়া হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দেওয়ার প্রসঙ্গে তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টপাধ্যায় বলেন, ‘বিচারব্যবস্থার উপর আমাদের পূর্ণ আস্থা আছে । সেখানে আমরা নিজেদের যুক্তি দিতে পারি । তাদের অসম্মান, অপমান বা অশ্রদ্ধা করার কোনও অভিপ্রায় আমাদের নেই’। পার্থ চট্টপাধ্যায় আরও বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নির্বাচন প্রক্রিয়া চলছে । এছাড়া মমতা ব্যানার্জি কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একা লড়াই করছেন । তাই, পঞ্চায়েত নির্বাচন জাতীয়স্তরে গুরুত্ব পাচ্ছে’।
আজ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায় বের হওয়ার পর বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের মন্তব্য, ‘যেভাবে বিরোধীদের মনোনয়ন জমা না দিতে দিয়ে গণতন্ত্রকে ধংস করছে তৃণমূল । তা মোটেই কাম্য নয় । তাই এই রায় শুধু বিজেপির জয় না । বাংলার সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রিয় মানুষের জয়’। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশকে নৈতিক জয় হিসাবে দেখছে বিজেপি । রায়ের পরেই সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হন মুকুল রায় এবং মামলার আবেদনকারী বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ।
এদিন মুকুল রায় আরও বলেন, ‘এহেন সন্ত্রাস বাংলা ছাড়া ভারতের আর কোথাও হয় না । অথচ, পুলিশ, জেলা সুপার, জেলা শাসক, পুলিশ সুপার এবং আইসিকে নিয়ন্ত্রণ করছেন মুখ্যমন্ত্রী । একই সঙ্গে তিনি বলেন, ৩৪ বছরে বাম শাসনের অবসান হয়েছে রাজ্যে । তৃণমূলের পতনও অনিবার্য বলে মন্তব্য তাঁর |’