নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৩ মার্চ ৷৷ অধ্যক্ষ পদে দায়িত্ব নিলেন রেবতি মোহন দাস৷ সংসদীয় রীতি মেনে হাউসের নেতা বিপ্লব দেব এবং

বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার তাঁকে অধ্যক্ষের আসনে নিয়ে যান৷ সাথে ছিলেন জোট সরকারের শরিক দলের পক্ষে রাজস্ব মন্ত্রী এনসি দেববর্মা এবং উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া৷
১০ প্রতাপগড় (তপশিলী জাতি) বিধানসভা কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত বিজেপি বিধায়ক হলেন রেবতী মোহন দাস৷ তিনি ছাড়া অন্য কোন নামের প্রস্তাব অধ্যক্ষ পদের জন্য শেষ পর্যন্ত না থাকায় শ্রীদাস সর্বসম্মতিক্রমে এই পদের জন্য নির্বাচিত হয়েছেন৷
শুক্রবার দ্বাদশ ত্রিপুরা বিধানসভার প্রথম অধিবেশনের কাজ শুরু হলে প্রোটেম স্পিকার রতন চক্রবর্তী অধ্যক্ষ নির্বাচন পর্ব পরিচালনা করেন৷ প্রোটেম স্পিকার সভায় জানান, অধ্যক্ষ পদের জন্য মোট চারটি প্রস্তাব এসেছিল৷ অধ্যক্ষ পদে বিধায়ক রেবতি মোহনের দাসের নামে প্রথম প্রস্তাবটি করেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং এই প্রস্তাব সমর্থন করেন উপ-মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা৷ দ্বিতীয় প্রস্তাবটি করেন রাজস্ব মন্ত্রী এনসি দেববর্মা এবং এই প্রস্তাবের সমর্থন করেন উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া৷ তৃতীয় প্রস্তাবটি করেন শিক্ষা মন্ত্রী রতন লাল নাথ এবং এই প্রস্তাবের সমর্থন করেন পরিবহন মন্ত্রী প্রণজিৎ সিংহ রায়৷ এছাড়া অধ্যক্ষ পদে বিধায়ক ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মার নামে প্রস্তাব দেন বিধায়ক প্রশান্ত দেববর্মা এবং এই প্রস্তাব সমর্থন করেন বিধায়ক বিষকেতু দেববর্মা৷
এদিন সভায় প্রোটেম স্পিকার জানান, অধ্যক্ষ পদে ধীরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মার নামে প্রস্তাবটি প্রত্যাহার করা হয়েছে৷ তাই, সভায় শিক্ষা তথা সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী রতনলাল নাথ অধ্যক্ষ পদের জন্য রেবতী মোহন দাসের নাম প্রস্তাব করেন৷ সরকার পক্ষের মুখ্য সচেতক কল্যাণী রায় এই প্রস্তাব সমর্থন করেন৷
সংসদীয় রীতি অনুযায়ী নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকে তাঁর আসনে নিয়ে যান হাউসের নেতা এবং বিরোধী দলনেতা৷ সে অনুযায়ী হাউসের নেতা বিপ্লব দেব এবং বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার নবনিযুক্ত অধ্যক্ষ রেবতি মোহন দাসকে তাঁর আসনে নিয়ে যান৷ সঙ্গে ছিলেন রাজস্ব মন্ত্রী এনসি দেববর্মা এবং উপজাতি কল্যাণ মন্ত্রী মেবার কুমার জমাতিয়া৷
এদিন অধ্যক্ষ পদের দায়িত্ব গ্রহণ করে রেবতী মোহন দাস সবার প্রতি সমান দৃষ্টি নিয়ে সভা পরিচালনা করার আশ্বাস দিয়েছেন৷ সভার মর্যাদা রক্ষার ক্ষেত্রে তিনি সচেষ্ট থাকবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়ে তিনি সভার কাজ পরিচালনার ক্ষেত্রে শাসক বিরোধী সব পক্ষের সহযোগিতা চেয়েছেন৷
নবনিযুক্ত অধ্যক্ষকে আন্তরিক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব বলেন, আইন সভা হল গণতন্ত্রের মন্দির৷ এই মন্দিরের পুজারী হলেন অধ্যক্ষ৷ বিধানসভায় রাজ্যের সার্বিক স্বার্থ নিয়ে আলোচনা হবে৷ বিধানসভার অধিবেশন মসৃনভাবে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে শাসক দলের পক্ষ থেকে সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি আশ্বাস দিয়েছেন৷ অধ্যক্ষ নিরপেক্ষ মনোভাব নিয়ে সভার কাজ পরিচালনা করবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন৷ নতুন অধ্যক্ষকে স্বাগত জানিয়ে বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সভা পরিচালনার ক্ষেত্রে যে অনুসৃত নিয়ম বিধি রয়েছে তাকে অনুসরণ করে যথাযথ পরিবেশ বজার রাখার ক্ষেত্রে অধ্যক্ষ যোগ্য ভূমিকা নেবেন বলে আশা প্রকাশ করেছেন৷ সভা পরিচালনার ক্ষেত্রে বিরোধীরা গঠনমূলক সহযোগিতা করবেন বলে তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন৷
এদিকে, দ্বাদশ ত্রিপুরা বিধানসভার সরকারী মুখ্য সচেতক হিসেবে মনোনীত হয়েছেন বিধায়ক কল্যাণী রায়৷ পাশাপাশি বিধানসভার সদস্য মানিক সরকার দ্বাদশ ত্রিপুরা বিধানসভায় সিপিআইএম দলের পরিষদীয় নেতা মনোনীত হয়েছেন৷ তাছাড়াও দ্বাদশ ত্রিপুরা বিধানসভায় সিপিআই(এম) দলের ডেপুটি লিডার ও সচেতক মনোনীত হয়েছেন বিধানসভার সদস্য যথাক্রমে বাদল চৌধুরী ও তপন চক্রবর্তী৷
এদিন দ্বাদশ ত্রিপুরা বিধানসভার বিজনেস এডভাইজারি কমিটিও গঠিত হয়েছে৷ কমিটির চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ রেবতি মোহন দাস সহ অন্যান্য সদস্যরা হলেন, উপাধ্যক্ষ, যীষ্ণু দেববর্মা, রতন লাল নাথ, সুদীপ রায় বর্মন, নরেন্দ্র চন্দ্র দেববর্মা, কল্যাণী রায়, তপন চক্রবর্তী এবং সুধন দাস৷

