নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ ফ্রেব্রুয়ারি৷৷ ভোটের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসতেই রাজনীতির পারদ উর্ধমুখী৷ ১৮’র নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু লড়াই জমে উঠেছে৷ ১৩’র নির্বাচনে মূল প্রতিপক্ষ ছিল শাসক দলের কংগ্রেস৷ রাজনীতির পালাবদলের হাওয়ায় নয়া সমীকরণ উস্কে দিয়েছে ভারতীয় জনতা পাটি৷ পরিবর্তনের দমকা হাওয়া নিজেদের শিবিরে তোলে নিয়ে ২৪ বছরের বামদূর্গ উৎখাত করতে গণতান্ত্রিকভাবে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সারা দেশের মধ্যে দল ভাঙ্গা গড়ার খেলায় তৎপর বিজেপি’র নেতৃত্বরা পাখীর চোখ গেড়েছেন ১০ মজলিশপুর কেন্দ্রটিতে৷ শাসক দলের মনোনীত প্রার্থী রাজ্য মন্ত্রীসভার গুরুত্বপূর্ণ একাধিক দপ্তরের মন্ত্রী মানিক দে৷ বিজেপি দলের টিকিটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন যুবনেতা সুশান্ত চৌধুরী৷ কংগ্রেস ট্রামকার্ড হিসাবে ব্যবহার করছেন প্রার্থী হিসাবে এন এস ইউ আইর প্রাক্তন স্টেট কোন অর্ডিনেটর তথা যুবনেতা রাজীপ গোপ৷ গত নির্বাচনে ২৯২৯ ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন শাসক দলের প্রার্থী মানিক দে৷
জাতীয় রাজনীতিতে অন্যতম আলোচ্য বিষয় ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন৷ সারা দেশে কমিউনিস্ট আন্দোলনের রুগ্ণ অবস্থা৷ ক্ষুদ্র রাজ্য ত্রিপুরার ২৪ বছরের বামদূর্গ উৎখাতে বিজেপি’র কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব পুরো শক্তি নিয়ে ঝাপিয়েছেন৷ স্বাধীনত্তোর দেশে তৎকালীন ভারতের প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর পর কেউ প্রথম এমনভাবে মাঠে নেমেছে? ১৪’র লোকসভা নির্বাচন শেষে মোদী ম্যাজিকে ১৯টি রাজ্য বিজেপি’র দখলে৷ ২০ তম রাজ্য হিসাবে ত্রিপুরা দখল করতে কসরত চালাচ্ছে৷ বামফ্রন্ট অষ্টম বামফ্রন্ট সরকার গঠন করে জাতীয় রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিকতা ধরে রাখতে ঝাপিয়েছে৷ অন্যদিকে কংগ্রেস দলও হারানো জমি পুনরুদ্ধার করতে মাঠে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে৷
১০ মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রটিতে ৫৭টি বুথে জনসংযোগ স্থাপনে বিরোধী শিবির থেকে এককদম এগিয়ে রয়েছে বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থীরা৷ মজলিশপুরে দীর্ঘদিনের শান্তি-সম্প্রীতি ও উন্নয়নের জন্য সাম্প্রদায়িক দল বিজেপি’কে বয়কট করবেন গণদেবতারা৷ ভোট প্রচারে গিয়ে এমনটাই দাবী করেছেন বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী তথা অন্যতম মন্ত্রী মানিক দে৷ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি বহিরাগত দলত্যাগী, জনবর্জিত, যুবা বিদ্বেষী প্রার্থী দিয়ে প্রচার করলেও কোন লাভ হবেনা বলে দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন৷ ১৩’র নির্বাচনে কংগ্রেস প্রার্থীকে ২৯২৯ ভোটের ব্যবধান রেখে জয়ের মার্জিন দ্বিগুন বাড়বে, দাবী করেছেন মানিক দে৷
কংগ্রেস মনোনীত প্রার্থী রাজীপ গোপ ১৩’র জয় ও পরাজয়ের ফ্যাক্টর কমিয়ে আনতে মাঠঘাট চষে বেড়াচ্ছেন৷ গত নির্বাচনে কংগ্রেসের বিজিত প্রার্থী বিজেপি’তে মিশে গিয়েছেন৷ দলের ভাঙ্গন ও বিজেপি’র উত্থান রোধ করে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে নির্বাচনী লড়াইকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে নিয়েছেন বলে দাবী করেছেন রাজীপ গোপ৷ ৬০ মাস জনগনের সেবা করার জন্য গণদেবতাদের আহ্বান জানিয়েছেন রাজীপ গোপ৷
রাজ্যের লড়াকু যুবনেতা সুশান্ত চৌধুরী বামফ্রন্ট মনোনীত প্রার্থী তথা মন্ত্রী মানিক দে’র বিরুদ্ধে লড়াই করতে নেমে জনগনের সাড়া পাচ্ছেন৷ সম্প্রতি ৫৭ টি বুথে ব্যাপক ভোটে জয়ী হওয়ার জন্য জনসংযোগ সেরে নিয়েছেন৷ ৪৫,৫৫৫ জন গনদেবতারা ভাজপাকে সুযোগ দেবেন, ভোট প্রচারে গিয়ে আত্মসন্তোষ ব্যক্ত করেছেন বিজেপি’র প্রার্থী সুশান্ত চৌধুরী৷
অবাম ভোট বিভাজন মজলিশপুর বিধানসভা কেন্দ্রের জয়ের বড় ফ্যাক্টর৷ গত নির্বাচনের তুলনায় নতুন ভোটের আনুমানিক ৩ হাজার বৃদ্ধি পেয়েছে৷ অবাম শিবিরের দুই যুবনেতা এবং শাসক দলের পোড় খাওয়া নেতা তথা মন্ত্রীর লড়াইয়ে শেষ হাসি কার? চলছে রাজনৈতিক মহলে চুলচেরা বিশ্লেষণ৷