নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২০ জানুয়ারি৷৷ বিজেপিকে আটকাতে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সাথে জোট চাইছে সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি৷ আপাতত পাখির চোখ ২০১৯ সালের লোকসভা ভোট৷ তাই নির্বাচনী বৈতরণী পার করার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সাথে জোটের পক্ষে জোর সওয়াল করল সিপিএম কেন্দ্রীয় কমিটি৷
কিন্তু, তার আগে নিজেদের ক্ষমতা ধরে রাখার লক্ষ্যে ত্রিপুরার বিধানসভা ভোটকে ওয়ার্মআপ ম্যাচ হিসেবে নির্বাচনের ময়দানে নামতে চাইছে সিপিএম৷ শনিবার কলকাতায় দলের কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে অধিকাংশ সদস্যই এনিয়ে সরব হয়েছেন৷ শুধু সিপিএমের রাজ্য নেতৃবৃন্দ এই জোট নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারেননি বলে সূত্রের খবর৷ কারণ, ধর্মনিরপেক্ষ জোটে প্রথম সারিতে যেহেতু কংগ্রেসও রয়েছে, ফলে ত্রিপুরার সিপিএম নেতৃবৃন্দ আসন্ন নির্বাচনকে ঘিরে এই বিষয়টি নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন৷
কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে পারেননি কেরলে সিপিএমের দাপুটে নেতা ভি এস অচ্যুতানন্দন৷ কিন্তু তিনি কেন্দ্রীয় কমিটিকে এক ইমেল বার্তায় জোট নিয়ে প্রস্তাব রেখেছেন৷ তিনি লিখেছেন, বিজেপিকে আটকাতে সিপিএম যাতে দেশের সমস্ত ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলির সাথে নির্বাচনী জোটে যায় সেজন্য কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে সদস্যদের একমত হওয়া উচিত৷ ঐ মেইলে তিনি কংগ্রেসকে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তি হিসেবে উল্লেখ করেছেন৷ অচ্যুতানন্দনের এই মেইলের পর বিষয়টি নিয়ে কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যরা সরব হন৷
সিপিএম সাধারণ সম্পাদক আজ বৈঠকের শুরুতেই বলেন, হায়দরাবাদে আগামী পার্টি কংগ্রেসের আগে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকে ধর্মনিরপেক্ষ জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া প্রয়োজন৷ কারণ, ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচন পার্টি কংগ্রেসের আগেই অনুষ্ঠিত হবে৷ তাই সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে গেলে ত্রিপুরায় ভোটের রণকৌশল ঠিক করতে অসুবিধা হবে৷
উল্লেখ্য, আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারী রাজ্যে বিধানসভা ভোট৷ ত্রিপুরা ছাড়া কেলারায় বামেরা ক্ষমতায় রয়েছে৷ কিন্তু, দুটি রাজ্যেই বিজেপি তাদের সংগঠন শক্তিশালি করতে উঠেপড়ে লেগেছে৷ ফলে, ধর্মনিরপেক্ষ দল গুলির সাথে জোট গঠনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যদের একটা বড় অংশ একমত হলেও, নীতিগত প্রশ্ণে সমস্যায় পড়েছেন রাজ্য নেতৃবৃন্দ৷ স্বাভাবিকভাবে, ২০১৮ ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচন এবং ২০১৯ লোকসভা নির্বাচন সিপিএমের নীতিগত অবস্থান নির্ণয়ে কেন্দ্রীয় কমিটি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে৷
কারণ, ধর্মনিরপেক্ষ জোট গঠনে কংগ্রেসের হাত ধরা হলে কেন্দ্রীয় কমিটির এই সিদ্ধান্ত নিশ্চিতভাবে ত্রিপুরা বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য নেতৃত্বদের সমস্যায় ফেলবে৷ সূত্রের খবর, রবিবার কেন্দ্রীয় কমিটির অন্তিম দিনের বৈঠকে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে৷