মুম্বই, ৩ জানুয়ারি (হি.স.) : ভারিপা বহুজন মহাসঙ্ঘে নেতা তথা বি আর আম্বেডকরের নাতি প্রকাশ আম্বেডকরের ডাকা মহারাষ্ট্র বনধের জেরে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। ভিমা-কোরেগাঁও হিংসার প্রেক্ষিতে বুধবার এই বনধ ডাকা হয়। পুনের ভিমা-কোরেগাঁও গ্রামসহ মহারাষ্ট্রের অন্যান্য জায়গায় জাতি হিংসার বেড়ে চলার প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত।
বনধের জেরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে রাজ্যের মুম্বই, থানে, পুনেসহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শহরে মোতায়ন করা হয়েছে বিশাল পুলিশবাহিনী। থানেতে রেল অবরোধ করার চেষ্টা করে আন্দোলনকারীরা। তার জন্য বিপর্যস্ত হয় সার্বিক রেল পরিষেবা। কিন্তু রেল পুলিশের হস্তক্ষেপে কিছুক্ষণের মধ্যেই অবরোধ উঠে যায়। এদিকে থানেতে আগামী ৪ জানুয়ারির মধ্যরাত পর্যন্ত জারি করা থাকবে কারফিউ। অন্যদিকে মুম্বই পুলিশের পক্ষ থেকে জনসাধারণ কাছে কোনও রকমের গুজবে কান না দেওয়ার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। জনসাধারণের স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে মুম্বইয়ের বিখ্যাত ডাব্বাওয়ালারাও নিজেদের পরিষেবা এদিন বন্ধ রাখে।
বিক্ষোভকারীরা এদিন রাজ্যের ইস্টার্ন এক্সপ্রেস হাইওয়ে, নাগপুরের শতাব্দী স্কোয়্যার, থানের লালবাহাদুর শাস্ত্রী রোডসহ রাজ্যের একাধিক প্রধান সড়ক অবরোধ করে। তার ফলে তীব্র যানজট তৈরি হয়। থানেতে দুইটি বাস এবং একটি অটো রিক্সোতে ভাঙচূড় করা হয়। এই ঘটনায় আহত ৪ জন যাত্রী। অন্যদিকে নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে রাজধানী দিল্লিতে অবস্থিত মহারাষ্ট্র সদনে। বনধ সমর্থকারীরা রাজ্যের একাধিক দোকান জোর করে বন্ধ করে দিয়েছে। মুম্বইসহ রাজ্যের অন্যান্য প্রধান শহ বনধের জেরে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, আজ থেকে ২০০ বছর আগে অর্থাৎ ১৮১৮ সালে মহারাষ্ট্রের ভিমা-কোরেগাঁও গ্রামে ব্রিটিশদের সঙ্গে মারাঠাদের যুদ্ধ হয়েছিল। সেই সময় ব্রিটিশ বাহিনীতে অনেক দলিতরাও ছিল। যুদ্ধে মারাঠারা হেরে গিয়েছিল। বিষয়টিকে দলিতরা উচ্চবর্ণের প্রতি নিজেদের জয়লাভ হিসেবে দেখে। তাই প্রতি বছর ভিমা-কোরেগাঁও গ্রামে বিশাল উৎসবের উদযাপন করা হয়। বিভিন্ন জায়গায় থেকে এই উৎসবে যোগ দিতে বহু দলিতরা আসেন। পয়লা জানুয়ারি উৎসব উদযাপন করা ঘিরে জাতি সংঘর্ষ শুরু হয় গোটা মহারাষ্ট্র জুড়ে। এই ঘটনা রাজনৈতিক বাক যুদ্ধ চরমে উঠেছে।