নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ জানুয়ারি৷৷ সুস্থ একটা পরিমন্ডল যা দেহকে রোগমুক্ত রাখার জন্য জরুরী তা অসুস্থ হয়ে পড়েছে৷ এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে ভূমিকা নিতে হবে৷ আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরা আয়োজিত ‘আমার ত্রিপুরা ঃ সুস্থ ত্রিপুরা’ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার একথা বলেন৷ নতুন বছরের সন্ধ্যায় সবাইকে স্বাগত জানিয়ে তিনি বলেন, সামগ্রিক দিক দিয়ে দেখতে গেলে গত বছরটা কিন্তু আমাদের সবার জন্য খুব একটা ভাল যায়নি৷ জিনিষ পত্রের দাম বাড়ার বিষয়টি এখন নিত্যদিনের বিষয় হয়ে উঠেছে৷ অস্বাভাবিক হারে ভোগ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ঘটেছে৷ এই সময়ে টাকার দাম যে হারে কমেছে তা এর আগে এমন কখনো ঘটেনি৷ শুধু গত বছরই প্রায় পনের হাজারের মত কৃষক আত্মহত্যা করেছেন৷ গ্রামের কৃষক দলে দলে খাদ্যের সন্ধানে শহরমুখী হচ্ছেন৷ কৃষি এখন লাভজনক নয়৷ বছরে দুই কোটি বেকারকে চাকুরী দেবার না করে সবাইকে ঠকানো হয়েছে৷ কাজ তৈরী হবার পরিবর্তে উল্টো কাজ চলে যাচ্ছে৷ এক সমীক্ষায় দেকা েেছ যে প্রায় ৯৪ লক্ষ কর্মরত লোক কাজ হারিয়েছেন৷ নতুন পদ সৃষ্টি হচ্ছেনা৷ তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে প্রতি বছর ৬০-৭০ হাজার ছেলে মেয়ে কাজ হারাচ্ছে৷ সরকার জনস্বার্থবাহী সমস্ত দায়িত্ব থেকে সরে আসতে চাইছে৷ তাদের সমস্ত নীতিই পরিচালিত হচ্ছে মুনাফার দিকে লক্ষ্য রেখে৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, মানব সম্পদ উন্নয়নের জন্য দুটি প্রধান শর্তই হচ্ছে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য৷ অথচ দুটি ক্ষেত্রেকেই ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেবার চেষ্টা হচ্ছে৷ মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ণ ৯০ শতাংশ মানুষের স্বার্থ ভুলে ১০ শতাংশ মানুষের স্বার্থে চলার চেষ্টা হচ্ছে – এ কেমন দেশ? সুখের কথা এসবের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হচ্ছে৷ মানুষ ঐক্যবদ্ধ হচ্ছেন৷ রাষ্ট্রের চরিত্র বদলে দেবার যে চেষ্টা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে সবাইকেই সোচ্চার হবার জন্য তিনি আহ্বান জানিয়েছেন৷
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিশিষ্ট হেপাটোলজিস্ট ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী বলেন, একটা অসহনীয় অবস্থার মধ্য দিয়ে গোটা দেস চলেছে৷ সুস্থতার সংজ্ঞাই পাল্টে দেবার চেষ্টা হচ্ছে৷ দেশের সরকার মানুষের চিকিৎসার দায়িত্ব নিজের হাতে রাখতে না পারলে এ দেশ কোনদিন সুস্থ থাকতে পারবেনা৷ স্বাস্থ্য পরিষেবাৈর মূল দায়িত্ব প্রধানত ঃ সরকারকেই নিতে হবে৷
হৃদরোগ কিভাবে ঠেকানো যায় সে সম্পর্কে সভায় আলোচনা করেন বিশিষ্ট কার্ডিওলডিষ্ট ডাঃ অজিত রঞ্জন চৌধুরী৷ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন হেপাটাইটিস ফাউন্ডেশন অব ত্রিপুরার সভাপতি ডাঃ প্রদীপ ভৌমিক৷ অনুষ্ঠানে চিকিৎসা ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য রাজ্যের তুণ চিকিৎসক ডাঃ শুভাশিস দে-কে ‘ডক্টর অব দি ইয়ার’ পুরস্কারে পুরসৃকত করা হয়৷ তার হাতে স্মারক উপরার এবং মানপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ অনুষ্ঠানে ডাঃ অভিজিৎ চৌধুরী এবং ডাঃ অরূপ দাস বিশ্বাস রোগীদের বিভিন্ন প্রশ্ণের উত্তর দেন৷