নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ অক্টোবর৷৷ রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মান কাজে নিম্ন মানের নির্মান সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে৷ ফলে, নির্মিয়মান ঘরের আয়ু কম হবে৷ অন্যান্য রাজ্যে যে নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহৃত হয়েছে, তাতে ঘরের আয়ু অনেক বেশি হবে৷ বৃহস্পতিবার আগরতলায় সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ড বীরেন্দ্র কুমার৷ তাতে, চটে লাল হয়েছেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মানিক দে৷ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর অভিযোগ পত্রপাঠ খারিজ করে দিয়েছেন তিনি৷ তাঁর দাবি, রাজ্যে সর্বোচ্চ গুণমানের নির্মান সামগ্রী প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর বানাতে ব্যবহৃত হয়েছে৷ তাঁর কটাক্ষ, রাজ্যে এসে রাজনীতির উদ্দেশ্যে যেকোন কথা বললেই হবেনা৷ তাতে, সারমর্ম থাকতে হবে৷
বুধবার রাজ্য সফরে এসেছেন কেন্দ্রীয় শিশু ও মহিলা কল্যাণ মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী ড বীরেন্দ্র কুমার৷ রাজ্যে এসেই গতকাল তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরের আধিকারিকদের সাথে বৈঠক করেছেন৷ তাতে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যে শিশু ও মহিলা কল্যাণে কি ধরনের কাজ হচ্ছে তার বিস্তারিত খোঁজ খবর নিয়েছেন৷ এবিষয়ে বৃহস্পতিবার বিজেপি রাজ্য মুখ্য কার্যালয়ে সাংবাদিক সম্মেলনে তিনি অকপটে বলেন, শিশু ও মহিলা কল্যাণে কেন্দ্রীয় প্রকল্প রূপায়নে রাজ্যের কাজকর্মে সন্তুষ্ট নন৷ তিনি জানান, শিশু ও মহিলা কল্যাণে সমস্ত প্রকল্পের কাজকর্মের নতুন করে সমীক্ষা করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন৷ এদিন তিনি বলেন, বিশেষ করে অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রে শিশুদের জন্য বরাদ্দ খাবার ঠিকমত দেওয়া হচ্ছে না৷ তিনি জানান, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রে আগে প্রতিদিন মাথাপিছু প্রতি শিশুর জন্য ৬ টাকা বরাদ্দ ছিল৷ এখন তা বাড়িয়ে ৮ টাকা করা হয়েছে৷ কিন্তু দেখাযাচ্ছে, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রগুলিতে প্রাতঃরাশে শিশুদের কেবলমাত্র দুটি করে বিসুকট দেওয়া হচ্ছে৷ অন্যান্য রাজ্যে নানারকম সুস্বাদু প্রাতঃরাশ শিশুদের দেওয়া হয়৷ তিনি জানিয়েছেন, অঙ্গনওয়ারী কেন্দ্রে প্রতিদিন শিশুদের সুস্বাদু প্রাতঃরাশ দেওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷
কথা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণে অত্যন্ত নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে৷ তাতে, ঐ সমস্ত ঘরের আয়ু অনেক কম হবে৷ তাঁর দাবি, অন্যান্য রাজ্যে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণে গুণমান সম্পন্ন নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহার হচ্ছে৷ ফলে, ঐ সমস্ত ঘরের আয়ু অনেক বেশি হবে৷ তিনি বলেন, নিয়ম অনুযায়ী কোন ঘরে টিন ব্যবহার করার কথা নয়৷ কিন্তু, এরাজ্যে টিনের ছাউনি দিয়ে ঘর নির্মাণ হচ্ছে৷ তাতে, জানতে চাওয়া হয়, নগরোন্নয়ন মন্ত্রকের প্রকাশিত পুস্তিকায় প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ত্রিপুরাকে মডেল রাজ্য হিসাবে কিভাবে দেখানো হয়েছে৷ এর জবাবে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কোন উত্তর না দিলেও বিজেপি রাজ্য সভাপতি বিপ্লব দেব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় সুবিধাভোগী চিহ্ণিতকরণে ত্রিপুরা অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় অনেক এগিয়ে রয়েছে৷ কিন্তু, প্রকল্প রূপায়নে সাফল্য আছে এমন কোন সার্টিফিকেট কেন্দ্রীয় সরকার এখনো রাজ্য সরকারকে দেয়নি৷
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা নিয়ে রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অভিযোগের আঙ্গুল তোলায় চটে লাল হয়েছেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী মানিক দে৷ এদিন মহাকরণে এবিষয়ে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী মিথ্যা কথা বলছেন৷ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণে ত্রিপুরা গোটা দেশের মধ্যে সেরা৷ এখানে ঘর নির্মাণে সর্বোচ্চ গুণমান সম্পন্ন সামগ্রী ব্যবহার করা হচ্ছে৷ তিনি জানান, এখন পর্যন্ত বত্রিশবার প্রকল্পের কাজের খবর নিয়েছে কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন মন্ত্রক৷ মন্ত্রকের বিশেষ টিম রাজ্যে এসে ঘর নির্মাণের কাজ দেখে গেছেন৷ বিভিন্ন স্থানে তাঁরা ঘুরে দেখেছেন৷ মানিক দে বলেন, ঘর নির্মাণের স্ববিস্তার বিবরণি দিল্লিতে পাঠানো হয়েছিল৷ তাঁদের অনুমতি ক্রমে সেই মোতাবেক ঘর নির্মাণ করা হচ্ছে৷ নির্দিষ্ট সময় অন্তর প্রত্যেক ঘর নির্মাণের জিওট্যাগিং করা হয়েছে৷ তাতে, গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী এদিন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উদ্দেশ্যে কটাক্ষের সুরে বলেন, যে কোন কথা রাজ্যে এসে রাজনীতির জন্য বললেই হবেনা৷ সেই কথায় সারমর্ম থাকতে হবে৷ মানিক দে চ্যালেঞ্জ করে বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় ঘর নির্মাণে যদি কোন ত্রুটি হয়ে থাকে তাহলে কেন্দ্রীয় টিম এসে তা চিহ্ণিত করে দেখাক৷ রাজ্য সরকারের তাতে কোন আপত্তি থাকবেনা৷
2017-10-27

