নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৬ অক্টোবর৷৷ সিপিএমের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী বিজেপি যে কর্মসূচী নিয়েছে তার বিরুদ্ধে ৯ অক্টোবর রাজ্যেও আন্দোলন সংগঠিত করা হবে৷ বিজেপি আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে কর্মসূচী ঘোষণা করেছে বলেও সিপিএম রাজ্য কমিটি মনে করে৷ শুক্রবার আগরতলায় এক সাংবাদিক সম্মেলনে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বিজন ধর বলেন, কেরালার সিপিএমের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের মিথ্যা অভিযোগ এনে পদযাত্রা সংগঠিত করা হচ্ছে৷ দিল্লীতে পার্টির সর্বভারতীয় কার্য্যালয়ের সামনে প্রায় প্রতিদিন ধর্না সংগঠিত করা হচ্ছে৷ এই ধরনের ঘটনা কিংবা আন্দোলন দেশে কখনই হয়নি৷ আগ্রাসী মনোভাব নিয়ে বিজেপি এসব কাজ করছে৷
তিনি আরও বলেন, বিজেপি এসমস্ত কার্যকলাপে সিপিএম অবশ্য গর্ব অনুভব করে কারণ সিপিএম একমাত্র দল যারা স্বৈরাচারী উদারীকরণের বিরুদ্ধে জনমত তৈরী করছে৷ আগামী দিনে এই আন্দোলন আরও তীব্র হবে৷ হত্যা ও অন্যান্য অপরাধে অভিযুক্ত বিজেপির নেতারা কেরালায় তাদের আন্দোলনের নেতৃত্ব দিচ্ছেন৷ সারা দেশেই এইসবের বিরুদ্ধে ৯ অক্টোবর আন্দোলন সংগঠিত করা হবে৷ এর অঙ্গ হিসেবে রাজ্যেও বিস্তর কর্মসূচী হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান বিজন ধর৷
এদিকে দীর্ঘ সময় বাদে হিংসা নিয়ে মুখ খুলল সিপিএম৷ রাজ্যে হিংসার বাতাবরণ সৃষ্টির চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে সিপিএম৷ যদিও সচেতন নাগরকি এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলছে বলে মনে করেন সিপিএম রাজ্য সম্পাদক৷ তিনি বলেন, দুর্গোৎসব এখন পর্যন্ত মোটামুটি ভাল ভাবেই কেটেছে৷ যদিও বিদ্বেষের মনোভাব এবং সংঘাত সৃষ্টির চেষ্টা হয়েছে৷ কিন্তু, সুরক্ষা কর্মীরা যথেষ্ট সচেতন থেকে এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়েছে৷ রাজ্যের সাংবাদিক ও বুদ্ধিজীবীরাও এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে৷ দুর্গাপূজার আগে গত ১৯ সেপ্ঢেম্বর থেকেই রাজ্যের নানা স্থানে আইপিএফটি সংঘর্ষ শুরু করে৷ জাতি উপজাতির ঐক্য সংহতি নষ্ট করার চেষ্টা হয়৷ এই ধরণের পরিস্থিতি ইতিপূর্বে রাজ্যে কখনো হয়নি দাবি করে বিজনবাবু বলেন ষড়যন্ত্র এখনো চলছে এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থেকে এর মোকাবিলা করার আহ্বান জানান তিনি৷
অন্যদিকে, সাংবাদিক শান্তনু ভৌমিক হত্যাকান্ডে সিবিআই তদন্ত নাকচ করল সিপিএম৷ একই সঙ্গে এই বিষয়ে রাজ্য সরকারের অবস্থানকে স্বাগত জানিয়েছে দল৷ যদিও সিপিএম আজ স্বীকার করেছে পুলিশের সামনেই শান্তনু ভৌমিককে হত্যা করা হযেছে৷ সিপিএম রাজ্য সম্পাদক বলেন, সাংবাদিক হত্যাকান্ডের ঘটনায় দল উদ্বিগ্ণ৷ কিন্তু, যারা খুন করেছে এবং যারা এ হত্যাকান্ডের পেছনে মদত জুগিয়েছে তারা সকলেই সিবিআই তদন্ত চাইছে৷ তারা আসামী ধরতে বাধা দিচ্ছে৷ দোষীদের গ্রেপ্তার করার বিষয়ে অগণতান্ত্রিক বলছে৷ এটা নেতিবাচক রাজনীতি৷ বিভিন্ন প্রশ্ণের উত্তরে বিজনবাবু বলেন, এন সি দেববর্মার নেতৃত্বে আইপিএফটি শান্তনু ভৌমিককে হত্যা করেছে৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে ছিল৷ পুলিশের গাফিলতি থাকলে তা অবশ্যই রাজ্য সরকার দেখবে৷ তিনি স্বীকার করেন জিপসির পাটাতনে শান্তনুকে শুইয়ে হাসপাতালে আনার ঘটনা অমানবিক৷ তিনি বলেন, এসব বিষয় তদন্তে আসা উচিৎ৷ শান্তনু ভৌমিক প্রকৃত সাংবাদিকতা করতে শান্তি সম্প্রীতির পক্ষে সেখানে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন বিজন ধর৷ সাংবাদিকদের এক প্রশ্ণের জবাবে বিজন ধর বলেন, পুলিশ সাধারণত গণতান্ত্রিক আন্দোলনে অস্ত্র নিয়ে হাজির হয় না৷ এতদিন পুলিশ এবং অন্যান্য সুরক্ষা কর্মীরা লাঠি নিয়ে আইপিএফটির কর্মসূচিতে উপস্থিত থাকত কিন্তু, পরবর্তীতে পরিস্থিতিতে তাদের রাইফেল দেওয়ার কথাও ভাবা হচ্ছে৷ তিনি আশা করেন দ্রুত তদন্ত শেষ হবে এবং দোষীরা উপযুক্ত শাস্তি পাবে৷ ১৯৮০ সালে যেভাবে জাতি দাঙ্গা বাধানো হয়েছিল সেই ধরনের পরিবেশ এখন নেই৷ তবে এ ধরনের চেষ্টা চলছে বলে দাবি করেন বিজন ধর৷
2017-10-07

