আগরতলা, ১ অক্টোবর (হি.স.) : বাঙ্গালী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। এই উপলক্ষে বহু কোটি টাকা খরচ হয়েছে এই ছোট্ট পাহাড় ঘেরা ছোট্ট রাজ্য ত্রিপুরায়। বিশেষকরে রাজ্যের রাজধানী আগরতলা শহরে। আর রঙ-বেরঙের ঝাড়বাতি আর বর্ণিল আলোকসজ্জায় অন্য এক আগরতলার রূপে মুগ্ধ প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পর্যটকরা।
বাংলাদেশের শুধু হিন্দুই নয় বহু মুসলমান ধর্মাবলম্বীও এসেছেন ত্রিপুরায় পূজা দেখতে।দর্শনার্থীদের মধ্যে ভারতীয়দের তুলনায় বাংলাদেশিদের সংখ্যা নিতান্তই যে কম ছিল তা নয়। বিরূপ আবহাওয়া উপেক্ষা করে এই রাজ্যে দর্শনার্থীরা ঘড় থেকে কম বের হলেও বাংলাদেশি পর্যটকদের বৃষ্টি ভিজেই ঘুরতে দেখা গেছে।
এই কদিনে গড়ে আখাউড়া-আগরতলা আন্তর্জাতিক চেকপোস্ট দিয়ে প্রতিদিন দেড় হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি পর্যটক আগরতলা প্রবেশ করেছেন। পূজা উপলক্ষে পর্যটকদের এই ঢল অন্যসব সময়ের চেয়ে পাঁচ গুণ বেশি বলে জানিয়েছে ভারতীয় ইমিগ্রেশনের কর্মীরা।
বাংলাদেশি পর্যটক জীবন রায় বলেন, “দুই দেশের কাস্টমস্ আর ইমিগ্রেশনের ঝামেলা পেরিয়ে শুধুমাত্র পূজা দেখতেই আগরতলা এসেছি।এই খরচও হয়েছে। তাই বৃষ্টির জন্য পুজো দেখব না তা হয়না। এবার আগরতলাতেই পুষ্পাঞ্জলি দিয়েছি। আমাদের দেশের তুলনায় এখানকার পূজা মণ্ডপগুলো অনেক বেশি সুন্দর এবং ব্যয়্যবহুল। কয়েকদিন থেকেই তবে দেশে ফিরব”।
বাংলাদেশে মোবাইল ফোনের ব্যবসায়ী জুয়েল মিয়া জানান, “কয়েকজন বন্ধু মিলে গত বুধবার এসেছি পূজা দেখতে। অনেক ভালো লাগছে পূজামণ্ডপ দেখে। আসলেই এখানকার পূজা মণ্ডপগুলো যেভাবে সাজানো হয়েছে তাতে যে কারোরই নজর কাড়বে”।
আগরতলায় আজও স্ত্রী,পুত্র,কন্যাকে নিয়ে ঘুরছেন বাংলাদেশের কুমিল্লার রজনি মল্লিক। তিনি বলেন, “প্রতিবছরই পূজা দেখতে আগরতলায় আসার ইচ্ছা থাকে। কিন্তু হয়ে উঠে না। এবার সম্ভব হয়েছে। বৃষ্টিতে ভিজে ছোট সন্তানের জ্বর হয়েছিল। এখানেই ডাক্তার দেখিয়ে ওষুধ খাইয়ে এখন মোটামুটি ঠিক আছে। আরও ২ দিন থেকে দেশে ফিরব, আবার আসার ইচ্ছা নিয়ে”।
পুজোর গত চারদিনে সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত আগরতলা নগর নিগমের অধীন শান্তিপাড়া, জয়গুরু, কামান চৌমুহনি, দুর্গা চৌমুহনী, শংকর চৌমুহনি, কর্নেল চৌমুহনিসহ বেশ কয়েকটি এলাকার বিভিন্ন পূজা মণ্ডপগুলো ঘুরে দেখেছেন প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের পর্যকটরা।তারা তদের এই সফরে আনন্দে উদ্বেলিত। দশমীর পর আজও বহু বড় ক্লাব গুলোর প্রতিমা নিরঞ্জন হয়নি। দর্শনার্থীদের ভিড় থাকায় এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তাই প্রচুর বাংলাদেশী এখনও আগরতলায় ঘুরছেন।

