হাফলং (অসম), ১০ সেপ্টেম্বর, (হি.স) : চলতি বছরের ১৫ সেপ্টেম্বরের শেষের দিকে অথবা অক্টোবর থেকে আগরতলা-নয়াদিল্লি রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন চলাচলের সম্ভাবনা রয়েছে। এমনটাই ইঙ্গিত মিলেছে রেল সূত্রে। আগরতলা থেকে রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন শুরু হওয়ার জল্পনা বাড়িয়ে দিয়েছে উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের ওপেন লাইন শাখার জিএম চাহাতে রামের লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেললাইন পরিদর্শন।
গত শুক্রবার জিএম চাহাতে রামের দুদিনের হাফলং সফরে আসার কথা ছিল। কিন্তু বৃহস্পতিবার রাতেই উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের পক্ষ থেকে জিএম-এর দুদিনের হাফলং সফর বাতিলের কথা জানিয়ে আগামী ১৫ সেপ্টেম্বরের পর তিনি হাফলং সফরে আসতে পারেন বলে জানানো হয়। কিন্তু তার একদিন পরই তড়িঘড়ি করে শনিবার সন্ধ্যা ছয়টা নাগাদ জিএম চাহাতে রাম এবং ডিআরএম প্রমোদকুমার জৈন-সহ রেলের শীর্ষ কর্তারা হাফলং এসে উপস্থিত হন।
আজ সকাল নয়টা (৯-টা) নাগাদ জিএম এলজি স্পেশালে করে বদরপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হন। সেখান থেকে তাঁর আগরতলা যাওয়ার কথা। রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত আগরতলা থেকে আনন্দবিহার (দিল্লি) পর্যন্ত রাজধানী এক্সপ্রেস ট্রেন চলচল শুরু হওয়ার বিষয়টি খতিয়ে দেখতেই জিএম চাহাতে রামের লামডিং-শিলচর ব্রডগেজ রেলপথ পরিদর্শন।
এদিকে শনিবার সন্ধ্যায় মালিগাঁও থেকে এলজি স্পেশাল ট্রেনে নিউহাফলং স্টেশনে উপস্থিত হয়ে জিএম চাহাতে রাম এনসি হিলস্ ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরামের সভাপতি ডেভিড কেভম এবং ছাত্র সংগঠনটির প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হন। বৈঠকে তিনি বলেন হাফলং থেকে লামডিং পর্যন্ত হিলক্যুইন ট্রেন এখনই চালানো সম্ভব নয়। কারন নিউহাফলং স্টেশনে সে রকম সুযোগ-সুবিধা নেই। তাছাড়া, ডিমা হাসাও পাহাড়ি জেলায় এখনও বর্ষা চলছে। পাহাড়ের মানুষের সুবিধার্থে শিলচর থেকেই লামডিং পর্যন্ত হিলক্যুইন ট্রেন চালানো হবে, তবে এখনই সম্ভব নয়। এতে কিছুটা সময়ের প্রয়োজন। জিএম চাহাতে রাম এনসি হিলস্ ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরামের প্রতিনিধিদের আশ্বস্ত করে বলেন, আগামী শীতের মরশুমে হিলক্যুইন ট্রেন চলাচল শুরু করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে রেলবিভাগ।
এদিন শতবর্ষ প্রাচীন এবং পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্র মিটার গেজ রেলপথের সেতুগুলি যাতে তুলে ফেলা এবং সেগুলি যাতে নিলাম করা না হয়, সেই দাবি ছাত্র সংগঠনের প্রতিনিধিরা জিএম-এর কাছে রাখেন। সংগঠনর সভাপতি কেভমকে আশ্বস্ত করে জিএম বলেন, যদি তাই হয় তা হলে পাহাড়ের বাসিন্দাদের স্বার্থে এই মিটার গেজের সেতুগুলিকে তুলে ফেলা বা নিলাম করা হবে না। এক জিজ্ঞাসার উত্তরে জিএম বলেন, ইতিমধ্যে জমি অধিগ্রহণ বাবদ জিরাত ভ্যালু মিটিয়ে দিয়েছে রেলবিভাগ। তাই জমি অধিগ্রহণ বাবদ আর কোনও ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেবে না রেল কর্তৃপক্ষ। তবে ল্যান্ড ডেভেলপম্যান্ট বাবদ যে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার দাবি করেছে ছাত্র সংগঠনটি এ নিয়ে বলতে গিয়ে জিএম বলেন, এক্ষেত্রে জিএম-এর হাতে কার্যত কোনও ক্ষমতা নেই। এর জন্য রেলমন্ত্রকের অনুমোদন জরুরি।
এদিকে, জিএম আজ সকালে বদরপুরের উদ্দেশে রওয়ানা হলেও রেলের কিছু শীর্ষ কর্তা হাফলং থেকে যান। এই অফিসাররা রবিবার দুপুরে মিটার গেজের পরিত্যক্ত লোয়ার হাফলং স্টেশন পরিদর্শন করেছেন।
রেল সূত্রে যা খবর মিলেছে তাতে জানা গেছে, লোয়ার হাফলং স্টেশনে রেল কর্তৃপক্ষ রেলের একটি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও এফসিআই-এর ইয়ার্ড খোলার সিদ্ধান্ত প্রায় চূড়ান্ত করে ফেলেছে। জিএম-এর নির্দেশেই রেলের ওই অফিসারারা আজ পরিত্যক্ত লোয়ার হাফলং স্টেশন পরিদর্শন করেছেন।
2017-09-10