লখনউ, ২৫ আগস্ট (হি.স.): দলিতদের মন্দিরে প্রবেশের ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করলেন পুরোহিত। ঘটনাটিকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসন তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার।
জানা গিয়েছে, উত্তরপ্রদেশের হামিরপুর জেলার গাডাহা গ্রামের একটি হিন্দু মন্দিরের চত্বরে আগামী ১০দিনের জন্যে স্থানীয় বাসিন্দা দলিতদের প্রবেশাধিকার কেড়ে নিয়েছেন ওই মন্দিরের পুরোহিত। এই কয়েকদিন স্থানীয় রাম জানকী মন্দিরে রামায়ণ পাঠ হওয়ার কথা। রামায়ণ পাঠের আয়োজক উচ্চবর্ণের গ্রামবাসীরা। পুরোহিত ফরমান জারি করেছেন, রামায়ণ পাঠের দিনগুলিতে গ্রামবাসী দলিতরা যেন ঘর থেকেই বের না হন। কেননা তাঁরা অশুদ্ধ।
বিষয়টি জেলা প্রশাসনের নজরে আসার পরে ওই ফরমান প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে মন্দিরটির কর্তৃপক্ষ। তবে দলিতরা যাতে মন্দিরে প্রবেশ করতে না পারে, সেকারণে উচ্চবর্ণের লেঠেলরা লাঠি হাতে এখন মন্দির চত্বর পাহারা দিচ্ছেন।
মন্দিরের পুরোহিত কুনওয়ার বাহাদুর সিং নিজের জারি করা ওই ফরমানের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনিই মন্দিরে দলিতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করতে সাইনবোর্ড টাঙিয়েছিলেন। কুনওয়ার বাহাদুর সিংয়ের কথায়, দলিতরা মদমাংস খেয়ে অনেকসময়ে অশুদ্ধ অবস্থায় মন্দিরে প্রবেশ করে। তাতে মন্দির চত্বর অশুদ্ধ হয়। সেকারণেই অখণ্ড রামায়ণ পাঠের আগে তিনি এই ফরমান জারি করেছেন। তিনি যে কাজটা ভুল করেননি এর স্বপক্ষে যুক্তি খাড়া করিয়ে মন্দিরের পুরোহিত বলেছেন, এখানে বছরের পর বছর এই রীতিতেই চলছে। তিনি কেবলমাত্র ঐতিহ্য অনুসরণ করেছেন। তবে দলিতদের প্রার্থনায় কোনও বাধা নেই। মন্দির চত্বরের বাইরে দাঁড়িয়ে ওঁরাও উপাসনা করতে পারবেন।
গ্রামবাসী দলিতরা জানিয়েছেন, এইসব নিয়মকানুন নিয়ে তাঁদের কিছু করার নেই। বরং তাঁরা এসব নিজেদের জন্মগত দুর্ভাগ্য বলেই মনে করেন। এদিকে ফরমানের খবর জানাজানি হওয়ার পরে জেলা প্রশাসন একটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, দলিতদের মন্দিরে প্রবেশে বাধা দিয়ে অপরাধ করা হয়েছে। তদন্তের পরে প্রশাসন যথাযথ ব্যবস্থা নেবে।
2017-08-25

