নয়াদিল্লি, ৯ অগাস্ট (হি.স.) : আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এক নতুন ভারত গড়ার ডাক দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার লোকসভায় পালিত হল ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫ বছর পূর্তি | ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আজ সংসদে দেশবাসীর উদ্দেশে এই প্রতিশ্রুতির
আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী | পাশাপাশি সাম্প্রদায়িকতা, জাতপাত এবং দুর্নীতির সমস্যা থেকে দেশকে মুক্ত করার ডাক দেন প্রধানমন্ত্রী।
লোকসভায় ভারত ছাড়ো আন্দোলন নিয়ে বক্তৃতা দিতে গিয়ে এই দিনটিকে তাঁদের গর্বের দিন বলেও উল্লেখ করেন মোদী। ১৯৪২-এ মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে যাঁরা ভারত ছাড়ো আন্দোলনে যোগ দেন তাঁদের স্যালুট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “১৯৪২ সালে ভারতকে ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত করা ছিল সময়ের দাবি। ওই আন্দোলনের পাঁচ বছরের মধ্যে ব্রিটিশ শাসন থেকে স্বাধীনতা অর্জন করেছিল ভারত | ৭৫ বছর পর আজকের ইস্যু ভিন্ন। চলুন, আমরা ভারতকে দারিদ্র, নোংরা, দুর্নীতি, সন্ত্রাস, জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা থেকে মুক্ত করার শপথ | আগামী পাঁচ বছরে বিশ্বমঞ্চে এক নতুন ভারতের উদয় হবে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি হবে ২০২২ সালে। সেই সময় যেন সারা দুনিয়ার কাছে এক আদর্শ হিসেবে আবির্ভাব ঘটে ভারতের।
এদিন তিনি আরও বলেন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ইতিহাস যুবদের জানা উচিত। আর এই ইতিহাসকে ধরে রাখার সবরকম চেষ্টা করা হবে। এই আন্দোলনের সময় দেশের সব নাগরিকের মধ্যে মহাত্মা গান্ধীর ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ ডাক সঞ্চারিত হয়েছিল। আর এখন তাঁর সেই মন্ত্র কাজে লাগালে আন্তর্জাতিক স্তরে নিজেদের দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওযা সম্ভব হবে। এদিন লোকসভায় এই বার্তাই দেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ।
তিনি বলেন, ‘গান্ধীজির ভাবনা ও সংগ্রামে দেশ স্বাধীন হয়েছে বলে বসে থাকলে চলবে না। বরং এই নীতিকে কাজে লাগিয়ে বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে উপনিবেশিক সুলভ আচরণের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। তবেই ভারত বিশ্বের দরবারে সমাদৃত হবে। পাশাপাশি দুর্নীতির দুর্বিষহ অবস্থা কাটাতে হবে। যা আমাদের দেশের উন্নতিতে বাধা সৃষ্টি করছে। দুর্নীতি এবং সন্ত্রাসবাদ থেকে দেশকে মুক্ত করে নতুন ভারত গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখতে হবে। দারিদ্র্য, শিক্ষার অভাব এবং অপুষ্টি, এইসব বড় বিপদ যা আমরা মোকাবিলা করি, এই বিষয়ে একটি ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে।’
১৯৪২-এর ঐতিহাসিক আন্দোলনকে স্মরণ করে এদিন একাদিক ট্যুইট করেন নরেন্দ্র মোদী। ট্যুইটারে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই সময় স্বাধীনতা অর্জনের জন্যে দেশের প্রতিটি মানুষ একজনের নেতৃত্বে নিজেদের আত্মসমর্পণ করেছিল। সেই সময়ের মানুষগুলোর আত্মবলিদানের জন্যেই আজ ভারত এখানে পৌঁছতে পেরেছে বলেও নিজের ট্যুইটারে উল্লেখ করেন নরেন্দ্র মোদীর ।
মোদীর তাঁর ট্যুইটে আরও বলেন, সেই সময় ভারতকে ব্রিটিশদের ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি দেওয়াই ছিল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য পূরণের জন্যে নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সেই আন্দোলনে সামিল হয়েছিল। আজ তাঁদের জন্যেই বর্তমান জায়গায় পৌঁছেছে ভারত, মন্তব্য মোদীর।
তাই আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রতিটি মানুষের কাছে আর্জি রেখেছেন, তাঁরা যেন তাঁকে নতুন ভারত তৈরির পথে সাহায্য করেন। সেই নতুন ভারতে দারিদ্র্য থাকবে না, দুর্নীতি থাকবে না, সন্ত্রাস হানার মতো জঘন্য ব্যধি থাকবে না, জাতি বিদ্বেষহীন এক নতুন ভারতের উদয় হবে। তারপর প্রধানমন্ত্রী স্লোগান দেন ‘সঙ্কল্প সে সিদ্ধি’ এবং প্রত্যেক ভারতবাসীর কাছে অনুরোধ রাখেন, তাঁরা যেন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এই নতুন ভারত গড়ার পথে এগোন।
2017-08-09

