ক্যাশলেস লেনদেনকে জনপ্রিয় করতে জেলা শাসকদের নির্দেশ রাজ্য সরকারের

cashless-economyনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ ডিসেম্বর৷৷ ক্যাশলেস লেনদেন সমস্ত সরকারী দপ্তরে চালু করার পাশাপাশি বেসরকারী ক্ষেত্রেও তা নিশ্চিত করার জন্য বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য সরকার৷ এই মর্মে আট জেলার জেলা শাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য৷ সচিবালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই জেলা শাসকদের কাছে এমর্মে নির্দেশিকা পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে৷
সূত্রের খবর, সচিবালয় থেকে জারি করা নির্দেশিকায় প্রতিটি জেলার জেলা শাসকদের বলা হয়েছে ক্যাশলেস লেনদেনের বিষয়ে জনসাধারণকে সচেতন করার লক্ষ্যে সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য৷ এই খাতে প্রত্যেক জেলাকে ৫ লক্ষ টাকা করে রাজ্য সরকার দিচ্ছে৷ জেলা শাসকদের বলা হয়েছে, প্রত্যেক মহকুমার মহকুমা শাসক এবং প্রত্যেক ব্লকের বিডিওদের সাথে এই বিষয়ে বৈঠক করে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ করার জন্য৷ বিডিওদের বলা হয়েছে, তাঁরা যেন সংশ্লিষ্ট ব্লক এলাকার প্রতিটি গ্রামে জনসাধারণকে ক্যাশলেস লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয়ে সচেতন করার উদ্যোগ গ্রহণ করেন৷ গৃহীত কর্মসূচি অনুযায়ী, প্রতিটি গ্রামের জনসাধারণ এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার বাজারের ব্যবসায়ীদের নিয়ে একত্রিত করে বৈঠক এবং ক্যাশলেন লেনদেন সংক্রান্ত যাবতীয় বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে অবহিত করা৷ ক্যাশলেস লেনদেনে কিভাবে সমস্ত অংশের জনগণ উপকৃত হবেন, সুবিধা পাবেন তাও অবহিত করতে বলা হয়েছে৷ তাছাড়া, পিওএস এর মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট গ্রামের জনগণ ও ব্যবসায়ীদের মহড়া দিয়ে দেখানোর কথাও কর্মসূচিতে রাখা হয়েছে৷
রাজ্য সরকারের তরফ থেকে জেলা শাসকদের প্রদেয় নীতি নির্দেশিকায় সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রতিটি গ্রামে অন্তত পাঁচটি দোকানে প্রাথমিক অবস্থায় পয়েন্ট অফ সেল (পিওএস) মেশিনের ব্যবস্থা করে দিতে যেখানে ব্যাঙ্ক গ্রাহকরা তথা ক্রেতা সাধারণ ক্যাশলেস লেনদেন করতে পারেন৷
এদিকে, রাজ্য সরকারের প্রদেয় নীতি নির্দেশিকা অনুযায়ী জনগণকে সচেতন করার ক্ষেত্রে জেলা শাসকরা তেমন কোন সমস্যায় পড়বেন বলে মনে হচ্ছে না৷ তবে, পিওএস মেশিন এর অপ্রতুলতার দরুণ তাদের এই কর্মসূচি কতটা বাস্তব রূপ পাবে এনিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করছেন জেলা স্তরের প্রশাসনিক আধিকারীকরা৷ গত ৮ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট বাতিল করার পর থেকেই ক্যাশলেস লেনদেনের প্রতি ঝোঁক বাড়ছে৷ তাই পিওএস মেশিনের চাহিদাও বেড়ে গিয়েছে গোটা দেশে৷ কিন্তু, রাজ্যে এখনো পর্যন্ত পর্যাপ্ত সংখ্যায় পিওএস মেশিন না থাকায় ক্যাশলেস লেনদেনের প্রক্রিয়াটি কতটা সফল হবে এনিয়ে প্রশ্ণ রয়েছে৷ তারপরও জেলা শাসকরা পিওএস মেশিন সরবরাহ করার জন্য সর্বোতভাবে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে সূত্রের খবর৷
সূত্র অনুসারে আরো জানা গেছে, অন্য আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা সামনে উঠে এসেছে৷ অনেক গ্রামের ব্যাঙ্ক গ্রাহকদের কাছে এটিএম কার্ড নেই৷ বিভিন্ন ব্যাঙ্কের তরফ থেকে এটিএম কার্ড সরবরাহ করা হয়নি৷ এর মধ্যে রয়েছে ত্রিপুরা গ্রামীণ ব্যাঙ্ক৷ রাজ্যের সিংহভাগ গ্রামীণ এলাকার জনগণ গ্রামীণ ব্যাঙ্কের গ্রাহক৷ যদিও গ্রামীণ ব্যাঙ্ক এখনো পর্যন্ত তার সমস্ত গ্রাহকদের হাতে এটিএম কার্ড পৌঁছে দিতে পারেনি৷ তাই এই ক্যাশলেস লেনদেনের প্রক্রিয়া বাস্তব রূপ দিতে রাজ্য সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তা কতটা সফল হবে এনিয়ে প্রশ্ণ থেকেই যাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *