তিন তালাক প্রথার দরুণ দোটানার মধ্যে জীবন কাটান মুসলীম মহিলারা ঃ রাজ্যপাল

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ ডিসেম্বর৷৷ দেশে মুসলীম মহিলাদের মানবাধিকার সবচেয়ে বেশি লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ এনিয়ে গভীর

শনিবার আগরতলায় মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজ্যপাল তথাগত রায় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত৷ ছবি নিজস্ব৷
শনিবার আগরতলায় মানবাধিকার দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় রাজ্যপাল তথাগত রায় ও রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত৷ ছবি নিজস্ব৷

চিন্তা ব্যক্ত করেন রাজ্যপাল তথাগত রায়৷ তাঁর মতে, দেশে মহিলারা বিশেষ করে মুসলীম মহিলাদের মানবাধিকার বেশি লঙ্ঘিত হচ্ছে৷ মহিলাদের মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশ মুসলীম সম্প্রদায়ভুক্ত৷ এখনও তাঁরাই দোটানার মধ্যে দিয়ে জীবন কাটান৷ কারণ, যে কোন সময় তাঁদের স্বামী তালাক দিয়ে দিতে পারেন৷ মূলত, এদিন রাজ্যপাল তিন তালাক প্রথা রদ করার পক্ষ্যেই সওয়াল করেছেন৷ তিন তালাক অসাংবিধানিক এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কেও তিনি পূর্ণ সমর্থন করেছেন৷ শনিবার প্রজ্ঞাভবনে ৬৮তম মানবাধিকার দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় মহিলারা বিশেষ করে মুসলীম মহিলাদের মানবাধিকার লঙ্ঘিত হওয়ার বিরুদ্ধে সকলকে সোচ্চার হতে আহ্বান জানান রাজ্যপাল৷
এদিন তিনি বলেন, মুসলীম মহিলারা স্বামীর কাছে কাঁটা হিসেবে বিবেচিত৷ ফলে, তাঁদের দোটানার মধ্যে দিয়েই জীবন কাটাতে হচ্ছে৷ কারণ, যে কোন স্বামী তাঁর স্ত্রীকে তালাক দিতে পারেন মুসলীম প্রথা অনুযায়ী৷ এজন্যই, এখন তিন তালাক প্রথা নিয়ে ভাবনা চিন্তার যথেষ্ট প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে মনে করেন রাজ্যপাল৷ তিনি বলেন, ১৯৯৩ সাল থেকে আমাদের দেশে মানবাধিকারের স্বপক্ষে আইন তৈরি হয় এবং বর্তমানে সেটা কার্যকর৷ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অনেক নজীর আছে৷ আমাদের দেশও এর ব্যতিক্রম নেই৷ মানবাধিকার লঙ্ঘনের সবচেয়ে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তিন তালাক প্রথা৷ তাই তিনি, তিন তালাক প্রথা অসাংবিধানিক এলাহাবাদ হাইকোর্টের রায়কে সমর্থন করে বলেন, এই প্রথা রদ করা উচিৎ৷ তবেই, মুসলীম মহিলাদের মানবাধিকার লঙ্ঘন কিছুটা হলেও কমবে৷ অবশ্য, এর সাথে দেশের সকল মহিলাদের মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয় সে বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে বলেন রাজ্যপাল৷ দায়িত্ব দিয়েছেন মহিলা কমিশনকেও৷ তিনি বলেন, মহিলাদের মানবাধিকার যাতে লঙ্ঘন না হয় সে বিষয়ে মহিলা কমিশনকেও ভাবতে হবে৷ পাশাপাশি রাষ্ট্রের হাতে যাতে মানবাধিকার লঙ্ঘিত না হয় তার জন্য পুলিশ অফিসারদের যত্নশীল হতে রাজ্যপাল আবেদন জানান৷ অপরাধীর বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগ করতে ভারসাম্য বজায় রাখতেও বলেন তিনি৷
এদিন এই অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস কল্যাণজোতি সেনগুপ্ত, কনজিউমার ডিসপুটস রিড্রেসাল কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি ইউ বি সাহা, পুলিশ একাউন্টেবিলিটি কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি সুবল বৈদ্য, মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন মনিকা দত্ত রায়, আইন সচিব দাতামোহন জমাতিয়া প্রমুখ৷ এদিন অনুষ্ঠানে রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান জাস্টিস কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত বলেন, মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে কোন অভিযোগ সাদা কাগজে জমা দিলেই হবে৷ এক্তিয়ারের মধ্যে থেকে সমস্ত রকমের সহযোগিতা করা হবে বলে তিনি আশ্বস্থ করেন৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *