মালদা, ১৬ সেপ্টেম্বর (হি.স): শিল্পের জন্য অধিগৃহিত জমি ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছে সরকার| কিন্তু ভাঙন দুর্গতদের পুনর্বাসন দেওয়ার কথা ভাবা হচ্ছে না| ভাঙন নিয়ে রাজনিতি করা উচিত নয়| সবাইকে যৌথভাবে দুর্গতদের পাশে এগিয়ে আসতে হবে| শুক্রবার সকালে সাড়ে ৮টা নাগাদ বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নার ও সিপিএম বিধায়ক সুজন চক্রবর্তীর সঙ্গে গঙ্গা ভাঙন পরিদর্শনে যান উত্তর মালদার সাংসদ তথা জেলা কংগ্রেস সভানেত্রী মৌসম নূর,ফরাক্কার কংগ্রেস বিধায়ক মইনুল হক, মালতিপুর কেন্দ্রের বিধায়ক আরবেরুনি, মানিকচকের বিধায়ক মুত্তাকিন আলম, সিপিএমের জেলা সম্পাদক অম্বর মিত্র, বিধায়ক খগেন মুর্মু, প্রাক্তন বিধায়ক বিশ্বনাথ ঘোষ প্রমুখ এসে একথা বললেন| এদিন সকালে নৌকা করে ফরাক্কা থানা এলাকার মহেশপুর গঙ্গা ঘাট থেকে ভাঙন পরিদর্শন শুরু করেন বাম -কংগ্রেস জোটের নেতারা| মহেশপুর ঘাট থেকে ফরাক্কার পুর্ব শিবতলা এবং মহাদেবপুর এলাকার ভাঙন পরিদর্শন করার পরই জোট পন্থীর নেতারা জলপথেই নৌকা করে সোজা চলে আসেন কালিয়াচক ৩ ব্লকের বিননগর ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পারলালপুর এলাকায়| সেখানকার ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর দুর্গত মানুষদের সঙ্গেও কথা বলেন তারা| পারলালপুর গ্রামের প্রায় ৩০০ পরিবার ভাঙন ও বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন| ভাঙন দুর্গতরা বাম -কংগ্রেস নেতাদের সামনেই তাদের সমস্যার কথা তুলে ধরেন| দুর্গতদের অভিযোগ, প্রশাসন থেকে ত্রাণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হলেও আশ্রয়ের জন্য বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করে নি| তাই অন্যের আমবাগানে সকলেই অস্থায়ী ভাবে থাকতে হচ্ছে| কিন্তু বাগান মালিকেরা সেখান থেকে তাদের উঠে যাওয়ার কথা বলছেন| সমস্ত বিষয়গুলি খতিয়ে দেখার পর এদিন দুপুরে জেলাশাসক শরদ দ্বিবেদির সঙ্গে দেখা করে ভাঙন ও বন্যা পরিদর্শনে যাওয়া বাম ও কংগ্রেসের ওই প্রতিনিধি দল| এদিন বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নার বলেন, বানভাসী মানুষদের সঙ্গে কথা বলেছি এবং বিভিন্ন এলাকার ভাঙন ও বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছি| তাতে মনে হয়েছে যে এই পরিস্থিতি নিয়ে যে কোনওভাবেই হোক পাজনীতি করা হচ্ছে| কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে যৌথভাবে ভাঙনপ্রতিরোধ কাজে এগিয়ে আসতে হবে| ভাঙন দুর্গতদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে দিতে হবে| কারণ, ফি বছর বর্ষার মরশুমে ভাঙন প্রতিরোধের কাজের জন্য গঙ্গাপাড়ে বোল্ডার ফেলার শুরু হচ্ছে| যেটা শুখা মরশুমে করা দরকার| কিন্তু সেই সময় কাজ না করে শাসকদলের মদতপুষ্ট ঠিকাদারদের ভরা বর্ষার মরশুমে কাজ পাইয়ে দেওয়া হচ্ছে| ফলে বন্যার জলে ভাঙন প্রতিরোধের কাজের মোকাবিলা ঠিক মতো হচ্ছে না| আমরা চাই বানভাসী মানুষদের পুনবার্সনের ব্যবস্থা করা হোক| পুরো বিষয়টি বিধানসভায় তোলা হবে| অন্যদিকে সিপিএম সুজন চক্রবর্তী বলেন, রাজ্য সরকার অধিগৃহিত জমি ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেছে| পাশাপাশি শিল্পের জন্য জমি দেওয়ার ব্যবস্থা করা হচ্ছে| কিন্তু বানভাসী মানুষদের জন্য পুনর্বাসনের কোনও ব্যবস্থা করা হচ্ছে না| সরকারকে দরদ দিয়ে এই বিষয়টি দেখা উচিত| এখন জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি আমরা জানালাম| কলকাতায় ফিরে সংশ্লিষ্ট দপ্তর এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও বিষয়টি জানাব| তবে ভাঙন প্রতিরোধের জন্য বোল্ডারের ফেলার যে কাজ হচ্ছে তা সঠিক সময়ে এবং সঠিকভাবে করা হচ্ছে না| ডিসেম্বর থেকে ফেব্রউয়ারি মাসের মধ্যে বোল্ডার দিয়ে পার মেরামতির করলে এরকম ভাঙন বা বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হত না মালদায়| আমরা চাই সরকার এই বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখুক|