BRAKING NEWS

প্রদেশ কংগ্রেসের বিদ্রোহের আগুনে জল ঢালার চেষ্টা যোশীর

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ আগস্ট৷৷ রাজ্যে কংগ্রেস শিবিরে যে বিদ্রোহের আগুন জ্বলছে তাতে জল ঢেলে শান্ত করার চেষ্টা

বুধবার আগরতলায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক সি পি যোশী৷ ছবি নিজস্ব৷
বুধবার আগরতলায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক সি পি যোশী৷ ছবি নিজস্ব৷

করেছেন এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক সিপি যোশী৷ বুধবার প্রদেশ কংগ্রেস আয়োজিত সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দলীয় কর্মী সমর্থকদের উজ্জীবিত করতে ভোকাল টনিক দিলেন৷ চিটফান্ডের কারণে রাজ্যবাসী যেভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তার জন্য বামফ্রন্ট সরকারকেই তিনি দায়ী করেছেন৷ পাশাপাশি এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সাথে জোটের প্রশ্ণে তিনি বঙ্গের কংগ্রেস নেতৃত্বদের ঘাড়েই সমস্ত দায় চাপিয়েছেন৷ শ্রীযোশী জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র বাঁচাতে এবং সাম্প্রদায়িক শক্তি আটকাতে সেই রাজ্যের কংগ্রেস নেতৃত্বরা এআইসিসি’র কাছে গিয়ে বামেদের সাথে জোটের বিষয়ে জোর দাবি করেছিলেন৷ তাতে এআইসিসি সরাসরি কোন সম্মতি দেয়নি৷ বঙ্গ নেতৃত্বরাই পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির নিরিখে বামেদের সাথে জোটের পথে হেঁটেছেন৷ তাতে মনে করা হচ্ছে, শ্রীযোশী রাজ্যের কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের বিদ্রোহ দমাতে বোঝাতে চাইছেন পশ্চিমবঙ্গে বামেদের সাথে যে অনৈতিক জোট হয়েছে তাতে এআইসিসি’র প্রত্যক্ষ সমর্থন ছিল না৷
একদিকে শ্রীযোশী রাজ্যের কংগ্রেস কর্মী সমর্থকদের বিদ্রোহ দমন করার চেষ্টা করেছেন, অন্যদিকে একই সভার মঞ্চে পিসিসি সভাপতি সহ কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা নব্য তৃণমূলীদের বিশ্বাসঘাতক বলে আখ্যা দিয়েছেন৷ পিসিসি সভাপতি বীরজিৎ সিনহা এবং কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা গোপাল রায়ের মতে, কংগ্রেস থেকে রাজনীতির পাঠ নিয়ে সুদীপ বর্মণ, আশিসকুমার সাহারা এখন তৃণমূলের ব্যানারে গিয়ে যোগ দিয়েছেন৷ যে দলে থেকে বিধায়ক হয়েছেন, বহু টাকা কামিয়েছেন সেই দলকেই ছেড়ে অন্য দলে গিয়ে তাঁরা নিজেদের বিশ্বাসঘাতক বলে প্রমাণ করেছেন৷ তাঁদের আরো বক্তব্য, ঐ বিশ্বাসঘাতকদের কারণেই দীর্ঘদিন ধরে বামফ্রন্ট রাজ্যে ক্ষমতায় টিকে রয়েছে৷
চিটফান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের অর্থ ফেরত এবং বেকার ভাতা প্রদানের দাবিতে বুধবার আগরতলায় প্রদেশ কংগ্রেসের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এআইসিসি’র সাধারণ সম্পাদক তথা রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত কংগ্রেস নেতা সিপি যোশী চিটফান্ডের জন্য রাজ্যের বামফ্রন্ট সরকারকেই দায়ী করেছেন৷ সেক্ষেত্রে চিটফান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আমানতকারীদের মদত দিতে অতি সত্বর প্রদেশ কংগ্রেস আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ নেবে বলেও তিনি জানিয়েছেন৷ রাজ্যের বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে কংগ্রেস দলকে আবারো উজ্জীবিত করে তুলতে এআইসিসি পুরো ক্ষমতা পিসিসিকে দিয়েছে৷ শ্রীযোশী এদিন প্রশ্ণ তুলে বলেন, পশ্চিমবঙ্গে যদি চিটফান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নেতা মন্ত্রীদের জেলে পাঠানো হয়েছে তাহলে এরাজ্যেও এমনটা কেন ঘটবে না৷কারণ, এরাজ্যেও মুখ্যমন্ত্রী সহ রাজ্য মন্ত্রিসভার বহু সদস্য এবং শাসক দলের নেতারা চিটফান্ডের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন এবং তাদের উৎসাহ দিয়েছেন৷
এদিন তিনি দাবি করে বলেন, শুধু ত্রিপুরা নয়, গোটা দেশেই কংগ্রেসের কোন বিকল্প নেই৷ কারণ, দেশ কিভাবে চালাতে হয় তা একমাত্র কংগ্রেসই জানে৷ তাই, ২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে পুনরায় কংগ্রেস ক্ষমতায় আসবে বলে তিনি প্রত্যয় ব্যক্ত করেন৷ তিনি দাবি করে বলেন, ২০১৮ বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেস ক্ষমতা এলে চিটফান্ডে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত আমানতকারীদের ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে৷ পাশাপাশি এডিসির হাতে অধিক ক্ষমতা দেওয়া হবে৷
নরেন্দ্র মোদির উদ্দেশ্যে প্রশ্ণ ছঁুড়ে দিয়ে তিনি বলেন, আড়াই বছরে গরিব এবং গ্রামের মানুষদের জন্য নতুন সরকার কি করতে পেরেছে৷ বিজেপি পরিচালিত কেন্দ্রীয় সরকার কেবল কংগ্রেস পরিচালিত ইউপিএ আমলের বিভিন্ন প্রকল্পের নাম বদলের কাজ করে চলেছে৷
এদিকে, এই সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বিধায়ক রতনলাল নাথ তথ্য তুলে ধরে জানান, চিটফান্ড সংস্থাগুলি রাজ্যের ১৪ লক্ষ আমানতকারীর ১২০০ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়েছে৷ আর তাদের পালাতে রাজ্য সরকার মদত জুগিয়েছে বলে তিনি অভিযোগ করেছেন৷ শ্রীনাথ শাসক দলের নেতৃত্বদের কটাক্ষের সুরে বলেন, এককালে সিপিএম নেতারা স্যান্ডেল পরে চলাফেরা করতেন৷ আজ সেই নেতারা বিত্তশালী হয়ে ওঠেছেন৷ তাদের এই বিত্তবৈভব কিভাবে হয়েছে এদিন তিনি সেই প্রশ্ণ তুলেছেন৷
এদিকে, সাংবাদিক সম্মেলনে এআইসিসি সাধারণ সম্পাদক সিপি যোশী জানিয়েছেন, রাজ্যে কংগ্রেস আবার ঘুরে দাঁড়াবে৷ সেই লক্ষ্যে নতুন কমিটি গঠন করার এবং নতুন টার্গেট চূড়ান্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ এদিকে, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বীরজিৎ সিনহা দাবি করে বলেন, রাজ্যে এখনো কংগ্রেস মরেনি৷ এই দলটি এখনো জীবিত আছে এবং আগামীদিনে পুনরায় ঘুরে দাঁড়াবে৷ কারণ, কংগ্রেসই বামফ্রন্টের প্রকৃত বিকল্প৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *