নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৬ জুলাই৷৷ বাংলাদেশে হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের হত্যা ও নির্যাতনের প্রতিবাদে ধর্ম জাগরণ সমিতির পক্ষ থেকে সেই দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠিয়েছেন আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ ভিসা অফিসে সহকারী হাইকমিশনারের মাধ্যমে৷ সমিতির আহ্বানে এদিন রাজধানী আগরতলা শহরের রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গনে একটি জমায়েত অনুষ্ঠিত হয়৷ হিন্দু, বৌদ্ধ সহ বিভিন্ন ধর্মের হাজার হাজার নারী পুরুষ এই জমায়েতে উপস্থিত হন৷ জমায়েতের পর একটি মছিলি শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে বৌদ্ধমন্দির সংলগ্ণ বাংলাদেশ ভিসা অফিসে গিয়ে সহকারী হাইকমিশনারের কাছে দাবী সনদ তুলে দেওয়া হয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্দেশ্যে৷
সমিতির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে হিন্দু সহ অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর ক্রমাগত হামলা চালানো হচ্ছে৷ হত্যার পর হত্যা চলছে সেখানে৷ বাংলাদেশে ইসলামিক জেহাদিরা সে দেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘু বিশেষত- হিন্দু নিধনযজ্ঞে নেমেছে৷ এই হত্যার পিছনে এদের আসল উদ্দেশ্যটা হচ্ছে বাংলাদেশকে সম্পূর্ণ হিন্দুশূণ্য করে সেখানে খেলাফত প্রতিষ্ঠা করা৷ দীর্ঘদিন ধরেই সেখানকার হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা মৌলবাদীদের অত্যাচারের শিকার হচ্ছে৷ জমি দখল, বাড়ি থেকে উচ্ছেদ, মঠ ও মন্দির ধবংস, প্রার্থনা ও পূজাপাঠে বাধাদান, জোর করে ময়েদের তুলে নিয়ে ধর্ষণ ও ধর্মান্তরণ করা ইত্যাদি নানা অত্যাচার চলছে৷
দেশভাগের পর পূর্ব পাকিস্তান থেকে ব্যাপক হারে হিন্দু বিতারণ ঘটলেও দেশের জনসংখ্যা প্রয় ২৯ শতাংশ তখনও সেখানে হিন্দু ছিল৷ বর্তমানে সেই সংখ্যাটা নেমে সাত শতাংশে দাঁড়িয়েছে৷ ঢাকার একটি অনলাইন পত্রিকার সমীক্ষায় বাংলাদেশে সংখ্যাতিত বাবে হিন্দু কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে নারী নির্যাতন ও ধর্মান্তরকরণকেই দায়ী করা হয়েছে৷ ঐ সমীক্ষা অনুযায়ী গত ২৫ বছরে ৫৩ লক্ষ হিন্দু নিখোঁজ৷ এদের ভবিষ্যৎ যে কী তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷ বাংলাদেশের সরকার সে দেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে৷ সম্প্রতি আইএস- এর মতো জঙ্গী সংগঠন বাংলাদেশে ঘাঁটি গেড়েছে৷
এই অবস্থায় ধর্ম জাগরণ সমিতি সর্ব স্তরের জনগণকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছে৷ সমিতি দাবী করেছে বাংলাদেশের সমস্ত সংখ্যালঘু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও এদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে হবে৷ দেশে আইনের শাসন কঠোর ভাবে বলবৎ করে সংখ্যালঘুদের শঙ্কাহীন জীবনযাপনের ব্যবস্থা করতে হবে৷ সমিতি ভারত সরকারের কাছেও আবেদন রেখেছে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের অস্তিত্ব রক্ষার জন্য রাজনৈতিক, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও প্রয়োজনে সামরিক সহায়তা সহ যে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণে ভারত সরকার যেন পিছপা না হয়৷ সমিতির অভিমত, বাংলাদেশে তালিবাণীকরণ হলে ভারত অক্ষত থাকবে না, এটা মনে রাখা প্রয়োজন৷