নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জুলাই ৷৷ গত কয়েকদিন যাবত নিগমবাসী সম্পত্তি কর নিয়ে দুশ্চিন্তায় ছিলেন৷ পুর নিগমের সম্পত্তি কর শীর্ষক নয়া বিজ্ঞপ্তি নিয়ে বিভিন্ন মহলে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়৷ সোমবার মহাকরণে সাংবাদিক সম্মেলনে নগরোন্নয়নমন্ত্রী দাবি করেন, সম্পত্তি কর নিয়ে কোন কোন মহল অযথা বিভ্রান্তির সৃষ্টি করছে৷ নাম না করে তিনি বিজেপিকে খোঁচা দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশিকা মোতাবেক নিগম এলাকায় নতুনভাবে বিন্যাস করে সম্পত্তি করের বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে৷ তাতে, নতুন পদ্ধতিতে সম্পত্তি কর আদায় করা হলে কেবল এ এবং বি ক্যাটাগরির নিগমবাসীদের সম্পত্তি কর সামান্য বাড়বে৷ কিন্তু সি এবং ডি ক্যাটাগরির নিগমবাসীদের সম্পত্তি কর নিশ্চিতভাবে এখন যে কর দিচ্ছেন তার তুলনায় কমতে চলেছে৷ তবে, এখনই নিগমবাসীকে ঐ হারে সম্পত্তি কর দিতে হচ্ছে না৷ সকলের দাবি আপত্তি জানতেই এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে৷ এরজন্য এক মাসের সময় দেওয়া হয়েছে৷ আগামী ১৮ আগস্টের পর নিগমবাসীর দাবি আপত্তির ভিত্তিতে নয়া নিয়ম অনুসারে সম্পত্তি কর আদায়ের বিষয়টি পর্যালোচনা করা হবে৷ এরপরই এবিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ এদিন তিনি দাবি করে বলেন, যেভাবে মারাত্মক সম্পত্তি কর বাড়বে বলে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে তেমনটা কোনভাবেই হবে না বলে তিনি জোর দিয়ে বলেন৷
এবিষয়ে নগরোন্নয়ন দপ্তরের প্রধান সচিব এস কে রাকেশ এক উদাহরণ দিয়ে বলেন, এ ক্যাটাগরিতে এখন নিগমবাসী শতকরা ৮৬ পয়সা কর দিচ্ছেন৷ নতুন সম্পত্তি কর অনুযায়ী তা ১৪ পয়সা বাড়বে৷ বি ক্যাটাগরিতে বাড়বে ৪ পয়সা করে৷ অন্যদিকে সি ক্যাটাগরিতে ৬ পয়সা এবং ডি ক্যাটাগরিতে ১৬ পয়সা কমবে৷ সার্বিকভাবে দেখলে নতুন নিয়ম অনুযায়ী সম্পত্তি কর নেওয়া হলে এ এবং বি ক্যাটাগরি মিলিয়ে যেখানে ৫৭,৯৪২টি সম্পত্তির কর বাড়লেও সি এবং ডি ক্যাটাগরি মিলিয়ে ৬২,৬৬২টি সম্পত্তির কর কমবে৷
এদিন, নগরোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, আমরুট প্রকল্পে কেন্দ্রীয় অর্থ পুরোটা পেতে গেলে তাদের নির্দেশিকা মোতাবেক সমস্ত নিয়মনীতি মানতেই হবে৷ না হলে প্রথম ধাপে ৮০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করলেও বাকি ২০ শতাংশ নিয়মনীতি না মানার কারণে রাজ্যকে দেবে না কেন্দ্রীয় সরকার৷ সেক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে ঐ ২০ শতাংশ অর্থ বহন করতে হবে৷ স্মার্ট সিটির ক্ষেত্রেও কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা পূরণ করা বাধ্যতামূলক৷ নগরোন্নয়নমন্ত্রী বলেন, বহু আগেই ত্রয়োদশ অর্থ কমিশন এবং চতুদর্শ অর্থ কমিশনের সুপারিশ ছিল সম্পত্তি কর সংশোধন করতে হবে৷ জেএনএনইউআরএম তাতেও এই নির্দেশিকা ছিল৷ এই প্রকল্পটি এখন বদল হয়ে নতুন নামাকরণ হয়েছে আমরুট৷ ফলে, কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা পালন করা ছাড়া এখন আর কোন উপায় নেই৷
এদিন তিনি দাবি করে বলেন, নতুন পদ্ধতিতে সম্পত্তি কর আদায় করা হলে তাতে স্বচ্ছতা বজায় রাখা সম্ভব৷ কারণ, এক্ষেত্রে সম্পত্তির মালিক নিজেই সম্পত্তির বিবরণ জমা দেবে পুর নিগমের কাছে৷ এর ভিত্তিতেই সম্পত্তি কর নির্ণয় করা হবে৷ যদি কেউ বেশি কর প্রদান করে থাকেন তাহলে পরবর্তী সময়ে তা ফেরত পাবেন৷ পুর নিগমের পাশাপাশি পুর পরিষদ এবং নগর পঞ্চায়েত এলাকাগুলিতেও সম্পত্তি কর নতুন পদ্ধতিতে আদায় করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হবে বলে এদিন নগরোন্নয়নমন্ত্রী জানিয়েছেন৷
এদিকে, পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহাও জানিয়েছেন, নিগমবাসীদের ঘাড়ে মারাত্মক করের বোঝা চাপিয়ে দেওয়ার কোন উদ্দেশ্যই নেই নিগমের৷ তবে, নতুন পদ্ধতিতে সম্পত্তি কর আদায় করা যেখানে বাধ্যতামূলক হয়ে ওঠেছে সে জায়গায় এ এবং বি ক্যাটাগরির নিগমবাসীদেরই সামান্য সম্পত্তি কর বৃদ্ধি হবে৷ সি এবং ডি ক্যাটাগরির নিগমবাসীদের সম্পত্তি কর কমবে৷ এক্ষেত্রে সম্পত্তি কর নিয়ে গত কয়েকদিনে যে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে সে বিষয়ে সচেতন হওয়ার জন্য নগরোন্নয়নমন্ত্রী এবং পুর নিগমের মেয়র আবেদন জানিয়েছেন৷