ধর্মনগর পর্যন্ত রেলে পণ্য ও বাংলাদেশ দিয়ে লরিতে পেট্রোপণ্য আনতে কেন্দ্রকে প্রস্তাব রাজ্য সরকারের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ জুলাই ৷৷ আসামের লোয়াইরপোয়া ও কাঁঠালতলিতে সড়কের বেহাল অবস্থার কারণে

ফাইল ছবি৷
ফাইল ছবি৷

পেট্রোপণ্য সহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রি ত্রিপুরায় আনার ক্ষেত্রে যে তীব্র সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে তা থেকে উত্তরণে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে প্রয়োজনীয় সামগ্রি আনতে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ আজ মহাকরণে এ বিষয়ে জানাতে গিয়ে খাদ্য, জনসংভরণ ও ক্রেতা সুরক্ষা বিষয়ক দফতরের মন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে ত্রিপুরার জন্য মালামাল আনার বিষয়টি যেহেতু দুই দেশের বিষয়, তাই এক্ষেত্রে ভারত সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে এবং সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকারকেই অনুরোধ জানানো হয়েছে৷ শিলং থেকে ডাউকি হয়ে ধর্মনগরের রাঘনা সীমান্ত দিয়ে রাজ্যের জন্য পেট্রোপণ্যবাহী ট্যাঙ্কারগুলো আনার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ অপরদিকে হলদিয়া থেকে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর দিয়েও পেট্রোপণ্য আনার অওার একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে৷ এফ সি আই এখন বাংলাদেশ দিয়ে যে চাল আনছে তা বাড়িয়ে পাঁচ হাজার মেট্রিকটন করা যায় কিনা তারও চেষ্টা চলছে৷ তিনি বলেন, গত বছর অক্টোবর মাসে ব্রডগেজ পরিবর্তনের কাজ শুরু হবার সময় রাজ্যে নববই দিনের খাদ্যশস্য মজুত রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ এখন চল্লিশ থেকে বিয়াল্লিশ দিনের খাদ্যশস্য মজুত আছে৷ ব্রডগেজ সম্পন্ন হবার পরও রেল চলাচল নিয়ে দু’মাস সমস্যা ছিল৷ এখন অবশ্য মালগাড়ি আসছে৷ খাদ্যমন্ত্রী জানান,এখটা মালগাড়িতে করে ২৬০০ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য প্রয়োজন বলে তিনি জানান৷ আসামের লোয়াইরপোয়াতে সড়কের বেহাল দশার কারণে ক্ষোভ প্রকাশ করে মন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, আসাম সরকার দীর্ঘদিন ধরে এখানে কোনও কাজই করেনি৷ প্রতি বছরই এখানে সমস্যার সৃষ্টি হয়৷ তার জন্য ভুগতে হয় ত্রিপুরাকে৷ আসামে আগে যে সরকার ছিল তারা তো কোনও উদ্যোগই নেয়নি৷
বর্তমানে সেখানে বিধানসভা নির্বাচনের মধ্য দিয়ে নতুন সরকার এসেছে৷ কথাবর্তা অনেক হলেও লোয়াইরপোয়া ও কাঁঠালতলির সড়কের অবস্থার কোনও পরিবর্তন কিন্তু হয়নি৷ কোনও ফলোআপ এ্যাকশনও দেখা যাচ্ছে না৷ পেট্রোপণ্য সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর সঙ্কট সৃষ্টির মাধ্যমে ত্রিপুরাকে চরম ভোগান্তিতে ফেলার কোনও রাজনৈতিক বদ উদ্দেশ্য ও দুরভিসন্ধি কাজ করছে কিনা তা নিয়েও তিনি প্রশ্ণ তোলেন৷ ফলে ত্রিপুরায় একটা অসহায় অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন৷ খাদ্যমন্ত্রী বলেন, লোয়াইরপোয়া ও কাঁঠালতলিতে সারিবদ্ধ পণ্যবাহী যে গাড়িগুলো দাঁড়িয়ে আছে তা প্রায় ২৩ কিলোমিটার লম্বা৷ সেখানে অপেক্ষামান লরি-চালক সহ সহকারীদের চরম অমানবিক অবস্থায় মধ্য দিয়ে কিন কাটাতে হচ্ছে৷ পানীয় জল ও খাবারের বন্দোবস্ত তেমন নেই বললেই চলে৷ রাস্তায় মাছ, ফল, ডিম প্রভৃতি সামগ্রি লরির ভেতরেই পচে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে৷ তিনি জানান, কাঁঠালতলিতে আড়াই থেকে তিন কিলোমিটার রাস্তার অবস্থা খুব খারাপ৷ এত দিনের মধ্যেও আসাম সরকার এই অংশের সংস্কার করতে পারেনি৷ ফলে একরম বাধ্য হয়েই রাজ্যের পূর্ত দফতর আসামের ভেতরে কাঁঠালতলিতে গিয়ে ইট-পাথর ফেলে রাস্তা সংস্কারে হাত লাগিয়েছে৷ এতে স্থানীয় জনগনও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে তিনি জানান৷ তিনি বলেন, এখন অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে পেট্রোপণ্য আনা হচ্ছে৷ সঙ্কট কাটাতে এখন রেশনিং-এর ব্যবস্থাও চালু করা হয়েছে৷ এল পি জি-র ক্ষেত্রেও একই সমস্যা রয়েছে৷ রেশনে চিনি দেবার ক্ষেত্রেও কিছুটা সমস্যা রয়েছে৷ তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন সেপ্ঢেম্বর মাসের মধ্যে রাজ্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় সহ বিভিন্ন সামগ্রির মজুতভান্ডার গড়ে তুলতে না পারলে অওাসন্ন শারদ্যেৎসবের আগে সঙ্কট দেখা দিতে পারে৷ এদিকে, ন্যাশন্যাল হাইওয়ে অথোরিটি আসামের দিকে জাতীয় সড়কের সংস্কারের কাজ শুরু করতে চলেছে৷ কিন্তু এই কাজ কবে শেষ হবে তার নিশ্চয়তা নেই৷ খাদ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যের পণ্যবাহী লরিগুলোকে বদরপওুর থেকে ধর্মনগর পর্যন্ত রেলে করে পৌঁছে দিতে রেলের কাছে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে৷ এ বিষয়ে রেল এখনও কিছু জানায়নি৷