নিজস্ব প্রতিনিধি, তেলিয়ামুড়া, উদয়পুর, ১০ জুলাই৷৷ রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকারের দুর্নীতি স্বজনপোষণ সহ সাধারণ নাগরিকদের মৌলিক বর্তমান প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পায় না গিরিবাসীরা৷ আর তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে, বর্তমানে শাসক দলের পতাকা ছেড়ে প্রায় শতাধিক উপজাতি গিরিবাসীরা লাল দূর্গ ছেড়ে বিজেপি পতাকা দলে সামিল হলো৷ দলত্যাগীদের বিজেপি দলের পক্ষে বরণ করে নেন খোয়াই জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ দেববর্মা সহ ২৯ কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি মন্ডল কমিটির সভাপতি নির্মল সরকার৷
রবিবার আনুমানিক সাড়ে তিনটা নাগাদ তেলিয়ামুড়া মহকুমা ২৯ কৃষ্ণপুর বিধানসভা কেন্দ্রের লাল দূর্গ তথা মুঙ্গিয়াকামী ব্লকের ৪৫ মাইল এলাকায় বিজেপির এক সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এদিনের সভাতে বর্তমান সরকারের বঞ্চনার কাহিনী তুলে ধরেন দলত্যাগীরা৷ তাদের অভিযোগ বর্তমান সরকারের শাসন ব্যবস্থায় বিদ্যুৎ, পানীয় জল, শিক্ষা সহ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে কয়েক ধাপ পিছিয়ে রয়েছে প্রত্যন্ত এলাকা তথা ৪৫ মাইল এলাকার গিরিবাসীরা৷ প্রশাসনের কাছে প্রতিনিয়ত দাবি জানিয়ে আসলেও, নূ্যনতম মৌলিক চাহিদা টুকু পূরণ হয়নি গিরিবাসীদের৷ বর্তমানে ওই এলাকায় বসবাসকারী গিরিবাসীরা সরকারিভাবে কোন স াহায্য না পাওয়াতে ক্ষোভ উগরে দিলেন৷ রবিবার বিজেপি এর এক সভা অনুষ্ঠিত হয় ৪৫ মাইল এলাকায়৷ এদিনের সভার প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খোয়াই জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিকাশ দেববর্মা৷ তিনি এদিনের সভাতে ৩৪টি পরিবারের প্রায় শতাধিক ভোটারদের বিজেপি দলের পতাকা হাতে তুলে দিয়ে বরণ করে নেন৷ এছাড়াও এদিনের সভাতে উপস্থিত ছিলেন ২৯ কৃষ্ণপুর মন্ডল কমিটির সভাপতি নির্মল সরকার ছাড়া অন্যান্য বিজেপি নেতৃত্বরা৷ কে বা কি কারণে গিরিবাসীরা দলত্যাগ করলেন সে বিষয়ে বলতে গিয়ে বিকাশ দেববর্মা বলেন, দীর্ঘ প্রায় কয়েক দশক ধরে বর্তমান সরকারের শাসন ব্যবস্থায় গিরিবাসীদের অর্থ সামাজিক তার মানোন্নয়ন হয়নি৷ বিশেষ করে, বিশুদ্ধ পানীয় জল, স্বাস্থ্য, শিক্ষা সহ মৌলিক চাহিদা পূরণ করতে পারেনি বর্তমান সরকারের নেতা আমলারা৷ আর তার ফলে গিরিবাসীদের জীবন ধারণের মান যে তিমিরে ছিল সে তিমিরে রয়েছে৷
এদিকে, বঞ্চিত গিরিবাসীরা অভিযোগ করেন বলেন, ৪৫ মাইল এলাকার আজ স্বাভাবিকভাবে জীবন ধারণ করতে পাচ্ছে না জনজাতিরা৷ তারা আরো বলেন, তাদের অর্থ সামাজিক মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে বর্তমান সরকার কোন কিছুই করেনি৷ তার ফলে বাধ্য হয়ে বিজেপিতে যোগদান করেছেন৷
কাকড়াবন, শালগড়া বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত কাকড়াবন কমিউনিটি হলে তৃণমূলের এক সভা অনুষ্ঠিত হয়৷ এই সভায় কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি দলের ৫০০ পরিবারের দেড় হাজার ভোটার তৃণমূল কংগ্রেসের সাথে যোগদান করেন৷ এর মধ্যে সিপিএমের ৩৩ পরিবার, বিজেপির ২৭ পরিবার এবং বাকি সবগুলো কংগ্রেস দলের৷ সংখ্যালঘু মুসলিম এবং উপজাতিদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো৷ তাদেরকে বরণ করে নেন তৃণমূলের রাজ্য চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী, সুদীপ রায় বর্মণ, প্রণজিৎ সিংহ রায়, সুশান্ত চৌধুরী আইনজীবী দিলীপ দে এবং অন্যান্যরা৷ বক্তাদের সকলের একটাই বক্তব্য ২০১৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিপুরা থেকে বামফ্রন্ট সরকারকে উৎখাত করা, যেটা পশ্চিম বাংলা থেকে তৃণমূল নেত্রী মমতা ব্যানার্জি করেছেন৷ মমতা ব্যানার্জির আদর্শকে পাথেয় করে এরাজ্যের তৃণমূল নেতা কর্মীদের মধ্যে একটা লড়াকু মনোভাব এবং বিপ্লবী চেতনা গড়ে তুলতে হবে৷ বক্তব্য রাখতে গিয়ে সুদীপ বাবু বলেন এরাজ্যে কমিউনিস্টদের আসল চেহারা এবং তারা কিভাবে লুটতরাজ চালিয়ে আসছেন সেগুলি জনসমক্ষে তুলে ধরা এবং যে নৈতিকতার পাঠ দিয়ে আসছেন সেগুলির মুখোশ খুলে দেওয়াই হবে এরাজ্যের তৃণমূলের প্রধান কাজ৷ কমিউনিটি হলে সভা শেষ হলে একটি মিছিল বের হয়৷ এই মিছিল কাকড়াবন এলাকা পরিক্রমা করেছেন৷ আগামী ৯ আগস্ট বিবেকানন্দ ময়দানে মমতা ব্যানার্জির জনসভায় যোগদানের আহ্বান জানান৷