BRAKING NEWS

তৃণমূল ভবন বেআইনী, ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ পুর নিগমের

Demolitionনিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩০ জুন৷৷ জ্যাকশন গেইটে তৃণমূল ভবনকে বেআইনী নির্মাণ বলে ভেঙ্গে ফেলার নোটিশ জারি করল আগরতলা পুর নিগম৷ তিন দিনের মধ্যে এই ভবন ভেঙ্গে ফেলার কথা বলেছে পুর নিগম৷ এই সময়ের মধ্যে ভবন ভেঙ্গে ফেলা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের পথে হাটবে নিগম৷ বৃহস্পতিবারই তৃণমূল ভবনটির দ্বারোদ্ঘাটন করা হয়৷ এরই মধ্যে পুর নিগমের এই নোটিশ ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে৷
বৃহস্পতিবার দুপুরে যখন জ্যাকশন গেইটে ইন্দিরা ভবনের স্থলে তৃণমূল ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন করছিলেন দলের সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায় এবং রাজ্য কমিটির চেয়ারম্যান রতন চক্রবর্তী যৌথভাবে তখনই আগরতলা পুর নিগমের মেয়র জানালেন এই ভবন নির্মাণ বেআইনী৷ উদ্বোধন পর্ব ভালোই ভালো সম্পন্ন হলেও নতুন করে আইনী ঝামেলায় পড়তে চলেছে রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেস এই ভবন নিয়ে৷ পুর নিগমের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে এই ভবনটি বেআইনীভাবে নির্মাণ করা হয়েছে৷ এই সম্পর্কে অনেক চিঠি চালাচালিও হয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত আগরতলা পুর নিগম ভবন ভেঙ্গে ফেলার জন্য নোটিশ জারী করেছে৷ তিন দিনের মধ্যে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা না হলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে৷
আগরতলা শিশুউদ্যানের পাশে উজ্জ্বয়ন্ত মার্কেটের কাছে প্লট নম্বর ৪৯০ এর শিট নম্বর ১৪ এর খতিয়ান নম্বর ৫৮১ এর জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই চলছে আইনী ঝামেলা৷ ঐ জমিতে বহু আগে গড়ে তোলা হয়েছিল ইন্দিরা ভবন৷ পুর নিগমের তথ্য মোতাবেক এই জমির মালি রয়েছেন আট জন৷ তারা হলেন, প্রবীর কান্তি রায়, প্রণব কান্তি রায়, পার্থ রায়, সাথী রায়, রাখী রায়, হেমপ্রভা রায়, সুবল ভৌমিক এবং আশিষ কুমার সাহা৷ এই জমিতে গড়ে উঠা ইন্দিরা ভবন নিয়ে ইতিপূর্বেও বহু আইনী ঝামেলা হয়েছিল৷ কিছুদিন পূর্বেও আগরতলা পুর পরিষদের তরফে ইন্দিরা ভবন ভেঙ্গে দেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল৷ গভীর রাতে রণসাজে সজ্জিত হয়ে বোলডুজার নিয়ে রাজপথে নেমেছিল পুর নিগমের টাস্ক ফোর্স৷ তখন রাতজেগে এই ভবন রক্ষা করেছিল বিধয়াক সুদীপ রায় বর্মন, বিধায়ক আশিষ কুমার সাহারা৷ এযাত্রায় ভবনটি অক্ষত ছিল৷ তারপরই পুর নিগম শুরু করে আইনি পথে হাটা৷
পুর নিগমের সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ০৩-০৬-২০১৬ ত্রিপুরা মিউনিসিপ্যাল এ্যাক্ট এর ১৩৫ ধারা মোতাবেক বেআইনী নির্মাণ বন্ধ করার জন্য নোটিশ জারী করা হয়েছিল৷ দ্বিতীয় বার ০৩-০৬-২০১৬ তারিখে ত্রিপুরা মিউনিসিপ্যাল এ্যাক্ট এর ১৩৩/১৩৫ ধারা মোতাবেক নোটিশ জারী করা হয়েছে৷ ০৯-০৬-২০১৬ তারিখ বিকাল সাড়ে তিনটায় নোটিশের হেয়ারিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ হেয়ারিংয়ের মাধ্যমে আশিষ কুমার সাহাকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল যাতে তিনি ১৪-০৬-২০১৬ এর মধ্যে লিখিত ভাবে জবাব দেন এবং পরবর্তি নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখেন৷ এদিকে, দ্বিতীয়বার হেয়ারিংয়ের নোটিশ জারী করা হয় ২১-০৬-২০১৬ তারিখে৷ এই পর্যায়ে হেয়ারিংয়ের দিন ধার্য্য করা হয়েছিল ২৪-০৬-২০১৬ তারিখে৷ আগরতলা পুর নিগমের তরফে সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল নোটিশে যে ২৪-০৬-২০১৬ এর পরে বেআইনী নির্মাণ ভেঙ্গে দেওয়া হবে৷ এই নোটিশ জারীর পরও নোটিশপ্রাপক দ্বিতীয়বারের হেয়ারিংয়ে অনুপস্থিত ছিলেন৷ তারপরই আগরতলা পুর নিগম চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে এই বেআইনী নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলার৷ এই মর্মে বেআইনী নির্মাণটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য ২৮-০৬-২০১৬ তারিখে নোটিশ জারী করা হয়েছে৷ নোটিশে বলা হয়েছে জমির মালিককে তিন দিনের মধ্যে এই বেআইনী নির্মাণ ভেঙ্গে ফেলতে হবে নোটিশ পাওয়ার তিনদিনের মধ্যে৷
এদিকে, নোটিশ জারীর তিন দিন অতিক্রান্ত হচ্ছে বৃহস্পতিবার৷ এদিনই ইন্দিরা ভবনের স্থানে নাম পরিবর্তন করে ভবনের নামকরণ করা হয়েছে তৃণমূল ভবন৷ ভবন উদ্বোধনের সাথেসাথেই অবৈধ বলে ঘোষণা দেওয়ায় রাজনৈতিক পারচ চড়ছে৷ বিষয়টি নিয়ে আগামীদিনে বড় ধরণের ঝামেলার আভাষ পাওয়া গিয়েছে৷ অবৈধ ইস্যু দেখিয়ে রাজ্য প্রশাসন ও পুর নিগম ভবনটি ভেঙ্গে ফেলার জন্য জোর চেষ্টা চালাবে৷ অন্যদিকে, ভবনটি অক্ষত রাখার জন্য তৃণমূল নেতা কর্মীরা প্রতিরোধ গড়ে তুলবে৷ এই নিয়ে রাজধানীতে বড় ধরনের গন্ডগোলের আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক মহল৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *