নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, কৈলাসহর/উদয়পুর/চড়িলাম /তেলিয়ামুড়া, ১৬ জুন৷৷ আজ রাজ্যের আট জেলার ৪০ টি স্থানে ভূমিকম্প নিয়ে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়৷ প্রত্যেক জেলায় ৫টি এলাকা চিহ্ণিত করে এই মহড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ সাইরেন বাজার সাথে সাথে ভূমিকম্প হয়েছে ধরে নিয়ে বিপর্যয় মোকাবিলায় প্রস্তুত টাক্স ফোর্স পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেমে পড়ে৷ এজন্য রাজ্যের আট জেলায় ৪৫টি টাক্স ফোর্স গঠন করা হয়েছিল৷ এর মধ্যে সিপাহিজলা জেলায় ৯টি টাক্স ফোর্স ও গোমতী জেলায় ৬টি টাক্স ফোর্স ছিল৷ অন্যান্য জেলায় ৫টি করে টাক্স ফোর্স ছিল৷ এ সমস্ত টাক্স ফোর্সের নেতৃত্বে ছিলেন এনডিআরএফ, বি এস এফ, সিআরপিএফ, আসাম রাইফেলস, রাজ্য পুলিশ, টি এস আর, রেডক্রস, এনএসএস ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা৷ এই মহড়ায় গোমতী জেলায় হেলিকপ্ঢার ব্যবহার করা হয়েছে৷
ভূমিকম্পের মহড়া শুরুর পরই রাজ্যস্তরে গঠিত স্টেট ইমারজেন্সি অপারেশন সেন্টারে উদ্ধারকার্য নিয়ে পর্যালোচনা করেন রাজস্বমন্ত্রী বাদল চৌধুরী, মুখ্যসচিব ওয়াইপিসিং ও জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থার (এনডিএমএ) বরিষ্ঠ পরামর্শদাতা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ভি কে দত্ত, রাজস্ব দপ্তরের সচিব পুনীত আগরওয়াল৷
ভূমিকম্পের মহড়া চলাকালীন তারা উদ্ধারকার্যের বিভিন্ন দিক নিয়ে পর্যালোচনা করেন৷ এ সময়ে এই অপারেশন কেন্দ্র রাজ্যস্তরে গঠিত ইন্সিডেন্ট রেসপন্স সিস্টেম (আই আর এস)-এর সমস্ত আধিকারিকগণ উপস্থিত ছিলেন৷ উপস্থিত ছিলেন পূর্ত দপ্তরের মুখ্যবাস্তুকার, তথ্য ও সংসৃকতি দপ্তরের সচিব, অগ্ণিনির্বাপক দপ্তরের অধিকর্তা প্রমুখ৷ পরে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে এই অপারেশন কেন্দ্রে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়৷
বিকেলে সচিবালয়ের ভিডিও কনফারেন্স কক্ষে এনডিএম এর বরিষ্ঠ পরামর্শদাতা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ভি কে দত্ত এবং রাজস্ব দপ্তরের সচিব পুনীত আগরওয়াল আট জেলার জেলাশাসক ও চিফ অবজারভারদের সাথে এই মহড়া নিয়ে মত বিনিময় করেন৷ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জেলাশাসক ও চিফ অবজারভারগণ এই মহড়া নিয়ে তাদের পর্যবেক্ষণ ও অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন৷
গোমতী জেলার জেলাশাসক সোনাল গোয়েল জানান, এই ভূমিকম্পের কৃত্রিম মহড়ায় পালাটানা বিদ্যুৎ প্রকল্পের গ্যাস লাইনে ফাটল দেখা দেয়৷ এনডিআরএফ ও বিএসএফ নিয়ে গঠিত টাক্স ফোর্স খুব দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে৷ জেলা শাসকগণ তাদের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন এই মহড়া একটা শিক্ষনীয় অভিজ্ঞতা৷ টাক্স ফোর্স গুলিকে দ্রুত ঘটনাস্থলে পাঠানো সম্ভব হয়েছে৷ স্থানীয় মানুষ সহায়তায় এগিয়ে এসেছেন৷ পরে এনডিএমএর বরিষ্ঠ পরামর্শদাতা মেজর জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) ভি কে দত্ত বলেন, এই মহড়া একটা শিক্ষা প্রক্রিয়া৷ এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে৷
এদিকে, পূর্ব ঘোষিত সূচী অনুসারে বৃহস্পতিবার কৈলাসহরে প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবেলা নিয়ে মহড়া হল৷ দুর্যোগের পর উদ্ধার, ত্রাণ এবং চিকিৎসা প্রদানের দৃশ্য দেখতে উৎসাহী নাগরিকদের ভিড় জমে যায়৷ প্রথমে কাচের ঘাট সুকল, পরে জেলা হাসপাতাল ভবন এবং আর কে আই মাঠে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়৷ পুলিশ, টিএসআর, ফায়ার ব্রিগেড, স্বাস্থ্য দপ্তর পূর্ত বিদ্যালয় শিক্ষা দপ্তর, মহকুমা প্রশাসনের আধিকারিক কর্মীরা মহড়ায় নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করেছেন৷ বেলা ১০ নাগাদ ১৫-২০ টি গাড়ি, ফায়ার সার্ভিসের গাড়ির সাইরেন শুনে সাধারণ মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়েন৷ যদিও পরে ভুল ভাঙ্গে৷ ভূমিকম্পের পর কিভাবে আটকে পড়া লোকজনকে উদ্ধার করা হয়, হাসপাতালে পাঠানো হয় তা করে দেখানো হয়েছে৷ আর কে আই মাঠে বিভিন্ন ইউনিটও চালু করা হয়৷ বিপর্যয় মোকাবেলা দায়িত্বপ্রাপ্তরা আবারও প্রশিক্ষণ নিলেন৷ সিসমিক জোনের ৫ নম্বরে ত্রিপুরা র য়েছে৷ তাই ভূমিকম্পের মত বিপর্যয়ের ঝঁুকিও আছে৷ মহকুমাস্তরে মহড়ার আয়োজন করে কাজে সমন্বয়ের ক্ষেত্রে ঘাটতি রয়েছে কিনা তা বোঝা গেল৷
2016-06-17

