নয়াদিল্লি, ১০ মে : ভারত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভবিষ্যতে দেশের ওপর যে কোনো সন্ত্রাসী হামলাকে দেশের সাথে ‘যুদ্ধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে এবং সেই অনুযায়ী কড়া জবাব দেওয়া হবে। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সূত্রে এমনটাই জানা গেছে। এই ঘোষণাটি এমন এক সময়ে এসেছে যখন ভারত ও পাকিস্তান একে অপরের সামরিক ঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালিয়ে চলেছে, যা পরিস্থিতিকে চরম উত্তেজনার দিকে নিয়ে যাচ্ছে।
ভারতীয় সেনাবাহিনীর তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তান সীমান্তবর্তী এলাকায় তার সেনা মোতায়েন বাড়িয়েছে। আজ এক সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল সোফিয়া কুরেশি জানান, “পাকিস্তান সেনাবাহিনী সীমান্ত এলাকায় তাদের বাহিনী এগিয়ে নিচ্ছে।” তিনি আরও জানান, পাকিস্তান পাঞ্জাবে উচ্চ-গতিসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করেছে এবং শ্রীনগর, আওয়ান্টিপুরা ও উদমপুরে চিকিৎসা কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে। “পাকিস্তানের এসব তৎপরতার উপযুক্ত জবাব দেওয়া হয়েছে,” বলে জানান কর্নেল কুরেশি।
তিনি বলেন, “পাকিস্তান আজ ভোর ১টা ৪০ মিনিটে পাঞ্জাবে ভারতীয় বিমান ঘাঁটি লক্ষ্য করে উচ্চ-গতির ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।” কুরেশি জানান, পাকিস্তান ড্রোন, দীর্ঘ-পাল্লার অস্ত্র, লুইটারিং মিউনিশন এবং জেট ব্যবহার করে ভারতের পশ্চিম সীমান্তে বিভিন্ন সামরিক ঘাঁটিতে হামলা চালায়।
ভারতের পররাষ্ট্রসচিব বিক্রম মিশ্রি বলেন, পাকিস্তানের এই হামলা উসকানিমূলক ও উত্তেজনা বৃদ্ধির চরম দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, “এই উসকানির দায় সম্পূর্ণভাবে পাকিস্তানের।” পাকিস্তানের পক্ষ থেকে ধর্মীয় স্থান লক্ষ্য করে ক্ষেপণাস্ত্র হামলার যে দাবি করা হয়েছে, তাকে ‘নির্বোধ’ বলে উড়িয়ে দিয়েছে ভারত।
ভারত জানিয়েছে, পাকিস্তানের দাবিকৃত ‘গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো ধ্বংস’ সংক্রান্ত তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। ভারতীয় সেনাবাহিনী টাইমস্ট্যাম্পযুক্ত ছবি প্রকাশ করে দাবি করেছে, পাকিস্তানের দাবি করা বিমান ঘাঁটি ধ্বংসের তথ্য অসত্য। উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং জানান, “ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী সর্বোচ্চ প্রস্তুতিতে রয়েছে… শত্রু পক্ষের সব হামলার উপযুক্ত প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়েছে।” তিনি জানান, ভারত রাহিম ইয়ার খান এলাকায় পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা লক্ষ্য করে আঘাত হেনেছে। “পাকিস্তান আমাদের এস-৪০০ ব্যবস্থা এবং সুরাটের বিমানঘাঁটি ধ্বংসের যে দাবি করেছে, তা একটি মিথ্যা প্রচারাভিযানের অংশ,” বলেন সিং।
তিনি জানান, ভারতীয় বাহিনী শুধুমাত্র নির্ধারিত সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে সুনির্দিষ্ট হামলা চালিয়েছে এবং উত্তেজনা না বাড়ানোর জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, তবে পাকিস্তানেরও একই আচরণ প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

