ঢাকা, ১০ মে: মোহাম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের ওপর দমননীতি আরও তীব্র আকার নিচ্ছে। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা থেকে আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের পাঁচজন নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে বাংলাদেশ পুলিশ, এমনটাই জানিয়েছে স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃত ব্যক্তিরা হলেন—পল্লবী থানা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও প্রাক্তন এমপি ইলিয়াস মোল্লার সহযোগী রমজান আলী, মোহাম্মদপুর থানা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-সভাপতি মোঃ আলমগীর, গুলশান থানা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রাসেল আল জোবায়ের, ঢাকা মহানগরীর ৬৬ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান এবং কুমিল্লার মুরাদনগরের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রাক্তন এমপি আব্দুল কাদের।
ডিএমপির এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, গ্রেপ্তারকৃতদের বিরুদ্ধে ঢাকার বিভিন্ন থানায় নির্দিষ্ট অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, তারা হঠাৎ মিছিল করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি, আইনশৃঙ্খলা বিঘ্ন এবং দেশের স্থিতিশীলতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
পুলিশের দাবি, এদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। সাম্প্রতিক দিনে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে হঠাৎ মিছিল বের করার অভিযোগে আওয়ামী লীগের একাধিক নেতাকে আটক করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে, শুক্রবার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জানিয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, সংগঠন ও সাধারণ জনগণের পক্ষ থেকে যে দাবি উঠেছে, তা সরকার “গম্ভীরভাবে বিবেচনা করছে”।
সরকারের এক মুখপাত্র জানান, “বিষয়টি নিয়ে আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করেছি এবং শিগগিরই আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। জাতিসংঘের আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংক্রান্ত প্রতিবেদনের দিকটিও বিবেচনায় নেওয়া হচ্ছে।”
এছাড়া, সাবেক রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গত বৃহস্পতিবার দেশ ত্যাগ করেছেন। শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর, কিশোরগঞ্জে ছাত্র আন্দোলনের সময় গুলিবর্ষণের ঘটনায় হাসিনা ও তাঁর পরিবারের পাশাপাশি হামিদের বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের হয়েছে।
প্রসঙ্গত, গত বছর আগস্টে ক্ষমতা হারানোর পর থেকে শেখ হাসিনা, তাঁর পরিবার এবং আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে একাধিক গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে ইউনুস প্রশাসন। হাসিনার আকস্মিক পতন আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একদিকে যেমন রাজনৈতিক দমনপীড়ন জোরদার করছে, তেমনি উগ্রপন্থী ও চরমপন্থী ইসলামি সংগঠনগুলিকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে দেশি-বিদেশি মহলে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছে।

