মননের বিকাশে প্রয়োজন সংসৃকতি ঃ তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিনিধি, জিরানীয়া, ১৮ নভেম্বর৷৷ পুরাতন আগরতলা ব্লকের পশ্চিম নোয়াবাদী গ্রাম পঞ্চায়েতে আজ একতারা সাংসৃকতিক ভবন ও পারুল থাপা গ্রন্থাগার ভবনের উদ্বোধন হল৷ তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা এই ভবন দুটির উদ্বোধন করেন৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর, সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন৷ এ উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী ভানুলাল সাহা বলেন, সুস্থ মানসিকতা নিয়ে বাঁচার জন্য আমাদের চাই নাচ, গান, কবিদজ্রতা, বইপড়া৷ মননের বিকাশেই প্রয়োজন সংসৃকতি৷ এসবের জন্য চাই একটি সুষ্ঠু পরিকাঠামো৷
তিনি বলেন, বামফ্রন্ট সরকার রাজ্যের প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে সাংসৃকতিক পরিকাঠামো তৈরীর উপর গুরুত্ব দিয়েছে৷ গড়ে তোলা হচ্ছে সাংসৃকতিক ভবন এবং কমিউনিটি হল৷ তিনি বলেন, এই হলগুলি যে শুধু সাংসৃকতিক কাজেই ব্যবহৃত তাই নয়, এই হলে মানুষের গণতান্ত্রিক সাংগঠনিক কাজকর্মও আয়োজিত হতে পারে৷ তিনি বক্তব্যে সকলকে সুষ্ঠু সংসৃকতি চর্চার আহ্বান জানিয়ে প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতে ও এ ডি সি ভিলেজের লোকরঞ্জন শাখাগুলিকে নতুন করে নতুন আঙ্গিকে উজ্জীবিত করতে বলেন৷ তিনি লোক ও গণসংগীত শিল্পী ব্রজলাল অধিকারী, সুবল দাস বৈষ্ণব, বিষ্ণুরমন দত্ত-এর মতো বিশিষ্ট শিল্পীদের কথা উল্লেখ করে বলেন৷ আজও গ্রামেগঞ্জে যেসব প্রতিভা লুকিয়ে আছে, সে সব প্রতিভার খোঁজেই লোক সংসৃকতি উৎসব করা হচ্ছে সরকারী উদ্যোগে৷ তিনি বলেন, এ রাজ্যের সংসৃকতিতে ধর্মীয় বিভেদ থাকবে না৷ এরাজ্যের সংসৃকতিতে রবীন্দ্র-নজরুল-সংগীতে যেমন থাকবে, তেমনি থাকবে কাওয়ালী, জারিসারি, জাদুকলিজা, হজাগিরির মতো সঙ্গীত ও নৃত্য৷ তথ্য ও সংসৃকতি মন্ত্রী বলেন, লোক সংসৃকতি শ্রমজীবী মানুষের সংসৃকতি৷ এ সংসৃকতিকে ধরে রাখার গ্রামের শ্রমজীবী মানুষই৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সম্মানীয় অতিথি সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত বলেন, শহর থেকে দূরের গ্রামের মধ্যে এমন একটি আধুনিক সাংসৃকতিক পরিকাঠামো তৈরী হয়েছে, যা এলাকাবাসীর গর্ব৷ পারুল থাপা গ্রন্থাগারের বিষয়ে বলতে গিয়ে তিনি বলেন, পারুল ছিলেন এই গ্রামের গণতান্ত্রিক নারী আন্দোলনের এক নারী নেত্রী, যার আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই গ্রামের মহিলারা গ্রামের উন্নয়নের বিষয়ে উজ্জীবিত হয়েছেন৷
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে রাজ্য বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর বলেন, এই পশ্চিম নোয়াবাদী বহুকাল আগে থেকেই সংসৃকতি প্রেমী গ্রাম৷ এ গ্রামের মানুষে বহুদিনের আশা ছিল গ্রামে এমন একটি প্রেক্ষাগৃহ তৈরী হোক৷ আজ তাদের সেই আশা পূরণ হল৷ তিনি বলেন, এই এলাকার ঐতিহ্য হল এখান থেকেই জনশিক্ষা আন্দোলনের সূত্রপাত হয়৷ তিনি গ্রামের সকলকে যৌথভাবে সেই ঐতিহ্য বজায় রেখে চলার আহ্বান জানান৷
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির ভাষণ দেন পুরাতন আগরতলা পঞ্চায়েত সমিতির চেয়ারম্যান সবিতা দাস৷ সভাপতিত্ব করেন পঞ্চায়েত সমিতির ভাইস চেয়ারম্যান নীহারঞ্জন শূর৷ স্বাগত ভাষণ দেন গ্রাম উন্নয়ন দপ্তরের নির্বাহী বাস্তুকার সোনারঞ্জন দেববর্মা৷ সাংসদ এলাকা উন্নয়নে তহবিল, বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল ও পঞ্চায়েত উন্নয়ন তহবিলের ১ কোটি ১০ লক্ষ টাকা ব্যয়ে এই ভবন নির্মাণ করা হয়েছে৷