মায়ানমারে দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল, সেনার গুলিতে প্রাণ হারালেন ১৬ বিক্ষোভকারী

মায়ানমার, ২৭ মার্চ (হি. স.) :   সু চি’র দেশে ক্রমশই দীর্ঘ হচ্ছে মৃত্যুর মিছিল। মায়ানমারে শনিবার সকালে সশস্ত্র দিবসের দিনেই ফের সেনাদের গুলিতে প্রাণ হারালেন ১৬ বিক্ষোভকারী। এনিয়ে এখনও পর্যন্ত সামরিক অভ্যুত্থানের বিরোধিতা করতে গিয়ে সেনা-পুলিশের গুলিতে আত্মবলিদান দিলেন তিনশোর বেশি বিক্ষোভকারী।

গত ১ ফেব্রুয়ারি নির্বাচিত সরকারকে সরিয়ে সেনাবাহিনী দেশের ক্ষমতা দখল করার পরেই বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে উঠেছে মায়ানমার। সেনাদের রক্তচক্ষু উপেক্ষা করেই বিক্ষোভ দেখিয়ে চলেছে আমজনতা। সেই বিক্ষোভ দমাতে দমনপীড়নের চরম সীমায় পৌঁছেছেন মায়ানমারের সামরিক শাসকরা। প্রতিদিনই সেনার গুলিতে একাধিক বিক্ষোভকারীর প্রাণ ঝরছে। শুক্রবারই সামরিক শাসকদের পক্ষ থেকে বিক্ষোভকারীদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলা হয়েছিল, বিক্ষোভ দেখালে মাথায় বা পিঠে গুলি লাগতে পারে।সেনা শাসকদের সেই হুমকি আগ্রাহ্য করে এদিন সকাল থেকেই রাজপথে নেমেছিলেন বিক্ষোভকারীরা। বাণিজ্যিক রাজধানী ইয়াঙ্গুন, মান্দালয়াসহ বিভিন্ন শহরে আটকদের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন হাজার-হাজার মায়ানমারবাসী। ইয়াঙ্গুনের দালা উপশহরে পুলিশ স্টেশনের বাইরে বিক্ষোভে জড়ো হওয়া লোকজনের ওপর এলোপাতাড়ি গুলি চালায় সেনা সদস্যরা। ইনসেইন জেলা শহরে সেনার গুলিতে তিনজন নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে স্থানীয় অনূর্ধ্ব-২১ ফুটবল দলে খেলা এক তরুণও রয়েছেন। লাশিহো শহরে মারা গিয়েছেন চারজন। ইয়াঙ্গুনের কাছে বাগোতেও আলাদা আলাদা চারটি ঘটনা ঘটেছে। উত্তরপূর্বের হোপিন শহরে নিহত হয়েছেন এক বিক্ষোভকারী। রাজধানী নেপিদোতে সশস্ত্র বাহিনী দিবসের অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করার পর ফের নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন শীর্ষ জেনারেল মিন অং হ্লাইং। সশস্ত্র বাহিনী দিবসে দেশের আমজনতার উপরে সেনা সদস্যদের নির্বিচারে গুলি চালানোর তীব্র নিন্দা করেছেন সামরিক শাসন বিরোধী সংগঠন বিআরপিএইচের মুখপাত্র সাসা।  শক্রবারও  বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালানোর অভিযোগ ওঠে সেনার বিরুদ্ধে। সেই ঘটনাতেই মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। মঙ্গলবার মান্দালয়ে সেনার গুলিতে মৃত্যু হয়েছিল সাত বছরের শিশুর। প্রসঙ্গত, ১ ফেব্রুয়ারির দেশে সামরিক অভ্যুত্থানের পর গণতন্ত্র ফেরানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন কয়েক হাজার মানুষ। দেশের বিভিন্ন শহরে রাস্তায় ভিড় করে প্রতিবাদ দেখাচ্ছেন নাগরিকেরা। পালটা জবাব দিচ্ছে পুলিশ ও সেনাও। তবে গুলি, কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটিয়েও নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছেনা আন্দোলনকারীদের।