আগরতলা, ১২ মার্চ (হি. স.)৷৷ বাংলাদেশ-র স্বাধীনতার ৫০ বর্ষ পূর্তি-র প্রাককালে ভারতের সাথে সম্পর্কের সৌভ্রাতৃত্বের পরিচয় বাহক হিসেবে আজ দুই বাংলাদেশী নাগরিককে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে৷ আগরতলায় আখাউড়া ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট দিয়ে সমির মজুমদার ও শালীনতারা বেগম আজ পরিবারের কাছে ফিরে গেছেন৷ এই আনন্দঘন মুহুর্তে আগরতলাস্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনার মহম্মদ জুবায়েত হোসেন ভারত সরকার ও ত্রিপুরা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন৷ সাথে ওই দুই পরিবারের সদস্য-রাও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন৷ এদিকে, আগরতলায় আরও ২২ জন বাংলাদেশী নাগরিক মানসিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ তাদেরও ক্রমান্বয়ে স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে প্রক্রিয়া নেওয়া হবে৷
আজ সমির মজুমদারকে তার ছোট ভাই আমির মজুমদার এবং শালীনতারা বেগমকে তাঁর ভাই জয়নাল আবেদিন দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যেতে এসেছিলেন৷ আমির মজুমদার জানিয়েছেন, ৮ বছর পূর্বে তার ভাই সমির মজুমদার ফরিদপুর জেলায় ভাঙ্গা থানাধীন ঝুমারকান্দা এলাকায় নিজ বাড়ি থেকে কাউকে কিছু না জানিয়ে কোথাও চলে যান৷ এরপর থেকে তাকে অনেক জায়গায় খোঁজাখুঁজি হলেও কোন হদিশ পাওয়া যায়নি৷ অনেকদিন বাদে বাংলাদেশ স্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে ভাইয়ের খোঁজ খবর পেয়েছি৷ এরপরই যাবতীয় আইনি বিষয় মিটিয়ে আজ বড় ভাইকে বাড়ি নিয়ে যাচ্ছি৷
একইভাবে নিখোঁজ হয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় আখাউড়া থানাধীন গুড়ি গ্রাম-র বাসিন্দা শালীনতারা বেগম৷ আজ তাকে দেশে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য আসেন তার ভাই জয়নাল আবেদিন৷ তিনি বলেন, ১৩ বছর আগে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন শালীনতারা বেগম৷ এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি৷ অবশেষে ভারত সরকার ও বাংলাদেশ সরকার-র সহায়তায় তাকে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছি৷ দুই পরিবারের সদস্যই ভারত সরকার এবং ত্রিপুরা সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন৷
এদিন আগরতলা স্থিত বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনার বলেন, তারা দুজনই মডার্ন সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন৷ শারীরিক এবং মানসিক ভাবে সুস্থ হওয়ায় তাদের এখন স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, তারা কিভাবে ত্রিপুরায় এসেছেন সে-বিষয়ে সুনির্দিষ্ট এবং নির্ভরযোগ্য কিছুই জানা সম্ভব হয়নি৷ তবে, তারা মানসিকভাবে অসুস্থ হওয়ার কারণেই পথ ভুলে ত্রিপুরায় এসে পড়েছিলেন৷ তিনি জানান, আগরতলায় ওই হাসপাতালে আরও ২২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন৷ তাদের মধ্যে ১২ জন মোটামুটি সুস্থ৷ তাদের নাগরিকত্ব যাচাই করে দেখা হচ্ছে৷ নাগরিকত্ব যাচাই হলে তাদেরও স্বদেশে প্রত্যাবর্তনে প্রক্রিয়া নেওয়া হবে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, বাকি ১০ জন সুস্থ হয়ে উঠলে তাদেরও স্বদেশে প্রত্যাবর্তনের উদ্যোগ নেওয়া হবে৷