নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/ কৈলাসহর, ১৪ ফেব্রুয়ারী৷৷ পৃথক স্থানে বিধবংসী অগ্ণিকান্ডে ২২টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে৷ কৈলাসহরের পর বিধবংসী অগ্ণিকান্ডে আগরতলায় নাগেরজলা বাস স্ট্যান্ডে ১৫টি অস্থায়ী দোকান পুড়েছে৷ নাগেরজলায় দুপুরবেলায় সিলিন্ডার ফেটে ওই অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে৷ কৈলাসহরে গভীর রাতে আগুনে ৭টি দোকান পুড়ে ছাই হয়ে যায়৷ এই দুই ঘটনায় ত্রিপুরায় মোট ২২টি দোকান আগুনে পুড়েছে৷
গতকাল রাত ১২টা নাগাদ কৈলাসহরের একটি মোবাইলের দোকানে আগুন লাগে৷ সেখান থেকে আগুন পাশের দোকানগুলিতে ছড়িয়ে পরে৷ স্থানীয় দোকান মালিকদের বক্তব্য, গভীর রাতে আগুনের লেলিহান শিখা মুহূর্তের মধ্যে ৭টি দোকানকে গ্রাস করে ফেলে৷ জনৈক ব্যবসায়ী বলেন, আগুনের খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুটে আসলেও ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হয়নি৷ তিনি বলেন, ঔষুধের দোকান, ফল-সব্জি ও জুতার দোকান ওই অগ্ণিকান্ডে পুড়ে ছাই হয়ে গেছে৷ দমকলের ২টি ইঞ্জিন ঘন্টাখানেকের চেষ্টায় আগুন আয়ত্বে আনতে সক্ষম হয়৷
ইরানি থানার ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, ওই অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনায় একটি মামলা নেওয়া হয়েছে৷ ব্যবসায়ীরা ৪০ লক্ষ টাকা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে দাবি করেছেন৷
এদিকে, শুক্রবার দুপুরে নাগেরজলা বাস স্ট্যান্ডে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানে হটাৎ সিলিন্ডার ফেটে যায়৷ তাতে ১৫টি অস্থায়ী দোকান পুড়ে চাই হয়ে গেছে৷ এডিনগর থানার কর্তব্যরত পুলিশ আধিকারিক বলেন, ওই দোকানগুলি বাস স্ট্যান্ডের পেছনদিকে অবস্থিত ছিল৷ তিনি বলেন, ওই দোকানগুলির মালিকরা ফাস্ট ফুড এবং ফল বিক্রি করতেন৷ তিনি জানান, আজ দুপুরে একটি ফাস্ট ফুডের দোকানের ভেতরে সিলিন্ডার ফেটে যায়৷ তাতে, মুহূর্তের মধ্যে বাকি ১৪টি দোকানেও আগুন লেগে যায়৷ খবর পেয়ে দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে ছুতে যায়৷ দমকলের মোট ৫ ইঞ্জিন মিলে আগুন আয়ত্বে আনে৷ এদিনের ঘটনায় কারোর শরীরে আঘাত লাগে নি৷ কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ লক্ষাধিক টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে অনুমান করা হচ্ছে, বলেছে পুলিশ৷
রাতের আধারে আগুনে পুড়ল পোলট্রি ফার্ম৷ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক লক্ষাধিক টাকা৷ ঘটনা ফটিকরায়ের রাজনগর শক্তিসঙ্ঘ এলাকায়৷ রাতের আধারে ভয়াবহ অগ্ণিকাণ্ডে পুড়লো একটি পোল্ট্রি ফার্ম৷ ঘটনাটি সংগঠিত হয়েছে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ফটিকরায়ের রাজনগর শক্তিসংঘ এলাকায়৷ ঘটনার বিবরণে জানা যায় ঐ এলাকার বাসিন্দা সুবোধ পাল এবং উনার পরিবারের লোকেরা রাতে খাওয়া দাওয়া সেরে ঘুমিয়ে ছিলেন৷
আচমকা পাশের বাড়ির লোকজন উনার বাড়ির পোল্ট্রি ফার্মে আগুনের লেলিহান শিখা দেখে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করতেই বাড়ির মালিক ঘর থেকে বেরিয়ে আগুনের ভয়াবহতা দেখতে পান৷ সাথে সাথে দমকল বাহিনীকে খবর দেওয়া হলেও আগুনের তীব্রতা এতোটাই বেশি ছিলো যে তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছার আগেই পোল্ট্রি ফার্ম সম্পূর্ণরূপে জ্বলে ছাই হয়ে যায়৷ বাড়ির মালিক জানিয়েছেন ওই ফার্মটিতে প্রায় তিনশো থেকে সাড়ে তিনশো মোরগের বাচ্চা ছিলো৷ ঘটনায় সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় লক্ষাধিক টাকা হবে বলে ধারণা বাড়ির মালিকের৷ আগুনের তীব্রতা এতটাই বেশি ছিল যে মুহূর্তের মধ্যে আগুন পাশে থাকা একটি খড়ের ঘরকেও গ্রাস করে নেয়৷ ঘটনাস্থলে পরপর দমকলের দুটি ইঞ্জিন ছুটে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে৷
তবে কিভাবে আগুনের সূত্রপাত তা এখনো স্পষ্ট নয়৷ প্রাথমিক অনুমানে দমকল কর্মীরা আগুন লাগার কারণ হিসাবে বিদ্যুতের শর্টসার্কিটকেই দায়ী করলেন৷ এই পোল্ট্রি ফার্মের আয় ঐ ব্যক্তির সংসার চালানোর মূল ভরসা ছিলো৷ রুজির একমাত্র আয়ের উপর আগুনের থাবার ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়লেন বাড়ির লোকেরা৷ ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান এলাকার বাসিন্দা তথা ঊনকোটি জিলা পরিষদের সভাধিপতি অমলেন্দু দাস৷ অগ্ণিকাণ্ডের ঘটনার পেছনে কোনো নাশকতামূলক বিষয় জড়িয়ে আছে কিনা তা তদন্ত সাপেক্ষেই বেরিয়ে আসবে৷ অবশ্য বাড়ির মালিক ঘটনাকে নাশকতামূলক বলেই দাবি করলেন৷