দার্জিলিং, ২২ জানুয়ারি (হি.স.): পাহাড়ের মানুষ সিএএ ও এনআরসি চায় না | দার্জিলিং জেলা সফরের তৃতীয় দিনে বুধবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এনআরসি, সিএএ ও এনপিআরের বিরুদ্ধে দার্জিলিংয়ের ম্যাল থেকে মোটরস্ট্যান্ড পর্যন্ত পদযাত্রা করেন । এরপর সেখানে একটি জনসভা করেন | এদিন সেই জনসভা থেকেই কেন্দ্র সরকারকে আক্রমণ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পাহাড় চায় না সিএএ, এনআরসি। ভয় পাওয়ার কিছু নেই।অমিত শাহের প্রশ্নের জবাবে বুধবার দার্জিলিং-এর চকবাজারের সভা থেকে এভাবেই চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।মুখ্যমন্ত্রী এদিন সমাবেশ থেকে স্লোগন দেন, দার্জিলিং ভাগ নয়, গোর্খা ভাগ নয়, হিন্দু ভাগ নয়, মুসলিম ভাগ নয়।
মুখ্যমন্ত্রী ফের জানিয়ে দেন, তিনি রাজ্যে এনআরসি-সিএএ-এনআরপি কোনওটাই হতে দেবেন না।তিনি বলেন, এনপিআরের নামে আসলে “এক মারাত্মক খেলা” চলছে দেশ জুড়ে।তিনি এমন দাবিও করেন যে, এনপিআর আসলে এনআরসি-র প্রথম ধাপ।অসমের এনআরসি থেকে কেন ১ লক্ষ গোর্খার নাম বাদ, চকবাজারের সমাবেশ থেকে বিজেপির উদ্দেশে প্রশ্ন করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন মুখ্যমন্ত্রীকে নেপালি ভাষাতেও কথা বলতে শোনা গিয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ভোটের সময় এলেই কেবল তাদের গোর্খাল্যান্ডের কথা মনে পড়ে। ভোটের আগে তারা আসে, আর টাকা দিয়ে পালিয়ে যায়। অন্যসময় উন্নয়নমূলক কাজে তাদের দেখা পাওয়া যায় না বলেও মন্তব্য করেন তিনি। মমতা বলেন, পাহাড়ে বিভেদ নয়, সবাই সেখানে একসঙ্গে আছে। সিএএ, এনআরসি নিয়ে বিরোধিতা করতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন অসমের এনআরসি থেকে কেন বাদ দেওয়া হল ১ লক্ষ গোর্খার নাম। তিনি বলেন, বিজেপির হঠাৎ মনে হল দেশে নতুন নাগরিক করতে হবে।
তিনি প্রশ্ন তোলেন, যদি এনপিআরের ফর্মে কোনও ব্যক্তির বাবা-মায়ের জন্ম সংক্রান্ত বিবরণ যদি বাধ্যতামূলক না-ই হয় তবে সেগুলি ফর্মের একটি অংশে রয়েছে কেন? এই প্রশ্নগুলো তো আগে বাদ দেওয়া উচিত। যদি ওঁরা এখন নতুন করে ফর্ম প্রকাশ করে তাহলে সেই ফর্ম থেকে বাবা-মায়ের জন্মের বিবরণ সংক্রান্ত বিষয়গুলি বাদ দিতে হবে। আর যদি ওঁরা তা না করে তাহলে বুঝতে হবে এর পিছনে অন্য কারণ আছে, তাই এই বিষয়টি নিয়ে মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।এমনকি প্রধানমন্ত্রীকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, দেশের মানুষের কাছে মা-বাবার নথি চাইছেন। নিজে দেখাতে পারবেন সেই নথি ? প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন অভিযোগ করে বলেন, দেশের অর্থনীতির বেহাল দশা। অর্থনীতির বেহাল দশা লুকোতেই সিএএ, এনআরসি আনা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর এই নিয়ে বিরোধ করলেই সবার গায়ে পাকিস্তানের ছাপ মেরে দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ অথচ ওরাই সারাদিন পাকিস্তানের কথা বলে, এজেন্সিকে পিছনে লাগিয়ে দেয়। মারধর করে।
মুখ্যমন্ত্রী এদিন বলেন, নয়াদিল্লিতে এনপিআর-এর বৈঠকে সবাই ভয় পয়েছে। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গই ওই বৈঠকে যায়নি বলেও মুখ্যমন্ত্রী উল্লেখ করেন। মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, বিজেপির মুখে দুই কথা। এরা সকালে এক কথা বলে তো, বিকেলে এক কথা বলে বলেও মন্তব্য করেন মমতা।