আগরতলা, ৭ জানুয়ারি (হি.স.) : সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ত্রিপুরায় চালু হলে আবারও জাতীয় সড়ক অবরোধে বাধ্য হবে যৌথ আন্দোলন ফোরাম। মঙ্গলবার আগরতলায় অনুষ্ঠিত সভা থেকে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ফোরামের সদস্য চিত্ত দেববর্মা। তাছাড়া এই ইস্যুতে আগরতলায় মিছিলের অনুমতি না দেওয়ায় পুলিশ প্রশাসনের বিরুদ্ধে ক্ষোভও উগরে দিয়েছেন তিনি। উষ্মা প্রকাশ করে চিত্ত বলেন, মিছিল কিংবা সভা করা প্রত্যেকের গণতান্ত্রিক অধিকার। কিন্তু ওই অধিকার আদায়ে বার বার হাইকোর্টের কড়া নাড়তে হচ্ছে আমাদের।
সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের বিরোধিতায় যৌথ আন্দোলন ফোরাম আবারও আন্দোলনমুখী হয়েছে। ফোরামের সদস্যরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিশ্রুতি খেলাপের অভিযোগ এনেছেন। ফোরামের কনভেনর অ্যান্থনি দেববর্মা আজ আগরতলায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবন প্রাঙ্গণে অস্থায়ী সভামঞ্চ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে বিষোদগার প্রকাশ করেছেন। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই আইন নিয়ে পুনরায় আলোচনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এখন পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে কোনও ইতিবাচক পদক্ষেপ চোখে পড়েনি। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, কেন্দ্রের অনুরোধে অনির্দিষ্টকালের ত্রিপুরা বনধ প্রত্যাহার করেছিলাম আমরা। কিন্তু আমাদের দাবিকে গুরুত্ব দেওয়া না হলে আবারও বৃহত্তর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব।
এদিন ফোরামের সদস্য চিত্ত দেববর্মা বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নে কোনও উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। তাই, আবারও রাস্তায় নেমে প্রতিবাদী হতে বাধ্য হয়েছি। তিনি আজ ত্রিপুরা পুলিশের বিরুদ্ধে একরাশ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁর কথায়, আগরতলা শহরে যৌথ আন্দোলন ফোরাম পুলিশের কাছে মিছিলের অনুমতি চেয়েছিল। কিন্তু পুলিশ আমাদের অনুমতি দেয়নি। অথচ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এই শহরেই মিছিলের অনুমতি পাচ্ছে। তিনি ত্রিপুরা পুলিশের বিরুদ্ধে বিমাতৃসুলভ আচরণের অভিযোগ এনেছেন। তাঁর কটাক্ষ, আগরতলায় মিছিল করতে অতীতে আমাদের হাইকোর্টের দরজায় কড়া নাড়তে হয়েছে। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে এমন আচরণ কাম্য নয়। তিনি পুলিশের প্রতি প্রশ্ন ছুঁড়ে দিয়ে জানতে চান, আমরা কি এই রাষ্ট্রের নাগরিক হয়েও সমস্ত অধিকার হারিয়েছি?
চিত্ত দেববর্মা আজ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, সংশোধিত নাগরিকত্ব বিলের বিরোধিতায় যৌথ আন্দোলন ফোরাম অনির্দিষ্টকালের জাতীয় সড়ক অবরোধ করেছিল। সেই আন্দোলন কেন্দ্রের অনুরোধে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। কিন্তু সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন ত্রিপুরায় চালু হলে ফের জাতীয় সড়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধে আমরা বাধ্য হব। তাঁর সাফ কথা, ঐতিহাসিক কারণে ত্রিপুরায় জনজাতিরা সংখ্যালঘু হয়ে পড়ছেন। নতুন করে আমরা বোঝা বইতে পারব না।