বিজেপির শাসেন সমস্যার পাহাড় পর্বতে পরিণত হচ্ছে : মানিক সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ জানুয়ারি ৷৷ বেসরকারিকরণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধিরোধ, শ্রমআইন সংশোধনী বাতিল, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন প্রত্যাহার ও কর্মসংস্থান সহ ১২ দফা দাবিতে ১০টি ট্রেড ইউনিয়ন ও বিভিন্ন ফেডারেশন সহ গণসংগঠনগুলির ডাকা আগামী ৮ই জানুয়ারি দেশব্যাপী ধর্মঘটের সমর্থনে শনিবার রাজধানী আগরতলা শহরে মিছিল ও সমাবেশ সংগঠিত করে সিপিআইএম৷ মিছিলটি আগরতলা শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে জমায়েতে মিলিত হয়৷


সেখানে বক্তব্য রাখেন পলিটব্যুরোর সদস্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ অন্যান্য শীর্ষস্থানীয় নেতৃবৃন্দ৷ ৮ জানুয়ারি দেশব্যাপী ধর্মঘটের সমর্থনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পলিটব্যুরোর সদস্য প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার দেশব্যাপী ধর্মঘটে রাজ্যের প্রতিটি নাগরিককে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দেশবাসীর প্রতি প্রতারণা করে চলেছে৷ ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার আগে কেন্দ্রের বর্তমান সরকার দেশবাসীকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল তারা ক্ষমতায় আসলে বছরে ২কোটি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে৷ ৫ বছরে ১০ কোটি কর্মসংস্থান হবে৷


চাকুরির সংস্থানের বদলে তাদের আমলে বহু মানুষের চাকুরিচ্যুতি হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন মানিকবাবু৷ তিনি বলেন, বিশেষ করে ১০০০ এবং ৫০০ টাকা নোট বাতিল করার কারণে, জিএসটি’র মাধ্যমে পূর্ব প্রস্তুতি ছাড়া শুল্ক আদায়ের পদ্ধতি চালু করার ফলে, ব্যবসা বাণিজ্য, ছোট মাঝারি শিল্প কলকারখানা মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হয়েছে৷ এগুলিতে যারা কর্মরত ছিলেন তারা কাজ হারিয়েছেন৷ ব্যবসা বাণিজ্য মুখ থুবড়ে পড়েছে৷ ছোট মাঝারি ব্যবসায়ীদের চরম সর্বনাশ হয়েছে৷ জমায়েতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার বলেন, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে৷ বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কোন তথ্যই সঠিকভাবে জনগণের সামনে উপস্থাপন করছে না এটি অনৈতিকতা ও জনগণের প্রতি দায়িত্বজ্ঞানহীনতার পরিচয়৷ দেশের মানুষ ভোট দিয়ে তাদেরকে নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব সপে দিয়েছেন৷ কিভাবে দেশ চলছে৷ আমাদের অর্থনৈতিক কোন অবস্থায় দাঁড়িয়েছে,কারা এগুেচ্ছে আর কারাই বা পিছিয়ে পড়ছে কাদের সমস্যা বাড়ছে সে বিষয়ে কোন ধরনের দায়িত্ব পালন করছে না কেন্দ্রীয় সরকার৷


এই বিষয়গুলো মানুষের সামনে তুলে ধরার জন্য তথ্যাদি উপস্থাপন করা দায়িত্বশীল সরকারের একটি অন্যতম নৈতিক ও প্রশাসনিক কর্তব্য৷ কিন্তু তারা তা করছে না৷ কারণ এসব তথ্য উপস্থাপন করলে দেশবাসী বুঝতে পারবেন তাদের শাসনে দেশ এগুচ্ছে না, বরং পিছিয়ে যাচ্ছে৷ মানুষের সমস্যা দিনের পর দিন আরও ঘনীভূত হচ্ছে৷ সমস্যার পাহাড় পর্বতে পরিণত হচ্ছে৷ তাতে তাদের চোখে চুনকালি লাগবে৷ জনগণের ক্ষোভ বিক্ষোভ আড়াল করতেই এইসব তথ্য উপস্থাপন করা হচ্ছে না বলে মন্তব্য করেন পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার৷ গত ৪৫ থেকে ৪৮ বছরের মধ্যে দেশে বেকারের শতকরা হার এত বেশি দেখা যায়নি বলে উল্লেখ করেন তিনি৷ মানিকবাবু দাবি করেছেন, ছাঁটাই বন্ধ করতে হবে, শূন্যপদ পূরণ করতে হবে, কর্মসংস্থানের স্বার্থে নতুন পদ সৃষ্টি করতে হবে৷ এইসব দাবির পরিপ্রেক্ষিতেই আগামী ৮ জানুয়ারি দেশব্যাপী ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে৷ এইসব জ্বলন্ত সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ৮ই জানুয়ারি দেশব্যাপী ধর্মঘটে রাজ্যের সকল স্তরের জনগণকে শামিল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *