হায়দরাবাদের ঘটনায় পরিকল্পনা করেই তরুণীর স্কুটির টায়ার পাংচার করা হয়েছিল, জেরায় জানাল ধৃতরা

হায়দরাবাদ, ৩০ নভেম্বর (হি.স.) : হায়দরাবাদে তরুণী পশু চিকিৎসক খুনের ঘটনায় অপরাধীরা পরিকল্পনা করেই পাংচার করে রেখেছিল তাঁর স্কুটির টায়ার । এরপর রাস্তায় বিপাকে পড়া তরুণী পশু চিকিৎসককের কাছে এগিয়ে যায় সাহায্যের ছুতো করে। ৪ অভিযুক্তকে গ্রেফতারের পর টানা জেরা করে এমনি তথ্য জানা গেছে বলে জানাল হায়দরাবাদ পুলিশ।

তেলঙ্গানায় গত বুধবারের এই ঘটনায় শিউরে উঠেছে গোটা দেশ। গত কাল ২৬ বছরের ওই তরুণীর আধপোড়া দেহাংশ উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই চার অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে সাইবারাবাদ পুলিশ। মহম্মদ আরিফ (২৬), জল্লু শিবা (২০), জল্লু নবীন (২০) এবং চিন্তকুন্ত চেন্নাকেশভুলু (২০) নামে এই চার জনই ট্রাকের কর্মী। প্রধান অভিযুক্ত মহম্মদ আরিফ। এরা সকলেই ট্রাকের চালক ও খালাসি, নারায়ণপেট জেলার বাসিন্দা।

সাইবারাবাদ পুলিশ কমিশনার ভি সি সাজ্জানার জানিয়েছেন, বুধবার ঘটনার দিন সন্ধে ৬টা ১৫ নাগাদ ওই চিকিৎসক যখন সামসাবাদ টোল প্লাজায় তাঁর বাইক পার্ক করছিলেন তখনই মদ খেতে খেতে আরিফরা তাঁকে লক্ষ্য করে। এরপর ছক কষে তারা। নবীন গিয়ে তাঁর বাইকের পিছনের চাকা পাংচার করে দেয়। রাত নটা নাগাদ কাজকর্ম সেরে ফিরে আসেন চিকিৎসক, দেখেন, বাইক চলছে না। তখন আরিফ ট্রাক থেকে নেমে তাঁর কাছে গিয়ে বলে, চাকা তো পাংচার হয়ে গিয়েছে, সারাতে হবে। অন্য এক ট্রাক চালককে তাঁর দিকে তাকিয়ে থাকতে দেখে ভীত তরুণী তাদের সাহায্যের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যান। শিবা এরপর বাইক নিয়ে চলে যায় সারানোর নাম করে। ধু ধু হাইওয়েতে ফাঁকা টোল প্লাজার পাশে তখন একা দাঁড়িয়ে অপেক্ষমান তরুণী।  এ সময় পিছন থেকে তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে আরিফ, নবীন ও চেন্নাকেশভুলু। কাছের একটি পরিত্যক্ত ঘরে নিয়ে গিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করে তারা।

ঘটনার সময় আরিফ চিকিৎসকের মুখ চেপে রেখেছিল, ফলে দম আটকে তাঁর মৃত্যু হয়। এরপর দু’জন তাঁর দেহ ট্রাকে নিয়ে চলে যায় কিছু দূরে, অন্য দু’জন তাঁর বাইক নিয়ে একাধিক পেট্রোল পাম্পে যায়, বোতলে করে পেট্রোল নিয়ে আসে। এরপর চাতানপল্লী আন্ডারপাসের নীচে তাঁর দেহ পেট্রোল ঢেলে পুড়িয়ে দেয় তারা।

পুলিশ জানিয়েছে, ৪ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও অপহরণের মামলা রুজু করা হয়েছে। সিসিটিভি ফুটেজ, ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া সূত্র ও লোকজনের সঙ্গে কথা বলে তাদের খোঁজ পায় পুলিশ। চিকিৎসক হত্যার ঘটনায় এই ৪ জনকে গ্রেফতারের পরপরইসামসাবাদের কাছে আর এক মহিলার পোড়া দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশের ধারণা, এই ক’জন দ্বিতীয় ঘটনাতেও জড়িত।

তেলঙ্গানায় পর পর মহিলার অগ্নিদগ্ধ দেহ উদ্ধারের ঘটনার প্রেক্ষিতে কেন্দ্র এ দিন সব রাজ্যকে ‘অ্যাডভাইসরি’ পাঠিয়ে মহিলাদের বিরুদ্ধে হিংসার ঘটনায় আগাম সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করতে বলেছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জি কিষণ রেড্ডি জানান, তেলঙ্গানার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন তাঁরা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *