কলকাতা, ৫ নভেম্বর (হি. স.): ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল সায়েন্স ফেস্টিভ্যালের প্রথম দিনেই গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের আশায় ছিলেন উদ্যোক্তারা। কিন্তু তা যে এত স্বতঃস্ফুর্তভাবে হবে তা হয়তো আশা করেননি তাঁরাও।
![](https://jagarantripura.com/wp-content/uploads/2019/11/PM-Modi.jpg)
প্রথম দিনে অর্থাৎ ৫ নভেম্বর অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও স্প্রেকট্রোস্কোপের উপরে সেমিনার হওয়ার কথা ছিল সায়েন্স সিটির মেন অডিটোরিয়ামে। ঠিক ছিল এই সেমিনারে উপস্থিত থাকবে ১৭৫০-এর উপর ছাত্র-ছাত্রী। কিন্তু আদতে দেখা গেল সংখ্যাটা অনেকটাই বেশি। আড়াই হাজারের উপর ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহণ করল এই ইভেন্টে। আর এই অংশগ্রহণের ফলে গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের সম্মান পেল ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স (আইইউসিএএ)।
এই সেমিনার চারদিনই হবে সায়েন্স সিটিতে। চারদিনে চারটি আলাদা বিষয়ের উপর হবে সেমিনার। ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে নিজেদের বক্তব্য রাখবেন আইইউসিএএ-র বিজ্ঞানীরা। প্রথম দিন ভারতের প্রখ্যাত দুই বিজ্ঞানী ডক্টর মেঘনাদ সাহা ও ডক্টর সি ভি রমনকে শ্রদ্ধা জানাতে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও স্পেকট্রোস্কোপ নিয়ে বিশদে ব্যাখ্যা করেন বিজ্ঞানীরা।
অনুষ্ঠানের অনেক আগে থেকেই ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো। সায়েন্স সিটির মেন অডিটোরিয়ামের বাইরের লাইনটাই বলে দিচ্ছিল সে কথা। যা হিসেব করা হয়েছিল তার থেকে অনেক বেশি ছাত্র-ছাত্রী চলে আসায় সেমিনার শুরু হতে খানিকটা দেরি হয়ে যায়। সবাই ভিতরে ঢোকার পর দেখা গেল তিল ধারণেরও জায়গা নেই। অত বড় সেমিনার হল কানায় কানায় ভর্তি।
পড়ুয়াদের বিষয়ের সঙ্গে কিছুটা পরিচিত হওয়ার জন্য আগে থেকেই সিটের উপর রাখা ছিল একটা কিট। সেখানে অ্যাস্ট্রোফিজিক্স ও স্পেকট্রোস্কোপের যে বিষয় সম্বন্ধে জানানো হবে সেই বিষয়ে কিছুটা লেখা ছিল। সেইসঙ্গে লেখার জন্য নোটপ্যাড ও পেনও দেওয়া ছিল।
কিছুটা দেরি করে সেমিনার শুরু হলেও প্রায় দু’ঘণ্টার এই সেমিনারে একই রকম একাগ্রতা দেখিয়ে বসে রইল পড়ুয়ারা। কী ভাবে লক্ষ লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে থাকা কোনও মহাজাগতিক বস্তুর তাপমাত্রা, কেমিক্যাল কম্পোজিশন বোঝা যায় তা ছাত্রছাত্রীদের সামনে ব্যাখ্যা করেন ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর বিজ্ঞানীরা। শুধু বোঝা যায় নয়, কী ভাবে তার প্রত্যেকটি তথ্য শুধুমাত্র যন্ত্রের সাহায্যে পৃথিবীতে বসেই বিজ্ঞানীরা জানতে পারেন তাও জানালেন তাঁরা। সেইসঙ্গে কী ভাবে স্পেকট্রোস্কোপ সহজেই বাড়িতে বানানো যায় তারও একটা বিবরণ দেন বিজ্ঞানীরা।
একটা কার্ডবোর্ডের মধ্যে দিয়ে আলো পারাপার করিয়ে ও একটা কমপ্যাক্ট ডিস্ক ব্যবহার করে সেই আলোকে বিভিন্ন ভাগে ব্যবহার করে এই স্পেকট্রোস্কোপ যে ঘরেই বানানো সম্ভব তার একটা শিক্ষা দেন তাঁরা। এই সেশনটির সময় ছাত্র-ছাত্রীদের আগ্রহ ছিল সবচেয়ে বেশি। ডক্টর মেঘনাদ সাহা ও ডক্টর সি ভি রমনকে সম্মান জানাতেই এই প্রোজেক্ট দেখানো হয়।
অনুষ্ঠানের শেষ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডের তরফে ইন্টার ইউনিভার্সিটি সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স-এর হাতে তুলে দেওয়া হয় স্মারক। এই সম্মান পাওয়ার পর সেমিনারে যোগ দেওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের প্রশংসা করেন আইইউসিএএ-এর প্রফেসর সমীর। তিনি জানান, এই বিষয়ে এত সংখ্যক ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে সেমিনার এর আগে পৃথিবীতে হয়নি। তাই এই রেকর্ড গড়েছেন তাঁরা। এ দিন যে উৎসাহ ছাত্র-ছাত্রীরা দেখিয়েছে সেই উৎসাহই আগামী তিনদিনও দেখতে পাবেন বলে আশা করছেন তাঁরা।