উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা শুরু, আজ মাধ্যমিক, পরীক্ষা

নিজস্ব প্রতিনিধি,আগরতলা, ১ মার্চ৷৷ শুক্রবার থেকে রাজ্যে শুরু হয়েছে ত্রিপুরা মধ্যশিক্ষা পর্ষদ পরিচালিত উচ্চমাধ্যমিক পরিক্ষা৷প্রথমদিন ছিল ইংরেজি বিষয়ের পরিক্ষা৷রাজ্যের বিভিন্ন জেলার সাথে উনকোটি জেলার কুমারঘাট মহকুমার মধ্যে পাবিয়াছড়া,ফটিকরায় কাঞ্চনবাড়ী,পেচারথল,ডলুগাও এবং মাছমারা এই ছয়টি বিদ্যালয়ের সেন্টারে নেওয়া হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা৷অন্যান্য সেন্টার গুলোতে বিগত বছরের ন্যায় এবছরও যথারিতি নেওয়া হচ্ছে উচ্চমাধ্যমিকের পরীক্ষা৷কিন্তু পর্ষদের অধীন ফটিকরায় এবং পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ের জন্য রাতারাতি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে পর্ষদ তাতে ক্ষোবের সঞ্চার হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী,অবিভাবক এবং শিক্ষক শিক্ষিকাদের মধ্যে৷রিতিমত ফটিকরায় এবং পাবিয়াছড়ার জন্য বোর্ড থেকে ছাত্র-ছাত্রীদের এডমিট কার্ড এসে পৌছোয় বিদ্যালয়গুলোতে৷

কিন্তু গত পরশু দিন অর্থাৎ বুধবার পর্ষদ থেকে আচমকা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যে পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ের সব ছাত্রের পরিক্ষা নেওয়া হবে ফটিকরায় দ্বাদশশ্রেনী বিদ্যালয়ে এবং ফটিকরায় সুকলের সব ছাত্রীর পরীক্ষা নেওয়া হবে পাবিয়াছড়া সুকলে৷এবং এই খবর বিদ্যালয়ে পৌছতেই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী,শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অবিভাবক মহলে চরম ক্ষোবের সঞ্চার হয়৷এমনিতেই ফটিকরায় সুকলে বিভিন্ন প্রত্যন্ত এলাকা থেকে দুস্থ ছাত্রীরা এসে পরীক্ষা দেয় উপরন্তু তাদেরকে ফটিকরায় সুকল থেকে থেকে আরও প্রায় ৫কিলোমিটার দূরে অবস্থিত পাবিয়াছড়ায় পরিক্ষা দিতে যেতে হচ্ছে ফলে স্বাভাবিক ভাবেই যানবাহনের ভাড়ার ক্ষেত্রে যেমন অসুবিধে হচ্ছে তেমনি যাতায়াতের ক্ষেত্রেও সমস্যার সুম্মুখিন হতে হবে তাদেরকে বলে জানান ফটিকরায় দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ে কর্মরত শিক্ষক বিধান দাস৷একই সমস্যা হচ্ছে কুমারঘাটের বিভিন্ন সুকল থেকে ফটিকরায়ে পরীক্ষা দিতে আসা ছাত্রদের ক্ষেত্রেও এমনই অভিযোগ করে ফটিকরায় সুকলে পরিক্ষা দিতে আসা ছাত্ররা৷তাদের অভিযোগ পর্ষদের এই ধরনের তুঘলকি সিদ্ধান্তের ফলে ভোগান্তিতে পরতে হচ্ছে তাদেরকে৷অবিভাবক মহলেও পর্ষদের এই হটকরী সিদ্ধান্তের ফলে অসন্তোস দেখা দিয়েছে৷

এবছর ফটিকরায় দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরিক্ষায় বসেছে ৭টি বিদ্যালয়ের ৩২৫ জন ছেলে এবং পাবিয়াছড়া দ্বাদশ শ্রেনী বিদ্যালয়ে পরিক্ষায় বসেছে ৭টি বিদ্যালয়ের ৩২২ জন মেয়ে৷ এদিকে, কড়া নিরাপত্তাব্যবস্থার মধ্য দিয়ে কল্যাণপুর পরীক্ষা কেন্দ্রে শুরু হয়েছে ছয়টি বিদ্যালয়ের উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা৷ প্রথম দিন ছিল ইংরেজি বিষয়ের পরীক্ষা৷ কল্যাণ পুর দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় এর পরীক্ষাকেন্দ্রে পরীক্ষায় বসেছে কল্যাণপুর দ্বাদশ, গৌরাঙ্গ টিলা দ্বাদশ, রতিয়া দ্বাদশ, বড় ময়দান দ্বাদশ , বলরাম কোবরা দ্বাদশ এবং ঘিলাতলী বাজার দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয়ের পরীক্ষার্থীরা৷ ছয়টি বিদ্যালয়ের মোট ৪৩২ জন ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষা দিচ্ছেন৷ এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ২১৫ এবং ছাত্রী সংখ্যা ২১৭ জন৷ পরীক্ষা কেন্দ্রের ইনচার্জ হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন ডিসি এম অনুপম দাস৷ তেলিয়ামুড়া দুটি পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা দিচ্ছেন দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় এর পরীক্ষার্থীরা৷ তেলিয়ামুড়া দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় এবং কবি নজরুল বিদ্যাভবন এর পরীক্ষা কেন্দ্রে পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়৷ এলাকার ৩১ টি বিদ্যালয় এর মোট চোদ্দশ ৫৪ জন পরীক্ষার্থী পরীক্ষা দিচ্ছেন৷ এর মধ্যে ছাত্র সংখ্যা ৬৬৬ জন এবং ছাত্রী ৭৮৮ জন৷ প্রথম দিনের পরিক্ষা পর্ব শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে বলে জানান ইনচার্জ মিহির দেবনাথ৷ সোনা মোরা দ্বাদশ শ্রেণীর বালিকা বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে গ্রহণ করা হয় ওই এলাকার উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের পরীক্ষা৷ সোনামুড়া এবছর ৪৪৩ জন পরীক্ষার্থী উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছেন৷

এর মধ্যে ছাত্র ২৪৩ জন এবং ছাত্রী ১৯৬ জন৷ চারজন মাদ্রাসা ছাত্রও পরীক্ষায় বসেছেন৷ প্রথম দিনের পরীক্ষা শান্তিপূর্ণভাবে অতিবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছেন৷ ধলাই জেলার মনু পরীক্ষা কেন্দ্রের অন্তর্গত সমস্ত মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের বিনে পয়সায় পরীক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া এবং পরীক্ষা শেষে পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বাড়িঘরে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব নিল ওই এলাকার অটো চালকরা৷ এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে অটো চালকরা জানান সামাজিক দায়িত্ববোধের অঙ্গ হিসাবে তারা এ ধরনের সেবায় ব্রতী হয়েছেন৷ তারা মনে করেন ছাত্ররাই আমাদের ভবিষ্যৎ৷ তাদের ভবিষ্যৎ গড়ার অংশীদার হিসেবে সামান্য সেবা করতেই তারা এই উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন৷ অটো চালকদের এধরনের মহানুভবতায় এলাকার অভিভাবকরা রীতিমতো আপ্লুত৷ শুধু অটো দিয়ে পরীক্ষা পৌঁছে দেওয়া এবং পরীক্ষা কেন্দ্র থেকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য দায়িত্ব পালনই নয়, তাদের জন্য জলপানের ব্যবস্থাও করেছে অটো চালকরা ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *