গন্ডাছড়ায় বিরোধী দলনেতা ও দুই বিধায়ককে হেনস্থার অভিযোগ সিপিএমের

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১১ জুন৷৷ গন্ডাছড়া সফরে গিয়ে সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য তথা বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার সহ বিধায়ক তপন চক্রবর্তী ও বিধায়ক প্রভাত চৌধুরীকে বিজেপি-আইপিএফটি জোটের সমর্থকরা হেনস্থা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছে সিপিএম৷ তাঁদের গন্ডাছড়া রাজস্ব দপ্তরের ডাকবাংলোতে যাওয়ার পথে অবরোধ করে রাখা হয়েছিল বলেও অভিযোগ সিপিএমের৷ এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের  হস্তক্ষেপে তাঁরা অবরোধ মুক্ত হন বলে সিপিএম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে৷

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সিপিআই(এম) পলিটব্যুরো সদস্য এবং ত্রিপুরা বিধানসভার বিরোধী দলনেতা মানিক সরকার, বিধানসভায় বামফ্রন্টের হুইপ তপন চক্রবর্তী, বিধায়ক প্রভাত চৌধুরী পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচি অনুযায়ী ধলাই এবং উত্তর ত্রিপুরা জেলার অভাবক্লিষ্ট এলাকাগুলোর মানুষের সাথে কথা বলতে চার দিনের সফরে আজ সন্ধ্যায় গন্ডাছড়া এসে পেঁছলে রাজ্যের শাসক জোট বিজেপি – আইপিএফটি জোটের কিছু লোক বিরোধী দলনেতাকে গন্ডাছড়ার রাজস্ব দপ্তরের ডাকবাংলোয় যেতে বাধা দেয় এবং তাকে ফিরে যেতে স্লোগান দিতে থাকে৷ এ অবস্থান মানিক সরকার গন্ডাছড়া সিপিএম(এম) অফিসে চলে আলেন৷ স্থানীয় এসডিপিও কে তিনি বলপ্রয়োগ না করে তাদের বুঝিয়ে সরানোর জন্য অনুরোধ করেন৷

বিরোধী দলনেতা সহ বিধায়কদের টিম গন্ডাছড়া, লংতরাইভ্যালী ও কাঞ্চনপুর মহকুমা সফরে যাবেন তা রাজ্য পুলিশ – প্রশাসনকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছিল এবং রাজস্ব দপ্তরের ডাকবাংলো বুক করা হয়েছিল৷ কিন্তু তা সত্বেও এসডিপিও, ওসি এর সামনেই বিজেপি আইপিএফটি কর্মীরা বিরোধী দলনেতাকে ডাকবাংলোয় যেতে বাধা দেয়৷ অবরোধকারীরা সংখ্যায় ২০/২৫ জন ছিল৷

গন্ডাছড়া সহ ধলাই জেলার উপজাতি অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে চরম খাদ্যভাব চলছে, রেগার কাজ নেই৷ দুজন অনাহারজনিত রোগে প্রাণ হারিয়েছেন৷ অভাবগ্রস্ত এলাকার মানুষের সাথে বিরোধী দলনেতা এবং বামফ্রন্ট বিধায়করা যাতে কথা বলতে না পারেন তার জন্য পরিকল্পিত ভাবেই বিজেপি- আইপিএফটি কর্মীরা তাঁদের বাধা দিয়েছে৷ রাজ্যে আইনের শাসন নেই, বিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগের পরিবেশ নেই – আজকের ঘটনায় আবারও তা প্রমাণিত হলো৷

বিরোধী দলনেতা গন্ডাছড়া থেকে রাজ্য পুলিশের মহানির্দেশকের সাথে টেলিফোনে কথা বলতে চেয়েছিলেন৷ তাঁকে জানানো হয়, মহানির্দেশক এবং আইজিপি মুখ্যমন্ত্রীর সাথে বৈঠকে ব্যস্ত৷ সিপিআই(এম) রাজ্য দপ্তর থেকে আইজিপি (আইন শৃঙ্খলা)র সাথে যোগাযোগ করা হয়৷ সিপিআই(এম) সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের সাথে টেলিফোনে কথা বলেন৷ কয়েক ঘন্টা পর অবরোধ ওঠে৷

সিপিআই(এম) ত্রিপুরা রাজ্য সম্পাদকমন্ডলী বিধানসভার বিরোধী দলনেতা সহ সিপিআই(এম) বিধায়ক টিমকে তাঁদের পরিষদীয় দায়িত্ব পালনে জনগণের সাথে মিলিত হবার প্রয়োসে বিজেপি-আইপিএফটি জোটের গণতান্ত্রিক ভাবে বাধা দেবার চেষ্টার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ করছে৷ আইন, সাংবিধানিক শাসন পুনঃ প্রতিষ্ঠার দাবিতে সর্বস্তরের গণতন্ত্রপ্রিয় মানুষকে এগিয়ে আসতে আহ্বান জানাচ্ছে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *