নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ মে ৷৷ গ্রাম পাহাড়ে কাজ ও খাদ্যের জন্য হাহাকার শুরু হয়েছে৷ এরই প্রতিবাদে আন্দোলনে নামছে গণমুক্তি

পরিষদ৷ শুক্রবার পরিষদের সভায় এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে৷ এবিষয়ে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে গণমুক্তি পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাধাচরণ দেববর্মার বক্তব্য, নতুন সরকার গঠিত হওয়ার পর রাজ্যে গ্রাম পাহাড়ে মানুষের এমন করুন দশা হবে তা কখনও ভাবেনি৷ তাই এর বিরুদ্ধে সাড়া রাজ্যেই প্রতিবাদ দেখাবে গণমুক্তি পরিষদ৷ এদিকে, নির্বাচনে ভরাডুবিতে গণমুক্তি পরিষদের যে ধবংস নেমেছে তা সাময়িক বলে দাবি করেন রাধাচরণ৷ তাঁর কথায়, উপজাতি এলাকায় ৪৭ শতাংশ ভোট পেয়েছে বামফ্রন্ট৷ তাই, পাহাড়ে গণমুক্তি পরিষদের নির্বাচনে ধবংস নেমেছে এমনটা মনে করার কোনও সুযোগ নেই৷
রাধাচরণের বক্তব্য, নির্বাচনোত্তর যে সন্ত্রাস শুরু হয়েছিল তা এখন কিছুটা কমলেও ধরন পাল্টায়নি৷ শুধু তাই নয়, গ্রাম পাহাড়ে এক ভয়ংকর অচলাবস্থা কায়েম হয়েছে৷ কাজ ও খাদ্যের অভাব ভয়ংকর ভাবে দেখা দিয়েছে৷ তাঁর যুক্তি, রেশনিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে৷ কোথাও ইন্টারনেটে সমস্যা হচ্ছে, কোথাও বা আঙ্গুলের ছাপ মিলছে না৷ ফলে, উপজাতি জনপদে মানুষ রেশন তুলতে পারছেন না৷ শুধু তাই নয়, ভিলেজ কমিটি এবং ব্লক এডভাইজারি কমিটিগুলি পঙ্গু হয়ে রয়েছে, তাই মানুষ কাজ পাচ্ছেন না৷ এই পরিস্থিতির জন্য রাধাচরণ বিজেপি – আইপিএফটি জোট সরকারকেই দায়ি করেছেন৷ তাঁর কথায়, নীতিহীন ভাবে চেয়ারম্যান নিয়োগের ফলেই বিএসি গুলিতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে৷ তাঁর কটাক্ষ, কে কার আগে দখল নেবে সেজন্য ধরণা, অবরোধ এমনকি বনধও রাজ্যে পালিত হচ্ছে৷ তিনি বিজেপিকে মাধ্যম করে আইপিএফটির দিকে অভিযোগের আঙ্গুল তুলে দাবি করেন, দুই শরিক দলের বিবাদে ব্লক গুলিতে অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে৷
এদিকে প্রাক্তন বন মন্ত্রী নরেশ জমাতিয়ার বক্তব্য, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাজ্যে কাজ ও খাদ্যের অভাব হওয়া খুবই স্বাভাবিক৷ তাঁর কথায়, পূর্বতন সরকারের আমলে ২৫ থেকে ৩০ রকম বিভিন্ন দপ্তর থেকে কাজ হতো৷ রাজ্যর মানুষ সেই কাজ করে অর্থ উপার্জন করতেন৷ কিন্তু এখন সমস্ত কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে৷ জাইকা, আইজিডিসি সহ বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে রয়েছে৷ তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, হয়তো বা জাইকা প্রকল্পের কাজ আর কখনই এ রাজ্যে শুরু হবে না৷ সম্প্রতি জাইকা প্রকল্পের ৬২৬ জন কর্মীকে ছাঁটাই করেছে রাজ্য সরকার৷ তাঁর দাবি, এই প্রকল্পের সাথে ৩৬০০ হাজার পরিবার যুক্ত ছিল৷ তারা এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছেন৷ তাঁর কথায়, রাজ্যে অনাহার, দুর্ভিক্ষের পূর্বাভাস পাচ্ছি৷
রাজ্যে যে অচলাবস্থা কায়েম হয়েছে তারই প্রতিবাদে মে এবং জুনে ব্লক ও মহকুমা অফিসগুলিতে প্রতিনিধি মূলক গণধর্ণা এবং গণ ডেপুটেশন দেওয়া হবে৷ গণমুক্তি পরিষদ এই অচলাবস্থা দূর করার জন্য রাজ্য সরকারের উপর ক্রমাগত চাপ দেবে, বলেন রাধাচরণ দেববর্মা৷