নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ এপ্রিল৷৷ নিজের ছেলে মেয়েকে আদর্শবান, দেশপ্রেমিক নাগরিক তৈরী করতে হলে ছবি আঁকা, গান-বাজনা, আবৃত্তি, নাটক ও এধরনের সাংসৃকতিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে৷ তারা এই পরিবেশে থাকলে সমাজে যে সব কুসংস্কার তৈরী হচ্ছে, বৈষম্য তৈরী হচ্ছে তা নিজে নিজেই শেষ হয়ে যাবে৷ আজ সন্ধ্যায় রবীন্দ্র শতবার্ষিকী ভবনে শিল্পাঙ্গন শিশুচিত্র প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ২৫তম বর্ষপূর্তি এবং পুরসকার বিতরণী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷ তিনি শিল্পাঙ্গনের স্মরণিকা পুষ্পার্ঘ্য এর প্রকাশ করেন৷ বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় এই শিক্ষা কেন্দ্রের বিজয়ী কৃতি ছাত্র-ছাত্রীদের হাতে মুখ্যমন্ত্রী পুরস্কার তুলে দেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন, ফুল ও শিশুদের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই৷ পবিত্র মানসিকতার শিশুদের সঙ্গে আজকের সন্ধ্যা কাটানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য তিনি শিল্পাঙ্গনের পরিচালকদের ধন্যবাদ জানান৷ রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তিনি রবীন্দ্র ভবনে উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জানান৷ তিনি বলেন, এই পৃথিবীতে যখন লিপির আবিস্কার হয়নি মানুষ তার মনের ভাব প্রকাশ করেছে চিত্র শিল্পের মাধ্যমে৷ পরবর্তী সময়ে মূর্তির মাধ্যমে শিল্পীগণ তাদের মনের ভাব প্রকাশ করেছেন৷ সেই সময়ের ছবি, মূর্তি দেখে আমরা জানতে পারি ঐ সময়ে সভ্যতা কেমন ছিল৷ শিল্পী তার শিল্পের মাধ্যমে কি বলতে চাইছে৷ চিত্রকলা কোনও সমাজ সংসৃকতির সেই সময়ের অবস্থার বহিঃপ্রকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম৷ তিনি বলেন, বই পড়ে আমরা অনেক কিছু জানতে পারি৷ কিন্তু একটি ছবিই একটি বইয়ের মূল বক্তব্য বলে দিতে পারে৷ চিত্রকলা হলো বিজ্ঞান৷ রাজ্য সরকার রাজ্যের শিল্প সংসৃকতিকে আরও তড়িৎ গতিতে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সঠিক দিশায় কাজ করবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের রাজ্যের শিল্প সংস্কৃতি অনেক সমৃদ্ধ৷ সমৃদ্ধ সংসৃকতি ধরে আছি বলেই হতাশা আমাদের ছুঁতে পারেনা৷ শিঙ্গাঙ্গনের মতো অনেক সংগঠন রাজ্যেই আছে যারা আমাদের সংসৃকতিকে জাগিয়ে রেখেছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, পুলিশ দিয়ে প্রশাসন দিয়ে কোন দিন সমাজ পরিবর্তন হয়৷ সংসৃকতিই হলো সমাজ পরিবর্তনের অন্যতম মাধ্যম৷ তিনি আশা প্রকাশ করেন সবার সহযোগিতায় ত্রিপুরা সঠিক দিশায় এগিয়ে যাবে৷
অনুষ্ঠানে আলোচনা করেন নজরুল গবেষক, সঙ্গীত শিল্পী পঙ্কজ মিত্র৷ সভাপতিত্ব করেন শিল্পাঙ্গনের সহ সভাপতি ভাস্কর ভৌমিক৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্থার সম্পাদক সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়৷ সংস্থার অধ্যক্ষ বিশ্বজিৎ গুপ্ত অতিথিদের হাতে স্মারক উপহার তুলে দেন৷ শিল্পী দেবাশিস রায় ভৌমিক নিজের হাতে আঁকা ছবি মুখ্যমন্ত্রী এবং পঙ্কজ মিত্রের হাতে তুলে দেন৷ উদ্বোধনী সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পাঙ্গনের শিশু শিল্পীরা৷ পরে পরিবেশিত হয় মনোজ্ঞ সাংসৃকতিক অনুষ্ঠান৷
2018-04-09