নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/খোয়াই, ২৫ সেপ্ঢেম্বর৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে চবিবশ ঘন্টায় তিনজনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে৷ পুকুরের জল থেকে উদ্ধার করা হল শম্ভু তেলেঙ্গা (৫০) নামে এক ব্যক্তির মৃতদেহ৷ তিনি পেশায় ছিলেন শ্রমিক৷ লেফুঙ্গা থানাধীন নোয়াগাওয়ের লক্ষণ পুষ্করিণী এলাকা থেকে উদ্ধার হয় মৃতদেহটি৷ শম্ভুর বাড়ি এই এলাকার তেলেঙ্গা পাড়ায়৷ বন্ধন থেকে নেওয়া ঋণের অগ্রিম কিস্তি ও সদ প্রদানের চাপ সইতে না পেরে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা গেছেন বলে অভিযোগ করেন মৃতের ছেলে৷ বামুটিয়া নোয়াগাঁও গ্রামের শম্ভু তেলেঙ্গা দিন মজুরীর কাজ করে সংসার চালাতেন৷ প্রায় মাস দুয়েক আগে অসুস্থ হয়ে প্রয়াত হয়েছেন তাঁর স্ত্রী৷ স্ত্রী’র চিকিৎসা করাতে বন্ধন ব্যাঙ্ক থেকে কুড়ি হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলেন তিনি৷ কিন্তু, স্ত্রী মারা যাবার পর রোজগার এবং মনোবল দুই-ই কমে যায় শম্ভুবাবুর৷ এর উপর ঋণ প্রদানকারী সংস্থার কর্মীরা শম্ভুর বাড়ীতে এসে পূজা উপলক্ষে অগ্রিম কিস্তি এবং সুদ প্রদানের তাগিদ দেয়৷ নিয়ম অনুযায়ী প্রতি সপ্তাহে ঋণের কিস্তি ও সুদ প্রদানের কথা৷ কিন্তু, পূজার ছুটি থাকার কারণে বন্ধনের কর্মীরা অনৈতিক ভাবে শম্ভু বাবুর উপর কিস্তি ও সুদ প্রদানের চাপ সৃষ্টি করে বলে অভিযোগ করেন প্রয়াতের মেয়ের জামাই বিশ্বজিৎ তেলেঙ্গা৷ টাকা জোগাড় করতে পারছিলেন না শম্ভুবাবু৷ যার দরুন প্রচন্ড মানসিক চাপে ছিল৷ আর সেই কারণেই কাজ থেকে ফেরার পথে পুকুরে স্নান করতে নেমে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বলে অভিযোগ করেছেন বিশ্বজিৎ ও মৃতের ছেলে সুজিত তেলেঙ্গা৷
এদিকে, সোমবার সকালে রাজধানী আগরতলা শহরের মাস্টারপাড়ায় এক ব্যক্তির মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে৷ মৃতদেহটি রাস্তার পাশে নর্দমার জলে পড়ে রয়েছিল৷ স্থানীয় জনগণ সকালে মৃতদেহ দেখতে পেয়ে খবর দেয় পুলিশকে৷ ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ পুলিশ মৃতব্যক্তির পরিচয় জানতে পেরেছে৷ তাঁর নাম গনেশ কৈরী৷ বয়স পঞ্চাশ৷ বাড়ি সিধাই থানার অধীন মোহনপুরে৷ তিনি আগরতলায় ভাড়া বাড়িতে থাকতেন৷ কিভাবে তাঁর মৃত্যু হয়েছে এনিয়ে জনমনে জল্পনা চলছে৷
অন্যদিকে, সোমবার সকালে খোয়াইয়ের চাম্পাহাওয়র থানা এলাকার চামুবস্তীর একটি পুকুর থেকে ষষ্ঠী ভূমিজ (৪০) নামে এক মহিলার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে৷ সংবাদ সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার সন্ধ্যায় ষষ্ঠী ভূমিজ চামুবস্তীর নিজ বাড়ি থেকে বেড় হয়ে আর ফিরে আসেননি৷ সোমবার সকালে তাঁর ছেলে বাড়ির অদূরে একটি পুকুরে মায়ের মৃতদেহ ভেসে থাকতে দেখেন৷ ছেলের চিৎকারে গ্রামের মানুষ ছুটে যায়৷ পরে চাম্পাহাওয়র থানায় জানানো হলে ওসি অজয় দেববর্মা ও এসআই বিদ্যা দেববর্মা ঘটনাস্থলে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে যায়৷ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পর পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়৷ এই ঘটনায় পুলিশ একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা নিয়েছে৷ কিভাবে ঐ মহিলার মৃত্যু হয়েছে এনিয়ে এলাকাবাসীর মনে প্রশ্ণের জন্ম হয়েছে৷
2017-09-26