নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ সেপ্ঢেম্বর৷৷ হাওয়া অনূকূলে নেই৷ অন্তত বামপন্থী ছাত্র সংগঠন এসএফআই’র রাজ্য সম্পাদকের বক্তব্যে এমনটাই মনে হয়েছে৷ কারণ, এবছর কলেজগুলিতে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে বাড়ি বাড়ি প্রচারে যাবে এসএফআই-টিএসইউ নেতৃবৃন্দ৷ এসএফআই রাজ্য সম্পাদক নবারুণ দেবের বক্তব্য, ছাত্র-ছাত্রীদের বাড়িতে গিয়ে এবছর তাঁদের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে অবহিত করা হবে৷ সাম্প্রদায়িক শক্তির ঐক্যের লড়াই টিকিয়ে রেখে ছাত্রসমাজের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে এই বিষয়গুলি তাঁদের বোঝাতে হবে৷ পাশাপাশি তাঁদের অভিভাবকদের এসম্পর্কে বোঝানো হবে৷ নতুন এই উদ্যোগ সম্পর্কে তাঁর বক্তব্য, এমনটা আগেও হয়েছে৷ তবে, ভিন্ন কায়দায়৷ আগে নির্বাচনের আগে ছাত্র-ছাত্রীদের ডেকে এনে সভা করা হতো৷ এবছর সভা করার পাশাপাশি তাদের বাড়ি যাওয়ারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন৷
মূলত, শুক্রবার এমবিবি কলেজে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদের (এভিবিপি) সাথে সংঘর্ষের বিষয়ে শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে বক্তব্য এসএফআই-টিএসইউ নেতৃবৃন্দ৷ এখন কলেজগুলিতে এনএসইউআই, টিএমসিপি’র অস্তিত্ব নেই বললেই চলে৷ তাই এবছর ছাত্র সংসদ নির্বাচনে লড়াই এসএফআই-টিএসইউ বনাম বিজেপি-আরএসএস’র মধ্যে হবে বলে নবারুণ দেব দাবি করেন৷ তাঁর মতে, যারা বর্তমানে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে, ছাত্র সংসদ নির্বাচনে লড়াই তাঁদের সাথেই হবে৷ তাঁর দাবি, ছাত্র সংসদ নির্বাচন উপলক্ষ্যে বামপন্থী ছাত্র সংগঠন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে লড়াই করার সুযোগ পেয়েছে৷ তিনি বলেন, শুক্রবার বিজেপি- আরএসএস’র ছাত্র সংগঠন এভিবিপি এমবিবি কলেজে মনোনয়নপত্র সংগ্রহের কাজে ঝামেলা সৃষ্টি করেছে৷ আগামীদিনেও তাঁদের লক্ষ্য থাকবে নির্বাচনকে ঘিরে অস্থির পরিস্থিতি কায়েমের৷ এসএফআই রাজ্য সম্পাদকের কটাক্ষ, নানাভাবে নির্বাচনকে পিছু হটার জন্য ঝামেলা সৃষ্টি করবে এভিবিপি৷ তারা সন্ত্রাসের নাম করে নির্বাচন বয়কটের ফন্দি আঁটছে৷ তাঁর বক্তব্য, এসএফআই-টিএসইউ কর্মী সমর্থকদের এভিবিপি’র সম্পর্কে অবহিত করা হবে৷ যাতে ছাত্রছাত্রীরা এভিবিপি’র ফাঁদে পা না দিতে পারে৷ নবারুনের বক্তব্য, এরাজ্যে এভিবিপি’র কোন অইস্তত্বই নেই৷ বহিরাগতদের এনে এরাজ্যে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে অশান্তি কায়েমের উদ্দেশ্য তাদের৷ তাই, আগামী ১১ সেপ্ঢেম্বর পর্যন্ত সমস্ত ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি প্রচারে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সংগঠন৷ ছাত্রছাত্রীদের পাশাপাশি তাদের অভিভাবকদেরও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে বোঝানো হবে৷
এখন প্রশ্ণ, অস্তিত্ব নেই এমন ছাত্র সংগঠনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমে ঘাম ঝড়াতে হবে কেন৷ রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যে বর্তমান পরিস্থিতির নিরিখে জনগণকে কাছে ঘাম ঝড়াতে হবেই৷ কারণ, মানুষের মধ্যে বামেদের প্রতি ক্ষোভ মারাত্মকভাবে বেড়েছে৷ একথা খোদ বাম শীর্ষ নেতৃত্বরাও মানছেন৷ চাকুরীজীবী থেকে শুরু করে বেকার, পাশাপাশি অন্যান্য অংশের মানুষও অনেকটাই ক্ষুব্ধ বামেদের উপর৷ তার সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে বিজেপি৷ স্বাভাবিকভাবে এর প্রভাব ছাত্র-যুবদের মধ্যেও পড়ছে৷ ফলে, ছাত্র সংসদ নির্বাচন সহজে উৎরানো যাবে না, তা মুখে না বললেও চিন্তিত আছেন এসএফআই-টিএসইউ নেতৃবৃন্দ৷
অবশ্য, এসএফআই রাজ্য সভানেত্রী নীলাঞ্জনা দে ছাত্র সংসদ নির্বাচনে কঠিন লড়াই হবে, তা মানতে চাইছেন না৷ একই সুরে নবারুন দেবের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রচারের উদ্দেশ্যেই ছাত্রছাত্রীদের বাড়ি বাড়ি যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ কারণ, নির্বচনী লড়াই কঠিন হবে না বলে তিনি মনে করেন৷ তবে, এভিবিপি শান্তিময় পরিবেশে আগুন লাগানোর চেষ্টা করবে, সেটাই এখন তাঁদের ভাবাচ্ছে৷ তাই, সকলে যাতে প্ররোচনার ফাঁদে পা দেওয়ার থেকে বিরত থাকে সেই চেষ্টা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ তাঁর বিশ্বাস, ছাত্র সংসদ নির্বাচন এসএফআই-টিএসইউজোটের বিপুল ভোটে জয় হবে৷
এদিন তিনি আরো জানিয়েছেন, ৪টি কলেজ বাদে সবকটি কলেজে জিএস, ভিপি এবং এজিএস পদে প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত হয়ে গেছে৷ তাছাড়া অফিস বিয়ারারদেরও নাম চূড়ান্ত হয়ে গেছে৷ আগামী ৪ কিংবা ৫ সেপ্ঢেম্বর মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়া হবে৷
2017-09-03