নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১ সেপ্ঢেম্বর৷৷ আজ রাজধানী আগরতলায় যুদ্ধ বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মিছিলে হাঁটলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক
সরকার৷ মূলত বামপন্থী গণ-সংগঠন গুলির আহ্বানে আয়োজিত এই মিছিলে উপস্থিত ছিলেন শাসক দলের প্রায় সকল বিধায়কও মন্ত্রীরা৷ রাজধানী আগরতলায় দুপুরে এই শান্তি মিছিলকে সামনে রেখে প্রচুর সংখ্যক লোক জমায়েত হয়৷ রাজধানী আগরতলার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে এই মিছিল৷ মিছিলের পুরোভাগই ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরকার৷ পরে মিছিলের আয়োজকদের মধ্যে অন্যতম সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ জানিয়েছেন, প্রতিবছরই এদিনে যুদ্ধ বিরোধী, সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী শান্তি মিছিল সংগঠিত করা হয়ে থাকে৷ এবছর পরিস্থিতি আরও বেশী গুরুত্বপূর্ণ কারণ সাম্রাজ্যবাদী শক্তি মার্কিণ যুক্তরাষ্ট্রের জুনিয়ার পার্টনার হয়ে কাজ করছে বর্তমান ভারত সরকার৷ ফলে সমস্যা জটিল হয়েছে৷ অশান্তির বাতাবরণ শুধু অন্যদেশের সঙ্গেই নয় দেশের অভ্যন্তরেও বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে অস্থিরতা সৃষ্টি করা হচ্ছে৷ ফলে আজকের মিছিল যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক৷
সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে, শান্তির পক্ষে সারা রাজ্যের আজ পথ হাঁটলেন হাজার হাজার শান্তি প্রিয় মানুষ৷ যুদ্ধের বিরুদ্ধে সংগীত, আবৃত্তি, শ্লোগান এ বিভিন্ন পেশার মানুষ মুখর করে তুলেছিল প্রতিটি রাজপথ৷ হাতে হাতে ছিল ভ্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফ্যাস্টুন৷ মুখে মুখে ধবনিত হয়েছে যুদ্ধ নয় শান্তি চাই, মৃত্যু নয়, জীবন চাই শ্লোগান৷ যুদ্ধ বিরোধী মঞ্চের উদ্যোগে রাজ্যের মূল মিছিলটি সংগঠিত হয় আগরতলার বিবেকান্দ ময়দানে থেকে৷ ছাত্র যুবক বৃদ্ধ শ্রমিক শিক্ষক কর্মচারী, আইনজীবী, চিকিৎসক, শিল্পী, সাহিত্যিক সহ সকল পেশার হাজার হাজার নারী পুরুষ এই মিছিলে পা মিলিয়েছেন৷ মিছিলের পুরোভাগে ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মানিক সরাকর, স্বাস্থ্যমন্ত্রী বাদল চৌধুরী সহ মন্ত্রীসভার সদস্যগণ৷ বেলা ২টা নাগাদ বিবেকানন্দ ময়দান থেকে মিছিল শুরু হয়৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রী বাদল চৌধুরী সাহা পায়রা উড়িয়ে দিয়ে মিছিলের সূচনা করেন৷ একই সাথে শান্তির প্রতীক খচিত রঙ বেরঙের বেলুন উড়িয়ে দেন মন্ত্রিসভার সদস্যগণ৷ মন্ত্রিসভার সদস্য তপন চক্রবর্তী, খগেন্দ্র জমাতিয়া, সহিদ চৌধুরী, রতন ভৌমিক, বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পবিত্র কর, সাংসদ জীতেন্দ্র চৌধুরী, সাংসদ শঙ্কর প্রসাদ দত্ত, সাংসদ ঋর্ণা দাস, আগরতলা পুর নিগমের মেয়র ড প্রফুল্লজিৎ সিনহা, সমাজসেবী বিজন ধর, বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌতম দাশ, অধ্যাপক মিহির দেব প্রমুখ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন৷ যুদ্ধ বিরোধী এই মিছিল বিবেকানন্দ ময়দান থেকে বের হয়ে বোধজং চৌমুহনী, মহিলা মহাবিদ্যালয়, জেকশনগেইট, কামান চৌমুহনী, পোষ্ট অফিস চৌমুহী হয়ে প্যারাইডাইস চৌমুহনীতে এসে শেষ হয়৷ এদিকে, আমবাসা মহকুমাতেও যুদ্ধ বিরোধী মঞ্চের আহ্বানে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা এবং আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হয়৷ বিকেলে আমবাসা মোটরস্ট্যান্ড থেকে যুদ্ধ বিরোধী মিছিল শুরু হয়ে মহকুমার বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে পুনরায় মোটরস্ট্যান্ড এসে শেষ হয়৷ যুদ্ধ নয়, শান্তি চাই, এই শ্লোগানে ছাত্র যুবক, শিক্ষক কর্মচারী, শিল্পী সাহিত্যিক সহ বিভিন্ন পেশার মানুষ মিছিলে অংশ নেন৷ এই উপলক্ষে মোটরস্ট্যান্ড এক যুদ্ধবিরোধী সভাও অনুষ্ঠিত হয়৷ বিধায়ক ললিত কুমার দেববর্মা, ধলাই পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের অধ্যক্ষ অমরেশ ভট্টাচার্য, পানীয় জল ও স্বাস্থ্য বিধান কার্যালয়ের এস ই পি কে পুরকায়স্থের সভাপতিত্বে এই সভায় জিলা পরিষদের প্রাক্তন সভাপতি পঙ্কজ চক্রবর্তী এই দিবস পালনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করে আলোচনা করেন৷
তেলিয়ামুড়া মহকুমায় যুদ্ধ বিরোধী মিছিল সংগঠিত হয়৷ তেলিয়ামুড়া নেতাজী নগরস্থিত মোটরস্ট্যান্ড থেকে মিছিল বের হয়৷ বিদ্যালয়ের ছাত্র ছাত্রী, শিক্ষক কর্মচারী, শিল্পী সাহিত্যিক সহ সকল পেশার নারী পুরুষ এই মিছিলে অংশ নেন৷ বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মিছিল এসে শেষ হয় চিত্রাঙ্গনা কলা কেন্দ্রে৷ সেখানে এক সভায় বিধায়ক মণীন্দ্র চন্দ্র দাস এই কর্মসূচী পালনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে আলোচনা করেন৷ পুর পরিষদের চেয়ারপার্সন সজল দে সভাপতিত্ব করেন৷ বিলোনীয়াতে যুদ্ধ বিরোধী মিছিল শুরু হয় বিদ্যাপীঠ দ্বাদশ শ্রেণী বিদ্যালয় থেকে৷ বিধানসভার মুখ্য সচেতক বাসুদেব মজুমদার, দক্ষিম ত্রিপুরা জিলা পরিষদের সভাধিপতি হিমাংশু রায়, বিলোনীয়া নগর পঞ্চায়েতের চেয়ারপার্সন শুভ্রা মিত্র মিছিলের পুরো ভাগে ছিলেন৷ ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী বিভিন্ন পেশার মানুষ এতে অংশ নেন৷ শহরের বিভিন্ন পথ পরিক্রমা করে মিছিল শেষ হয় থানা চৌমূহনীতে৷ জিরানীয়া মহকুমায়ও যুদ্ধ বিরোধী মিছিল সংগঠিত হয়৷ জিরানীয়া বিদ্যালয় পরিদর্শক কার্যালয় প্রাঙ্গণ থেকে মিছল শুরু হয়ে নগর এলাকার প্রধান প্রধান রাস্তা পরিক্রমা করে কলেজ চৌমুহনীর অগ্ণিবীণা হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়৷ মিছিলের অগ্রভাগে ছিলেন বিদ্যুৎ মন্ত্রী মানিক দে৷ মিছিলে জনপ্রতিনিধিগণ, ছাত্র, শিক্ষক, কর্মচারী সব অংশের মানুষ সামিল হন৷