কলকাতা, ৩০ ডিসেম্বর : আজ কলকাতায় এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় স্বরাস্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আত্মবিশ্বাসী হয়ে বলেন যে, আগামী পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি দুই-তৃতীয়াংশ ভোটের সঙ্গে সরকার গঠন করবে।
শাহ বলেন, “২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ৪১ শতাংশ ভোট পেয়েছিল এবং ১৮টি আসন জিতেছিল। ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি ৩৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ৭৭টি আসন পেয়েছিল। ২০১৬ সালে যেখানে আমাদের দল মাত্র ৩টি আসন পেয়েছিল, সেখানে ৫ বছরে তা ৭৭-এ পৌঁছেছে,” বলে তিনি আরও দাবি করেন।
স্বরাস্ট্রমন্ত্রী রাজ্যের তৃণমূল কংগ্রেস সরকারকে কড়া সমালোচনা করে বলেন, “এখন পশ্চিমবঙ্গে যা চলছে, তা হলো ‘ভীতি এবং দুর্নীতি’, যা গত ১৪ বছর ধরে রাজ্যের পরিচিতি হয়ে উঠেছে। এই ১৪ বছরে তৃণমূল সরকারের অধীনে উন্নয়ন থেমে গিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার বেঙ্গলের সীমান্তে বেআইনি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে কিছুই করেনি।”
শাহ আরো বলেন, “বেঙ্গলের সীমান্ত থেকে অবৈধ অনুপ্রবেশ জাতীয় নিরাপত্তার সমস্যা। এই সমস্যা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার সমাধান করতে ব্যর্থ হয়েছে। তবে, আমরা ২০২৬ সালে বিজেপির সরকার গঠন করার পর সীমান্ত সিল করে এই সমস্যার সমাধান করবো।”
তিনি আরও বলেন, “মমতা, আপনি কি জানেন কোন সরকার সীমান্তে বেড়া দিতে জমি দেয় না? সেটা আপনার সরকার, এটা আমি নিজে জানাচ্ছি। আপনি বেঙ্গলের ডেমোগ্রাফি বদলে ভোটব্যাঙ্ক বাড়ানোর চেষ্টা করছেন।”
এছাড়া, নারী নিরাপত্তা নিয়ে রাজ্যে চলমান সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, “আরজি কার এবং কাসবা ল কলেজ ধর্ষণ ঘটনা রাজ্যের নিরাপত্তাহীনতার নিদর্শন। পশ্চিমবঙ্গে মহিলাদের জন্য কোনো নিরাপত্তা নেই।”
অমিত শাহ আরও বলেন, “বিজেপি সরকার গঠন করার পর, আমরা বাংলার ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির পুনরুদ্ধার করবো। বাংলার ভূমি আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ বিজেপি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে, যিনি এখানে বড় নেতা ছিলেন।”
শাহ পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নির্বাচনী প্রস্তুতির বিষয়ে বলেন, “আমরা ২০১৪ সালে ১৭ শতাংশ ভোট এবং ২টি আসন পেয়েছিলাম। ২০১৬ সালে ১০ শতাংশ ভোট এবং ৩টি আসন পেয়েছিলাম। ২০১৯ সালে ৪১ শতাংশ ভোট পেয়ে ১৮টি আসন পেয়েছিলাম। ২০২১ সালে ২১ শতাংশ ভোট পেয়ে ৭৭টি আসন পেয়েছিলাম। ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে ৩৯ শতাংশ ভোট পেয়েছি এবং ১২টি আসন জিতেছি। ২০২৬ সালে পশ্চিমবঙ্গের সরকার বিজেপি গঠন করবে।”
এতসব বক্তব্যের মাধ্যমে অমিত শাহ দলের আগামী পরিকল্পনা এবং রাজ্যের উন্নয়ন সংক্রান্ত নিজেদের অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।

