নয়াদিল্লি, ২৬ ডিসেম্বর : প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার জানিয়েছেন, তাঁর সরকার নাগরিকদের ‘ইজ অব লিভিং’ বা সহজ জীবনযাপন নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আগামী দিনে আরও বেশি উদ্যমের সঙ্গে সংস্কারের ধারা অব্যাহত থাকবে।
সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্স-এ মাইগভইন্ডিয়া হ্যান্ডলের একটি থ্রেডের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার লক্ষ লক্ষ মানুষকে ক্ষমতায়িত করার লক্ষ্যে কাজ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী মোদি লেখেন, আমাদের সরকার ‘ইজ অব লিভিং’ উন্নত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নীচের এই থ্রেডে তারই উদাহরণ দেওয়া হয়েছে—কীভাবে আমরা সেই লক্ষ্যেই কাজ করেছি। আগামী দিনগুলোতে আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়া আরও বেশি শক্তি ও উদ্যম নিয়ে এগিয়ে যাবে।
মাইগভইন্ডিয়া তাদের পোস্টে জানায়, প্রকৃত সংস্কারের পরীক্ষা হল—তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চাপ কতটা কমাতে পারে।
পোস্টে বলা হয়, ২০২৫ সালে শাসনব্যবস্থায় একটি স্পষ্ট পরিবর্তন দেখা গেছে, যেখানে জটিলতার বদলে ফলাফলের উপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। সহজতর কর আইন, দ্রুত বিরোধ নিষ্পত্তি, আধুনিক শ্রম কোড এবং অপরাধমুক্ত কমপ্লায়েন্স নাগরিক ও ব্যবসায়ীদের জন্য জটিলতা কমিয়েছে। আস্থা, পূর্বানুমানযোগ্যতা এবং দীর্ঘমেয়াদি বৃদ্ধির উপর জোর দিয়ে দেখানো হয়েছে কীভাবে সুপরিকল্পিত নীতি নীরবে দৈনন্দিন জীবনকে সহজ করতে পারে।
মাইগভইন্ডিয়া জানায়, লক্ষ লক্ষ ভারতীয়ের জন্য করছাড় বাস্তবে রূপ পেয়েছে। বার্ষিক ১২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ে কোনও আয়কর দিতে হচ্ছে না। এর ফলে মধ্যবিত্ত পরিবারগুলি তাঁদের উপার্জনের আরও বেশি অংশ নিজেদের কাছে রাখতে পারছেন, যা ব্যয়, সঞ্চয় ও বিনিয়োগে বাড়তি আত্মবিশ্বাস দিচ্ছে।
পোস্টে আরও বলা হয়, নতুন ভারতের জন্য নতুন কর আইন। ১৯৬১ সালের আয়কর আইনের পরিবর্তে প্রণীত আয়কর আইন, ২০২৫ সরাসরি কর ব্যবস্থাকে আরও স্বচ্ছ, ন্যায্য ও সহজ করেছে। এতে করদাতাদের জন্য নিয়ম মানা সহজ হয়েছে এবং বর্তমান সময়ের প্রয়োজনের সঙ্গে আইনকে সামঞ্জস্যপূর্ণ করা হয়েছে।
ছোট ও মাঝারি ব্যবসার ক্ষেত্রেও স্বস্তি এসেছে বলে জানানো হয়েছে। বিনিয়োগ ও টার্নওভারের সীমা বাড়ানোয় এমএসএমই সংস্থাগুলি সুবিধা হারানোর ভয় ছাড়াই নিজেদের ব্যবসা সম্প্রসারণ করতে পারছে। এতে ঋণ ও করছাড়ের সুবিধা বজায় রেখে আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং স্থানীয় উদ্যোগ শক্তিশালী হচ্ছে।
এছাড়া ২৯টি শ্রম আইনকে সরলীকরণ করে চারটি স্পষ্ট কোডে রূপান্তর করা হয়েছে—যেখানে মজুরি, নিরাপত্তা, সামাজিক সুরক্ষা ও শ্রম সম্পর্ক অন্তর্ভুক্ত। এতে শ্রমিকদের অধিকার আরও পরিষ্কার হয়েছে, নিয়ম মানা সহজ হয়েছে এবং নারীরা মাতৃত্বকালীন সুবিধা ও কর্মক্ষেত্রে সুরক্ষার নিশ্চয়তা পাচ্ছেন।
জিএসটি সংস্কারের ক্ষেত্রেও সহজ করহার, সহজ নিবন্ধন, স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়া ও দ্রুত রিফান্ডের মাধ্যমে ব্যবসা করার পরিবেশ উন্নত হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে।
মাইগভইন্ডিয়া জানায়, এর প্রভাব স্পষ্ট—দীপাবলিতে রেকর্ড ৬.০৫ লক্ষ কোটি টাকার বিক্রি এবং গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী নবরাত্রির কেনাকাটা তার প্রমাণ।

