কলকাতা, ১৪ ডিসেম্বর : বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ অর্জুন সিং মেসির কলকাতা সফর নিয়ে ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ তুলেছেন। তাঁর দাবি, মেসিকে ভারতে নিয়ে আসতে গিয়ে বিভিন্ন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ছিল স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য ১৫০-২০০ টাকায় পানি বোতল বিক্রি, মেসিকে ‘চুরি’ করা এবং সাধারণ মানুষকে দেখানোর জন্য বিপুল পরিমাণ টাকা খরচ করা।
অর্জুন সিং পিটিআইকে বলেন, ‘‘স্টেডিয়ামটি হয়ত মাত্র পাঁচ টাকা দিয়ে বুক করা হয়েছিল, কিন্তু সেটা নিয়ে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু আপত্তি ছিল জলের বোতল বিক্রি করার দামে। সাধারণ মানুষের জন্য যে বোতল ১০ টাকায় পাওয়া যায়, সেটি সেখানে ১৫০-২০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছিল। আর মেসিকে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও আপত্তি ছিল সমর্থকদের। এটা চুরি। প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসা হয়েছে, এবং কোটি কোটি টাকা খাওয়া হয়েছে। এজন্য ইডি তদন্ত হওয়া দরকার।’’
তিনি আরও বলেন, ‘‘যে চুক্তি হয়েছিল, তা কী ছিল? কত লাভ-লোকসান হয়েছে, তা জানতে হবে। সাধারণ মানুষের প্রশ্ন, মেসি দেখতে গিয়ে আমরা টাকা খরচ করলাম, কিন্তু তাদের তো কিছুই দেখা হয়নি।’’
এদিকে, ১৩ ডিসেম্বর সল্টলেক স্টেডিয়ামে মেসির ট্যুর ঘিরে তীব্র বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হয়। মেসি মাঠে প্রায় ২০ মিনিট ছিলেন, কিন্তু তাকে ঘিরে প্রায় ৮০ জনের একটি দল ছিল, যার মধ্যে মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস এবং পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এর ফলে হাজার হাজার টাকা দিয়ে টিকিট কাটা সাধারণ দর্শকরা মেসিকে দেখতে পারেননি। আয়োজক শতদ্রু দত্তের নির্দেশে দর্শকদের মেসির পাশ থেকে সরে যেতে বলা হলেও কেউ তা মানেননি।
এছাড়া, স্টেডিয়ামে দর্শকদের জন্য ২০ টাকার বোতল ১৫০ টাকায় বিক্রি করা হয়, যার ফলে দর্শকদের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এই পরিস্থিতির মধ্যে মেসিকে দ্রুত টানেল দিয়ে মাঠ থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর, রেলিংয়ের গেটে তালা ভেঙে জনতা মাঠে ঢুকে পড়ে এবং গ্যালারি থেকে সিট ভেঙে তা মাঠে ফেলে দেয়। দর্শকরা পুলিশকে লাঠিচার্জ করে মাঠ থেকে সরানোর চেষ্টা করলে, সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এই ঘটনায় অনেক দর্শক স্মৃতিচিহ্ন সংগ্রহ করতে মাঠের জাল এবং চেয়ার নিয়ে চলে যান।
এই ঘটনার পর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে মেসির কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করেন, তবে তিনি স্টেডিয়ামে যাননি। আন্তর্জাতিক স্তরে এই ঘটনা নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই।
এখন অর্জুন সিং এবং অন্য বিরোধী নেতারা দাবি করছেন, মেসি সফরের সময় ঘটে যাওয়া দুর্নীতির বিষয়টি নিয়ে ইডি তদন্ত হওয়া উচিত।

